আসামি রাকিবের দূরসম্পর্কের মামা ইলিয়াসের ব্যবসার জন্য একটি এনজিও থেকে ঋণ নেয়। ঋণের টাকা জুয়া খেলে সব হারান ইলিয়াস। লোনের টাকা জোগাড় করতে তারা দুইজন পরিকল্পনা করে ইজিবাইক ছিনতাই করবে। ছিনতায়ের ইজি বাইক বিক্রি করে অর্থ জোগাড় করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৭ মে সকাল ৮ টার সময় তালের শাঁস কেনার কথা বলে ভিকটিম শাহাবুদ্দিন শেখের ইজিবাইক ভাড়া করেন তারা। কৌশলে ভিকটিমকে মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার আড়িয়াল ইউনিয়নের উত্তর কুড়মিরা এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভিকটিমকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ইলিয়াস ও রাকিব। তারপরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে দা দিয়ে গলা কাটে।
র্যাব জানায়, আসামিদের গ্রেফতারে র্যাব-১১ এর একটি দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর র্যাব -১১ এর একটি দল ক্লু-লেস ও লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সহযোগী ও অন্যতম আসামি মো. ইলিয়াস শেখকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে দা, ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়। পরে আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য দেয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল গাজিপুর কাপাসিয়া শালবন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি মো. রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত বছর ২৭ মে এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরূদ্ধে নিহতের বাবা মো. আবুল শেখ বাদী হয়ে টংগিবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এই হত্যাকান্ডের পরে মুন্সিগঞ্জের নিহতের স্বজনরা ও এলাকাবাসী হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করে। এই ঘটনা স্থানীয় সকল গণমাধ্যমে সংবাদ আকারে প্রকাশিত হয় ও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
তানভীর মাহমুদ বলেন, হত্যাকান্ডের পর হত্যাকারী রাকিব গ্রেফতার এড়ানোর জন্য গাজীপুরে আত্মগোপন করে। এই সময়ে সে ইজিবাইক চালক, রাজমিস্ত্রি, ট্রাক হেলপারসহ বিভিন্ন ধরনের পেশা বদল করে ও গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ি, এনায়েতপুর, কাপাসিয়াসহ বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করে। আসামি রাকিব চলতি বছরের ১৪ জুলাই বিয়ে করেন। সর্বশেষ সে স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার সূর্যনারায়ণপুরে শালবনের দুর্গম এলাকায় একটি ঘরে বসবাস করছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই হত্যাকান্ডে কোনো ক্লু ছিল না। কে বা কারা হত্যা করেছিল সে সময় জানা যায়নি। ক্লু লেস হত্যাকান্ড হওয়ায় প্রথম আসামিকে গ্রেফতার করতে আমাদের সাত মাস সময় লেগেছে। আসামিকে গ্রেফতার করার পরে ক্লু পাই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল ২ জন, ইলিয়াস শেখ ও মো. রাকিব। রাকিবের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করি। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারে গাজীপুরে অবস্থান করছেন রাকিব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন