শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পিএইচডি-এমফিল ডিগ্রি চালুর দাবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

মেহেদী হাসান মুরাদ, কুবি : | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০২ এএম

গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার দ্বার প্রসারিত করতে প্রয়োজন মাস্টার অব ফিলোসফি (এমফিল)-ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) ডিগ্রি। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পরও এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালু হয়নি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে উচ্চতর ডিগ্রি চালুর দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালু রয়েছে। অথচ একই সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েও পিছিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। কয়েকটি বিভাগ ইতোমধ্যে এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালুর আবেদন করলেও প্রশাসন বলছে ডিগ্রিধারী শিক্ষকের অভাব।
রেজিস্ট্রার কার্যালয় স‚ত্রে জানা যায়, গেল বছরের মার্চে এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালুর বিষয়ে নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। মে মাসে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় কিন্তু করোনার কারণে আটকে পড়ে। তবে নতুন করে কোর্স প্রণয়ন, ভর্তি ফি নিধারর্ণ করতে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান কে আহ্বায়ক এবং রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের কে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলে অনুষদ ভিত্তিক ভর্তি ফি নির্ধারণ করে এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
গবেষণাক্ষেত্র ও উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচন করতে এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালুর দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ইমু বলেন, ডিগ্রি প্রদানের পাশাপাশি আধুনিক ও প্রায়োগিক জ্ঞান সৃষ্টি ও তার সুষ্ঠু বিতরণ করাও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ। যুগোপযোগী কারিকুলাম ও গবেষণার মধ্য দিয়ে উন্নত বিশ্বের সাথে এগিয়ে যেতে এমফিল-পিএইচডির মতো উচ্চ ডিগ্রির বিকল্প নেই।
একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ইমরানুল হক বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে উচ্চ শিক্ষার সাথে সাথে মৌলিক গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করার কোন বিকল্প নেই। শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন, গবেষণায় উৎসাহ প্রদান ও বাস্তব ও বাজার ভিত্তিক মেধাবিকাশের লক্ষ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বয়ংক্রিয় গবেষণা সেল গঠনের পাশাপাশি পিএইচডি/এমফিল প্রোগ্রামগুলো চালু করা উচিত। অন্যথায় প্রতিযোগিতামুলক বিশ্বে জ্ঞান সৃষ্টির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে না পারলে, গতানুগতিক শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব না।
বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জি. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শুধু একজন শিক্ষক নয় একজন গবেষকও। এমফিল-পিএইচডি না থাকলে গবেষণাক্ষেত্র অসম্পূর্ণ থেকে যায়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এমন ডিগ্রির বিকল্প নেই। আমাদের বাংলা বিভাগে ৫ জন পিএইচডি আছে। এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রির ক্ষেত্রে যে যোগ্যতা লাগে তা বাংলা বিভাগের আছে। এসব ডিগ্রি চালু করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বাংলা বিভাগ। এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মান-মর্যাদার সাথে জড়িত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, এমফিল-পিএইচডি কোন সাধারণ বিষয় নয়। পিএইচডি করতে গেলে শিক্ষককে অবশ্যই পিএইচডি ডিগ্রিধারী হতে হবে। আমাদের এখনো ৫০ শতাংশ পিএইচডিধারী শিক্ষক নেই। আগামী ২ বছরের মধ্যে তা ছাড়িয়ে যাবে। তবে প্রথমে শিক্ষকদের দেখতে হবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের বেসিক কোর্সগুলোতে সুন্দরভাবে পাঠদান করতে পারতেছি কিনা। তারপরে এমফিল-পিএইচডির মতো কোর্সগুলোতে নজর দেয়া যাবে।
পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান নাহিদা আফরোজ বলেন, গবেষণাখাতকে এগিয়ে নিতে অবশ্যই এমফিল-পিএইচডি ডিগ্রি চালু করা উচিত। তবে দেখতে হবে শিক্ষাকদের সামর্থ্য আছে কিনা? পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে পারলে এবং সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারলে এ বিশ্ববিদ্যালয়েও গবেষণা করা সম্ভব। যার ফলে নতুন নতুন পাবলিকেশন্স আসবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত মে মাসে এমফিল-পিএইচডির একটি প্রজ্ঞাপন আসে। বিশ^বিদ্যালয় সিনিয়র শিক্ষক কম তাই প্রথমে গুরুত্বারোপ করা হয়নি। গত একাডেমিক কাউন্সিলে আবার বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। কমিটির সাথে বসে ভর্তি ফি নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয়গুলো চ‚ড়ান্ত করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন