মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভাতিজাদের ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা

কুমিল্লা থেকে, সাদিক মামুন : | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

কুমিল্লার চান্দিনা গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে ১৪ বছর বয়সী মাদরাসাছাত্রী সালমা আক্তারকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীর বাবা সোলেমান মিয়াকে একই কায়দায় হত্যাচেষ্টা ঘটনা নাটকীয় মোড় নিয়েছে। ওই ছাত্রীর বাবা সোলেমান মিয়া জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাতিজাদের ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। পরে নিজের ওপর হামলার নাটক সাজিয়েও পুলিশকে বিভ্রান্তের চেষ্টা করেছেন তিনি।

গতকাল কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি জানান, হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর বলেন, ভাতিজাদের বিরুদ্ধে মেয়ে সালমা আক্তারকে খুনের অভিযোগে মামলা করেন সোলেমান। তবে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এজাহারের সঙ্গে তার বক্তব্যের গড়মিল পাওয়া যায়। এরপরই তদন্তের মোড় ঘুরে যায়। এক পর্যায়ে তিনি নিজেই মেয়েকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, বছরখানেক আগে সোলামান মিয়ার সঙ্গে ৭ শতক জমি নিয়ে তার ভাতিজা শাহ আলম এবং শাহ কামালের দ্ব›দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশও হয়। পরে দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি মামলা করেন। এর জেরে ভাতিজাদের ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সোলেমান। সে অনুযায়ী ঘটনার আগের দিন স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর গত শুক্রবার আত্মীয় আব্দুর রহমান ও কয়েকজন প্রতিবেশিকে নিয়ে মেয়ে সালমাকে ঘরেই শ্বাসরোধে হত্যা করেন তিনি। এরপর লাশ পুকুরপাড়ে ফেলে ক্ষতবিক্ষত করা হয়। মামলার তদন্তের সময় তার সহযোগিদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিলে সন্দেহ দূর করতে নিজেকে জখম করেন সোলেমান। নিজেই ভর্তি হন হাসপাতালে। পরে পুলিশকে জানান তার ওপর হামলা হয়েছে। তদন্তে সাক্ষীর সাক্ষ্য ও আসামিদের অবস্থান এবং বাদীর এজাহারের সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের কথায় গড়মিল থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বাদীর আত্মীয় আব্দুর রহমান ও প্রতিবেশি মো. খলিল সালমাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। এর পর হাসপাতালে ভর্তি সোলেমানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি পুরো বিষয়টি স্বীকার করেন। সোলেমান সুস্থ হলে তাকেও গ্রেফতার করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আফজল হোসেন, চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান, ডিআইওয়ান মনির আহমেদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এদিকে গত বুধবার বিকালে এ ঘটনায় সোলেমানের সহযোগী আব্দুর রহমান ও খলিলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের গতকাল আদালতে তোলা হলে সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন