মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে স্পেনের সঙ্গী ফ্রান্স

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

এবারের ইউরোয় ঠিক নিজেদের মতো জ্বলে উঠতে পারেনি ফ্রান্স। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিয়েছিল শেষ ষোল থেকে। তবে এবার ব্যর্থতা নয়, প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত গল্প লিখে নেশন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে দিদিয়ের দেশমের দল। প্রথম সেমিফাইনালে ইতালির ৩৭ ম্যাচের অপরাজিত রথ থামিয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠেছিল স্পেন। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্স রূপকথায় হতাশায় ডুবল বেলজিয়াম। আরেকবার হতাশায় নিমজ্জিত বেলজিয়ামের ‘সোনালি প্রজন্ম’।

গতপরশু রাতে ম্যাচের প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল বেলজিয়াম। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সেটা আর ধরে রাখতে পারেনি তারা। ইতালির জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে হওয়া ম্যাচটিতে সেয়ানে সেয়ানে লড়েছে। বল দখলের লড়াইয়ে প্রায় কাছাকাছি। এমনকি পুরো ম্যাচে গোলের লক্ষ্যে সমান ছয়টি করেই শট নিয়েছে দুই দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে ফিরেছে ফ্রান্স।
প্রথমার্ধের ৩৭ মিনিটের সময় বেলজিয়ামকে এগিয়ে দেন ইয়ানিক কারাসকো। কেভিন ডি ব্রুইনের পাস থেকে গোল করেন কারাসকো। তিন মিনিট পর ডি ব্রুইনের আরেকটি পাস থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোমেলু লুকাকু।

বিরতি থেকে ফেরার পর গোল পেতে উন্মুখ হয়ে ওঠে ফ্রান্স। ৫৮ মিনিটের সময় সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন আঁতোয়ান গ্রিজমান। তবে চার মিনিট পর ফ্রান্সকে প্রথম গোল এনে দেন করিম বেনজেমা। কিলিয়ান এমবাপ্পের পাস ধরে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বেনজেমা। এর সাত মিনিট পর পেনাল্টি থেকে গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান এমবাপ্পে।
ম্যাচের মোমেন্টাম পেয়ে যাওয়া ফ্রান্স গোলের আরও সুযোগ তৈরি করে। ম্যাচের অন্তিম মুহ‚র্তে জয়-পরাজয় নির্ধারণী তৃতীয় গোল করে বেলজিয়ামকে হতাশায় ডোবান থিও হার্নান্দেজ। ডি-বক্সের মধ্যে ঠিকঠাক বল ক্লিয়ার করতে পারেননি বেলজিয়াম ডিফেন্ডাররা। সেখান থেকে গোল করেন হার্নান্দেজ।

রোমাঞ্চ-উত্তেজনার ভেলায় চেপে অবিস্মরণীয় এক জয়ের পর ফ্রান্স কোচের গর্বিত উচ্চারণ, ‘আমরা এখনও সেরা দলগুলির একটি।’ সেরা দলগুলির একটিতো তারা বটেই, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলে কথা! তারপরও তা মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণে। তারকায় ঠাসা দলের ঔজ্জ্বল্য কমে গিয়েছিল বেশ অনেকটা। পারফরম্যান্স ও ছন্দে এসেছিল ভাটার টান। ইউরোর শেষ ষোলতে বিদায় নেয়ার পর ফ্রান্স গত মাসে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা দুই ম্যাচে ড্র করে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং ইউক্রেনের সঙ্গে। পরে বাছাইপর্বের আরেক ম্যাচে তারা ফিনল্যান্ডকে হারায় ২-০ গোলে। এরপর এই রোমাঞ্চকর জয়।

মাঠের পারফরম্যান্স তো কথা বলছেই। ম্যাচের পর কোচ দেশমও মনে করিয়ে দিলেন, এই দল ফুরিয়ে যায়নি, ‘সুইজারল্যান্ড আমাদের ছিটকে দিয়েছিল (ইউরো থেকে), তবে ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দল এখনও টিকে আছে। আমরা সেটা নিশ্চিত করেছি ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে, আজকে বেলজিয়ামের বিপক্ষে, যারা ইউরোপ ও বিশ্বের সেরা দলগুলির মধ্যে আছে। আমরাও এখনও সেরাদের মধ্যে আছি।’ ২০১২ সাল থেকে ফ্রান্সের কোচের দায়িত্বে থাকা দেশমের কাছে এই ম্যাচ তার কোচিং ক্যারিয়ারের সেরাগুলোর একটি। দলের হার না মানা মানসিকতাও তাকে করেছে গর্বিত, ‘যেভাবে ম্যাচটি গড়িয়েছে এবং আমাদের প্রতিপক্ষ যতটা মানসম্পন্ন ছিল, সব মিলিয়ে এটি সেরা ম্যাচগুলির একটি। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েও তা বদলে দেওয়ার তাড়না ও মানসিকতা আমাদের ছিল। এটা অসাধারণ, দুর্দান্ত মুহূর্ত।’ মিলানোর সান সিরো স্টেডিয়ামে আগামীকাল শিরোপার লড়াইয়ে স্পেনের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন