দীর্ঘ ২০ বছরে ফিরে আসনেনি জন্ম ভূমি বাংলাদেশে। কপালের ঘাম পায়ে ফেলে ভাগ্য ঘুরাতে এভাবে কেটেছে বছরের পর বছর। অবশেষে পেয়েছিলেন দুরদেশ যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ। স্বপ্ন বুকে বুনেছিলেন এবার ফিরবেন দেশে, পায়ের নীচে শক্ত মাটির সাহসে। কিন্তু হায়, কিন্তু ফিরতে পারলেন না সিলেটের রেমিটেন্সযোদ্ধা সেলিম আহমদ। তাকে ফিরতে হলো মৃত হয়ে। হতভাগা সেলিম বিয়ানীবাজার পৌরসভার ফতেহপুর গ্রামের মৃত সাদই মিয়ার পূত্র।
অথচ এক বুক আশা নিয়ে দেশে, বাড়িতে ফেরার ক্ষণ গুনছিলেন সেলিম আহমদ। আগামী শুক্রবার কফিনবন্দি হয়ে ফিরবে নিজ গ্রামের বাড়িতে তার লাশ। স্কটল্যান্ডের ইনভারকেটিং হাই স্ট্রিটের বাংলাদেশি মালিকানাধীন গুলশান তান্দুরি রেস্তোরাঁয় কর্মরত ছিলেন সেলিম। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সহকর্মীর ছুরিকাঘাতে খুন হন তিনি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সহকর্মী ফয়েজের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় সেলিমের। এর জেরে তাকে ছুরিকাঘাত করেন সহকর্মী। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হওয়ার পর তাকে এডিনবারার রয়েল ইনফারমারিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘাতক সহকর্মী ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ফয়েজকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা সহ দুটি অভিযোগে দায়ের হয়েছে মামলা। সেলিমের পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রায় ২০ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন সেলিম আহমদ। আইনী লড়াই শেষে সম্প্রতি পেয়েছিলেন স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ শিগগিরই দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। সেলিমের লাশ বাংলাদেশে আনার ব্যাপারে গতকাল সম্মতি দিয়েছে স্কটল্যান্ড পুলিশ। ইস্ট লন্ডন মসজিদে আজ বুধবার যোহরের নামাজের পর সেলিমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে সেখানে। কাল বৃহস্পতিবার বিমানের বিজি ২০২ ফ্লাইটে কফিনবন্দি করে তার লাশ পাঠানো হবে সিলেটের উদ্দেশ্যে। বিয়ানীবাজার পৌরসভার ফতেহপুর গ্রামে মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে সেলিমকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন