মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দেশে বর্তমানে পুরুষ ধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে : আলামত যেভাবে পরীক্ষা করা হয়

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২১, ১১:১৬ এএম

যদি কোনো নারী ধর্ষিত হয়, তাকে প্রথমে ওই এলাকার থানাকে অবহিত করতে হবে। কেননা সেটা পুলিশ কেইস বা করতে জিডি হয়। থানা থেকে একজন পুলিশের ইন্সপেক্টর ভিকটিমকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে আসেন। থানার মাধ্যমে প্রোপার রিকুজিশন নিয়ে ফরেনসিক বিভাগে আসতে হয়। সেইসাথে ভিকটিমের ছবি ও স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার আছে। সেখানেও পরীক্ষা হয়ে থাকে। ওয়ান স্টপ ক্রাইসিসসেন্টারে ভিকটিমকে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। যেমন- অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা অন্যান্য কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হলে চিকিৎসকরা ভিকটিমকে তা দিয়ে থাকে। কথাগুলো ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার জান্নাতুন নাইম। এটি কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে।

তিনি আরো জানান, ভিকটিম যে ধর্ষিত হয়েছে সেই আলামত নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে। প্রয়োজন সাপেক্ষে ডিএনএ টেস্ট করা হয়ে থাকে। যদি ভিকটিমের সাথে কোনো দৈহিক মিলন হয়ে থাকে সেটা পরীক্ষা করবার জন্য ভিকটিমের যৌনাঙ্গ থেকে সোয়াপ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। যৌনাঙ্গের ভিতর কোনো শুক্রাণু আছে কিনা এ পরীক্ষাটি করেন ফরেন্সিক স্পেশালিস্ট। পরে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে নমুনা পাঠানো হয়। ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস থেকে নমুনা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের ভিতরে ডিএনএ ল্যাব আছে, ওখানে পাঠানো হয়। এছাড়া ফরেনসিক বিভাগে যে কেইস আসে সেগুলোর নমুনা মালিবাগে সিআইডির অধীনেও পাঠানো হয়।

এছাড়া বয়স নির্ধারণ করাবার জন্য ছয়টা হাড়ের এক্সরে করতে রেডিওলোজি বিভাগে পাঠাতে হয়। বয়সের সাথে ধর্ষণের একটা সম্পর্ক আছে। এরপর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পাঠানো হয় হাই ভেজিনাল সোয়াপ আছে কিনা তা দেখার জন্য। সব রিপোর্ট আসার পর ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হয়। এই রিপোর্টগুলো আসতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ দিন ও সর্বোচ্চ এক মাস সময় লেগে যায়। ধর্ষণ কেইসের ক্ষেত্রে পরীক্ষা করতে কোনো ধরনের খরচ নেই।

বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক এই সুবিধা পেয়ে থাকে। যেদিন ঘটনা ঘটে সেদিন থানায় গেলে থানা ভিকটিমকে সেফ কাস্টডিতে রাখে। কেউ যদি ধর্ষণের শিকার হয়, সাধারণত তিন দিনের মধ্যে এলে আলামত পেতে সুবিধা হয়।

যৌনাঙ্গের ভিতর শুক্রাণুটা পাওয়া যায়। এছাড়া ভিকটিমের কাপড়ও আলামত হিসেবে রাখা হয়। কারণ ধর্ষণ হওয়ার সময় কাপড়ে যদি কোনো বীর্য লেগে থাকে তাহলে ওই আলামত পাওয়া গেলে সুবিধা হয়।

আগে টু-ফিঙ্গার বলে একটা পরীক্ষা হতো। হাইকোর্ট থেকে আইন করে সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। আগে এই পরীক্ষা পুরুষ মহিলা সব ডাক্তারই করতেন। ২/৩ বছর যাবত শুধু মহিলা ডাক্তাররা পরীক্ষা করছেন।

যদিও এই পরীক্ষাটা খুব জরুরি। তথাপি ভিকটিমের মানহানির কথা চিন্তা করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ ভিকটিম তো এমনিতেই ধর্ষণের শিকার, তারপর ডাক্তারেরা আবার যৌনাঙ্গের ভিতর পরীক্ষা করে। এই জন্য করে যে যৌনাঙ্গের ভিতর একটা পুরুষাঙ্গ ঢোকার মতো ততটা স্পেস আছে কিনা।

ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ডাক্তার আছে ছয়জন এবং ফরেনসিক বিভাগে তিনজন । আর সহকারি আছে দুজন। এখন সবই মহিলা ডাক্তার। বর্তমানে লকডাউনকরোনার সময় ভিকটিম কম আসছে। তারপরও মাসে আনুমানিক ২০০ থেকে ৩০০ জন ভিকটিম আসে। সাধারণত ১৫ থেকে ৩৮ বছর বয়সী নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকে। তবে ইদানিং খুব ছোট শিশুরাও এর শিকার হচ্ছে, যেমন ৩ থেকে ৪ বছরের বাচ্চারা। ছোট বাচ্চাদের পরীক্ষা করার সময় অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। যেহেতু বাচ্চাটা ধর্ষণের শিকার হয়েছে তখন বাচ্চাটা অনেক ভয় পায়। বাচ্চারা তখন আর কাউকে বিশ্বাস করতে চায় না। অনেক সময় বাচ্চারা মানসিকভাবে ভেঙে পরে অসুস্থ হয়ে যায়। বাচ্চাদের অনেক বুঝিয়ে তথ্য বের করতে হয়। বর্তমানে অনেক পুরুষ ধর্ষণের কেইসও আসছে।

প্রতিদিন ১০/১২ জন ভিকটিম আসে। যে সংখ্যক ভিকটিম ফরেনসিকে আসে, সেই মোতাবেক ডাক্তার নেই। তাই হিমশিম খেতে হয়।

ভয়েস অফ আমেরিকার সাথে কথা বলতে গিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডাক্তার জান্নাতুন নাইম জানান, ৩৬৫ দিন ফরেনসিক বিভাগটি ভিকটিমদের জন্য খোলা থাকে এবং আমাদের কাজ করতে হয়। এই বিভাগে আরো ডাক্তারের প্রয়োজন।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Md Maruf Hossain ৮ অক্টোবর, ২০২১, ২:০৮ পিএম says : 2
আমি আজ থেকে বাইরে বের হবো না
Total Reply(0)
Sheikh Abu Zayed ৮ অক্টোবর, ২০২১, ২:০৮ পিএম says : 3
লা হাওলা ওয়া লা কুউয়াতা ইল্লা বিল্লাহ আল্লাহ আমাদের এইসব নষ্টামি থেকে হেফাজ করুন।
Total Reply(0)
Md Shohag ৮ অক্টোবর, ২০২১, ২:০৯ পিএম says : 10
purus nirjatoner siker hoy. meye o meyerbaper dara. Atar sothik Law thaka uchit.
Total Reply(0)
সোয়েব আহমেদ ৮ অক্টোবর, ২০২১, ২:১২ পিএম says : 4
পুরুষ নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠিন আইন করা দরকার
Total Reply(0)
jack ali ১১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:১৪ পিএম says : 6
If our country rule by Qur'an then no body dare to rape anyone. Enemy of Allah is ruling our country as such they have destroyed human morality.. Criminal government always corrupt the human morality by free mixing men women, indecent cinema, Natok, music, dancing, pornography as such it become very easy for criminal ruler to rule the country.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন