বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিচারকরা নির্দেশনা ও আইন মানছেন না রিমান্ড প্রশ্নে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

হাইকোর্টের নির্দেশনা এবং আইন মেনে চলছেন না অধস্তন আদালতের বিচারকগণ। বিচারিক আদালতের বিচারকগণ জামিনের আবেদনের বিপরীতে আদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু এ বিষয়ে যে আইন,বিধি এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো প্রতিপালন করছেন না। এ আচরণ ফৌজদারি আইন ও নিরপেক্ষ তদন্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আসামির বার বার রিমান্ড নেয়া সংক্রান্ত একটি আদেশে সম্প্রতি উপরোক্ত পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়।

গতকাল বুধবার এ বিষয়ক লিখিত আদেশ প্রকাশিত হয়। ওই আদেশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, নিম্ন আদালতের বিচারকরা জামিনের আবেদনের বিপরীতে আদেশ দানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইন ও সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে চলছেন না। প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের রিমান্ডে নেয়া বিচারব্যবস্থার সময় ও অর্থের অপচয় ঘটায়। এক্ষেত্রে আদালতগুলোকে সতর্ক হতে হবে । সম্প্রতি ৩ জন বিচারক মডেল মারিয়াম আখতার মৌকে একটি মাদক মামলায় তিন দফায় মোট ৯ দিনের জন্য রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন। তাদের সমালোচনা করে আদালত এসব পর্যবেক্ষণ দেন। অপরাধের গুরুত্ব ও প্রকৃতি বিবেচনায়, আমরা মনে করি না তিন দফায় ৯ দিনের রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা ছিল। এক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটরা [সাধারণত যেভাবে করে থাকেন] কার্যকর ভূমিকা পালন করেননি। তারা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা, নীতিমালা এবং রিমান্ড সংক্রান্ত আইন অনুসরণ করছেন না। এটি ফৌজদারি আইন ও নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থি।› বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজল ২২ সেপ্টেম্বর শর্তসাপেক্ষে মৌ এর জামিন মঞ্জুর করার সময় দেয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশে উল্লেখ করেন যে, ‹ সে অনুসারে, অপ্রয়োজনীয় রিমান্ড করদাতাদের অর্থের পাশাপাশি বিচারিক সময় নষ্ট করছে।

পূর্ণাঙ্গ আদেশে আরও বলা হয়, সমাজ থেকে অপরাধ কমাতে আদালতকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে এবং বিবেচনা করতে হবে যে, জেলে কঠোর অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে অভ্যাসগত অপরাধী হওয়ার পরিবর্তে নারী যাতে অপরাধের পথ থেকে দূরে থাকার সুযোগ পায়। হাইকোর্ট মৌকে এই মামলায় জামিন দেয়ার সময় শর্ত দেয় যে, অভিযুক্ত পিটিশনকারী (মৌ) ভবিষ্যতে কখনো ইয়াবা বা বিদেশী মদ নিজের কাছে রাখবেন না অথবা এ সংক্রান্ত কোনো লেনদেনে জড়িত থাকবেন না। হাইকোর্ট বলেছেন, প্রয়োজনে তাকে অবশ্যই তদন্তের জন্য উপলব্ধ থাকতে হবে এবং বিচারের তদন্তের সময তিনি সাক্ষীদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে তদন্তের সাক্ষ্যপ্রমাণকে কোনোভাবে পরিবর্তন করতে পারবেন না। হাইকোর্টের বিচারকরা আরও জানান, অভিযুক্ত মৌকে তার বিচার কার্যক্রমে নিষ্ঠার সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে এবং তিনি কোনো ধরণের স্থগিতাদেশ চাইতে পারবেন না। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি কোনো ধরণের অপরাধমূলক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না।

পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, উল্লিখিথ শর্ত ভঙ্গ করা হলে তার জামিন বাতিল করা হতে পারে। গোয়েন্দারা ১ আগস্ট মৌকে তার মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে এবং সেখান থেকে ৭৫০টি ইয়াবা বড়ি ও ১২ বোতল বিদেশী মদ আটক করা হয়। ২ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানায় তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিপরীতে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম মৌকে ৩ দিন, ৬ আগস্ট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার ৪ দিন এবং ১০ আগস্ট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান ২ দিন করে রিমান্ডে পাঠান। ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বেঞ্চ নায়িকা পরীমনিকে মাদক মামলায় একাধিকবার রিমান্ডে পাঠানোর জন্য মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রে দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলামের কাছে ব্যাখ্যা চান। বেঞ্চটি গত ১৫ সেপ্টেম্বর তাদের ব্যাখ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আদালত বলেন, দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলাম হাইকোর্টকে ‘হেয়› করেছেন। ২৯ সেপ্টেম্বর বেঞ্চটি মেট্টোাপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের ২৪ অক্টোবরের মধ্যে বিষয়টির সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ৭ অক্টোবর, ২০২১, ৩:১৩ এএম says : 0
বিচারকরা কি করবে অবৈধ সরকারের হুমকি দমকি খেতে খেতে এই পথ অবলম্বন করেছেন,অন্যথায় ঘুম হবেন খুন হবেন ,নয়তো বা অবৈধ সম্পদ করেছে,সেই কেইছে ঢুকাইয়া দিবে,পরে বাপ দাদার নিজস্ব সম্পত্তি ও হারাইবে ,বিচারকরা কি করবে এই অবৈধ সরকার এমনভাবে দেশের শাসন করতেছেন,আপনি বিচারক যে ভাবে বলি সেটা করবেন,যেমন আরব দেশে রাজা বাদশারা বলে থাকে ,কথা না শুনলে চোখ বন্ধ করে নিয়ে যায়,মাননীয়,বিচার পতি গন বিচারকে দোষ নাই ,উনারা মজবুরি এবং বন্দি এই অবৈধ সরকারের হাতে,আপনারা বিচার পতি,একদিন আপনাদের বিচার পতি একজন হবে,উচিত কথা বলেন ভয় কিসের আপনারা যদি বিচার পতি হয়ে উচিত কথা না বলেন ,জনগণ কার কাছে যাবে,ভবিষ্যতে আপনাদের ছেলে মেয়েরা ও হয়তো ইনসআললাহ বিচারক হবেন বিচার পতি হবেন,যদি এই ভাবে দেশে ঘুম খুন ধর্ষণ হত্যা রিমান্ড মুখ খুললেন জেলে যেতে হবে,এই গুলি পুবের সরকারের আমলে শুনেছেন,ঘুম খুন বলেন সত্য কথা বলেন শুনেছেন না,যাক বেয়াদপি মাফকরবেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন