শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দাপট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০২ এএম

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের আশ্বাসের পর গতকাল রোববার দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর দামে বড় উত্থান হয়েছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক শেয়ারবাজারে। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচকও। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।

গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমরা এ খাতকে (মিউচুয়াল ফান্ড) অনেক দূর এগিয়ে নিতে চাই। এক্ষেত্রে আমরা সেবক হিসেবে যত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দরকার, সব দিতে চাই। এ মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে অনেক অনেক বড় অবস্থানে দেখতে চাই। তিনি বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের কোনো প্রচার নেই। ব্যক্তিগতভাবে প্রতিদিন কমপক্ষে দুজন লোক ফোন করে কোন মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করবে তা জানতে চায়। যেখানে ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সব শ্রেণির মানুষ ফোন করে। কোন ফান্ডে বিনিয়োগ করবে, সবাই এটা জানতে চায়। এছাড়া কোন ফান্ড কেমন রিটার্ন দেয়, সেটিও তারা জানতে চায়।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এ বছর ফান্ডগুলো অনেক ভালো রিটার্ন দিয়েছে। তারা অনেক ভালো করছে। তাতে আমরা খুশি। আমরা চাচ্ছি, এই খাতের উন্নতির যে সঠিক সময় যাচ্ছে, সে সুযোগটি কাজে লাগাতে। গত সপ্তাহেও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত নিয়ে কমিশন সভা বসেছিল। কীভাবে এ খাতকে সহযোগিতা ও আকারে দশগুণ করা যায়, তা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। আপনাদের কার কী সহযোগিতা দরকার, আশা করবো তা বলবেন। মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও বন্ডে সাপোর্ট দেওয়া নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন শেয়ারবাজার থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব দেওয়া হয়, তা ১০০ গুণ বেড়ে যাবে। এ জন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও বন্ডে সহযোগিতা করা দরকার। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান সম্মতি জানিয়েছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের পর রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তালিকাভুক্ত সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বেড়ে যায়। যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে দিনের লেনদেন শেষে তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সবগুলোর দাম বড় অঙ্কে বেড়েছে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর এমন দাপটের ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট বেড়ে সাত হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইর শরিয়াহ্ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক এক পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৭৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৪টির। আর ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৬২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২ হাজার ৪৯৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৫২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ১২৯ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের ১০০ কোটি ৫৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৯৮ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাওয়ার গ্রিড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, ওরিয়ন ফার্মা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ফারইস্ট নিটিং, জিপিএইচ ইস্পাত, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩১৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৬টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন