শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

তালেবান ধাঁচের নিরাপত্তাকে স্বাগত আফগান জনগণের

এপি | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

১৫ আগস্ট তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর বহু আফগান তাদের কঠোর শাসন পন্থা, মতাদর্শ এবং নারী স্বাধীনতার উপর তাদের কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু ইতোমধ্যেই, বর্তমান তালেবান সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত না হওয়ার একটি সুনাম বয়ে এনেছে, যা ক্ষমতাচ্যুত বিগত সরকারের ঘুষ, অর্থ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত।

যেসব তালেবান যোদ্ধা এখন পুলিশকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তারা গত ২০ বছরের মার্কিন সমর্থিত সাবেক সরকারের পুলিশ কর্মকর্তাদের মতো ঘুষ দাবি করেন না। এমনকি চোরের হাত কেটে ফেলার মতো শাস্তির সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনে শঙ্কিত বাসিন্দারাও বলেছেন যে, কাবুলে আগের থেকে বেশ খানিকটা নিরাপত্তা ফিরে এসেছে। শহরের অনিরাপদ হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকটি বন্ধ রাস্তা আবার খুলে দেয়া হয়েছে এবং কিছু আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার বিচরণের জন্য সবুজ সঙ্কেতও প্রদান করা হয়েছে।

শহরের থানাগুলোর গেটের বাইরে বর্তমানে অভিযোগকারীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। আফগানরা নতুন তালেবান শাসকদের কাছে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় তাদের অভিযোগ এবং দাবি নিয়ে আসছেন। অভিযোগকারীদের একজন হাজী আহমদ খান বলেন, ‘আগে, সবাই আমাদের টাকা চুরি করছিল। আমাদের গ্রামগুলোতে এবং সরকারি কার্যালয়ের প্রত্যেকেরই এতে হাত ছিল।’

১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে ক্ষমতায় থাকার সময় তালেবানরা বিনিময় চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল: তারা আফগানিস্তানে একটি স্থিতিশীলতা এনেছিল, যা আফগানরা মরিয়াভাবে চেয়েছিল এবং দুর্নীতি দূর করেছিল, কিন্তু এর বিনিময়ে তারা ইসলামী আইনের বিধিনিষেধও কঠোরভাবে চাপিয়ে দিয়েছিল। এগুলোর মধ্যে ছিল হাত কেটে ফেলা, প্রায়শই হত্যার শিকার ব্যক্তির ঘনিষ্ঠজনের মাধ্যমে এবং প্রকাশ্যে মাথায় গুলি করে হত্যাকারীদের শাস্তি কার্যকর করা, পুরুষদের দাড়ি ছাঁটা বা নামাজে অংশ না নেওয়ার জন্য পুলিশের মারধর।

তালেবানের অপরাধ দমন বিভাগের নূর আহমদ রব্বানী জানিয়েছেন যে, গত সপ্তাহে তালেবানরা হত্যা, অপহরণ এবং ডাকাতির অভিযোগে ৮৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। তালেবান বলেছে, তারা তাদের আগের শাস্তি ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবে। সাবেক বিচারমন্ত্রী এবং বর্তমানে কারাগারগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মোল্লা নূরউদ্দিন তুরাবি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, ‘তবে, এখন প্রশ্ন হল, তারা সেটি প্রকাশ্যে ঘটাবে কিনা।’

আগস্টে তালেবান দখল করার আগে, থানায় প্রবেশ বা ইউটিলিটি বিল নিষ্পত্তির জন্যও মানুষকে ঘুষ দিতে হতো। সামরিক বাহিনীতে ব্যাপক জালিয়াতির কারণেই তারা তালেবানদের সামনে দ্রুত বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। তবে, সাবেক সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ তাদের বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছে।

কয়েক বছর কাজ করে ড. শরীফ সম্প্রতি সউদী আরব থেকে ফিরে এসেছেন। তালেবান ধাঁচের শাস্তির ব্যাপারে তার কোনো আপত্তি নেই। ড. শরীফ বলেন, তিনি বলেন, ‘অতীতের সরকারগুলোর ভুল ছিল যে, তারা সব টাকা তাদের পকেটে পুরেছিল।’ তবে, তালেবান নেতাদের এবং ধর্মীয় আলেমদের সরকারি দফতরের দায়িত্বে রাখার বিরুদ্ধে কঠোর যুক্তি দিয়েছেন তিনি। শরীফ বলেন, ‘আমাদের পেশাদার মানুষ দরকার, আমাদের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ দরকার, এমন একজন মৌলভী নয় যার ব্যবসা সম্পর্কে কোন ধারণা নেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্কুল প্রিন্সিপাল থানায় এসেছিলেন অভিভাবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে যাঁরা স্কুল ফি দিতে কয়েক মাস পিছিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন যে, তিনি তালেবান শাসনকে সুযোগ দিতে চান। পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে প্রতিবার যখন তিনি পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছেন, তখন তার কাছে ঘুষ চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছিল, কিন্তু যারা দেশ পরিচালনা করছিল, তারা একটি মাফিয়া চক্র ছিল।’

ষাট বছর বয়সী খান বকেয়া পাওনা আদায়ে তালেবানদের সাহায্য চাইতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, তিনি তালেবানদের শাস্তি বিচ্ছেদের মতো সমর্থন করেন, যদিও ক্ষুদ্র চোরদের জন্য নয়। তিনি বলেছেন, তালেবান কিছু নিরাপত্তা নিয়ে এসেছে কারণ তারা অপরাধীদের ইসলামী আইনের অধীনে আচরণ করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৬ অক্টোবর, ২০২১, ২:৩৪ এএম says : 0
এই সমস্ত খবর পড়তে মন চায়,মন যেন শান্তি হয়ে গেছে,আর আমাদের দেশের খবর শুনলে দেখলে মনে দুঃখ প্রকাশ পায়,আমাদের দেশে বদশাসি ছাড়া আর কিছুই নেই খবর শুনলে শরীর শিহরী হয়ে উঠে।কি দেশে বসবাস করি বিচার নাই,ঘুম খুন হত্যা অবিচার অত্যাচার জোর জুলুম নির্যাতন জেল রিমান্ড জেল এই গুলি ছাড়া অন্য কিছু নেই,শুধু কে কাকে মেরে বড় লোক হবে,এই অবস্থা সোনার বাংলাদেশে। লা হাওলা ওলাকুউয়াতা।
Total Reply(0)
Omar Hassan ৬ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫২ এএম says : 0
ইসলামী শাসন ব্যবস্থা তৈরী হলে কতটা সমৃদ্ধশীল হবে আফগানিস্তান তা নিশ্চয়ই অনেকে দেখার অপেক্ষায়.....
Total Reply(0)
G.S. M Mamun ৬ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৩ এএম says : 0
ইনশাআল্লাহ সত্য এভাবে সামনে আসুক। মিথ্যা বিলীন হোক। ইসলামি হুকুমতে শান্তির সুবাতাস বয়ে যাক প্রত্যেক শহর গ্রামের আানাচে কানাচে।
Total Reply(0)
Aminur Rahman ৬ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৫ এএম says : 0
আর বেশি দূরে নয় যখন সারা দুনিয়া থেকে ইহুদী-খ্রিস্টানদের কে এবং ইহুদী-খ্রিস্টানদের বন্ধুদেরকে উৎখাত করা হবে। এটা তার একটি বাস্তব নমুনা।
Total Reply(0)
Elias Ali ৬ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৮ এএম says : 0
Sharia law is the best law in the world.....
Total Reply(0)
Abdul Alim ৬ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৫৮ এএম says : 0
আফগানিস্তান কোন আইনে শাসিত হবে সেটা ঠিক করবে আফগান জনগণ।
Total Reply(0)
Abu ৬ অক্টোবর, ২০২১, ৮:০৩ এএম says : 0
দীর্ঘ হায়াত আমি এজন্য চাই যে পৃথিবীতে শরীয়া আইন চালু হোক আর তাই দেখে আমি গর্ব অনুভব করি।
Total Reply(0)
মোঃ আনোর আলী ৬ অক্টোবর, ২০২১, ৮:২১ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ
Total Reply(0)
amran ৬ অক্টোবর, ২০২১, ১০:০৮ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ হ্যাঁ এটাই ইসলাম এটাই ছিল মুহাম্মাদ সাঃ এর চুডান্তপর্যায়ের নিতি আদর্শ তবে বর্তমানে দুর্নিতি না করলে সন্ত্রাস বাদী না করলে পশ্চিমা সন্ত্রাসীরা হস্হক্ষেপ করতেচায় এটাই আমেরিকা নামক সন্ত্রাস বাহিনি ও তার দোসরদের নিতি আদর্শ
Total Reply(0)
Mostafa kamal ৬ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৪১ এএম says : 0
Alhamdulillahi rabbil alamin. Allahummanchurna fa innaka khairun naserin. Ameen.
Total Reply(0)
jack ali ৬ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৪৪ এএম says : 0
গাড়ি মানুষ তৈরি করে গাড়ি নিজের আইন রচনা করতে পারে না মানসী মানুষ গাড়ির আইন তৈরি করে এটাই তো বাস্তব তদ্রুপ হবে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছে মানুষ কখনো নিজে নিজেই তার আইন সৃষ্টি করতে পারে না আল্লাহ সে অধিকার মানুষকে দেয় নাই কিসের জন্য মানুষের জ্ঞান সীমাবদ্ধ এই সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে মানুষ আইন রচনা করতে পারে না আর যখনই মানুষ আইন রচনা করবে তখন শাসকগোষ্ঠী তাদের স্বার্থেই এই আইন ব্যবহার করবে মানুষকে হত্যা করার জন্য গুম করার জন্য ধর্ষণ করার জন্য মাদক সেবনের জন্য নাচানাচি গান বাজনার যিনা-ব্যভিচার পরকীয়া সিনেমা নাটক অসভ্য উলঙ্গ কাপড় পরে মেয়েরা রাস্তায় বের হবে যত হারাম কাজ আছে সব এগুলো করবে ...
Total Reply(0)
সৈয়দ নজরুল হুদা ৮ অক্টোবর, ২০২১, ৭:২৬ পিএম says : 0
শরীয়া আইন মহান আল্লাহর আইন,তাতে সার্বিক কল্যান অবশ্যম্ভাবী।আফগানিস্তান হবে শান্তির নীড়,যা বিশ্ব অনতিবিলম্বেই দেখবে ইনশাআল্লাহ।।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন