শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বগুড়ায় ইউপি নির্বাচনে হত্যা ও মাদক মামলার আসামীরা নৌকা পেতে তদবির করছেন

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০২১, ৪:৪৫ পিএম

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বগুড়ায় একাধিক ইউনিয়নে হত্যা ও মাদক মামলার আসামীরা আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে তদবির করছেন। ইতিমধ্যে ২য় ধাপের ঘোষিত তফসিলের পর কয়েকটি ইউনিয়নে বিতর্কিতরা মনোনয়ন পেয়েছেন। এসব নিয়ে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামীলীগের তৃনমুল নেতাকর্মিদের মেধ্য অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

জেলার গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান আলতাব একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামী। আলতাবের একটি ইটভাটা আছে ওই এলাকার জামিরবাড়ীয়া পিছনপাড়ায়। ওই ইটভাটার আশরাফ আলী নামে এক কর্মচারীকে ২০১৩ সালের ১৪ জুন রাতে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও রাতভর নির্যাতন করে মূখের ভিতর বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যা করেন। এ হত্যার ঘটনায় পরের দিন আলতাবকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের বিরুদ্ধে গাবতলী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের পরিবার। আর এই হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী আলতাবের বাড়ী-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়। এ মামলায় আলতাবকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় সে সময়কার গাবতলী মডেল থানার এসআই আনোয়ার হোসেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে আলতাবকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলাটি বিচারাধীন আছে এবং আলতাব উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন। ওই হত্যার এক বছর আগে আলতাব ওই সোনারায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর হয় ওই ইউনিয়নের সম্মেলন না হওয়ায় এখনও তিনি ওই পদে বহাল আছেন। আর ওই পদে বহাল থেকে এবার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়নের জন্য তদবির ও দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন।

স্থানীয়রা এবং দলীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন,আলতাব একজন নিরিহ মানুষকে খুন করেছে এবং দলের মধ্যে নানা বিতর্কের সৃষ্টি করে চলেছে। এসবের কারনে এক বছর আগে দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্চিতও হন আলতাব।

অপরদিকে বগুড়ার সদর উপজেলার সাবগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইসরাইল হোসেন একটি হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। ওই ইউনিয়নের উদ্দিগোলা বাজারে ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর প্রকাশ্যে দিনের বেলায় আব্দুর রহিম সরকার নামে এক আওয়ামীলীগ কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুল বাসেদ সরকার বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ১৭ জনের নামে বগুড়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্যতম আসামী করা হয় সাবগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইসরাইল হোসেনকে। এ মামলায়ও ইসরাইল হোসেনকে অভিযুক্ত করে চাজশীট দেয় পুলিশ। ইসরাইল হোসেন জামিন নিয়ে এলাকায় জনসংযোগ করছেন। তিনিও দলীয় মনোনয়নের জন্য তদবির করছেন।

জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এফাজ উদ্দিন একটি খুনের মামলার অন্যতম আসামী। জানা গেছে,ওই ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল করিম শেখ ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল খুন হন। এ খুনের ঘটনায় নিহতের পরিবার থেকে যাদেরকে আসামী করা হয় সেখানে এফাজ উদ্দিনের নাম ছিলনা। এ খুনের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি এফাজ উদ্দিনের সম্পৃক্ততা পান। সিআইডির ওসি শামসুল আলম মামলার তদন্ত শেষে এফাজ উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ৫ আগষ্ট আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। তিনি ইউপি নির্বাচন করতে দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছেন।
একই ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক আল ওয়াকি শিলু একটি মাদক মামলার আসামী। তাকে ইয়াবাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ মামলায় ২৩ মে ২০১৯ সালে রায় হয়। রায়ে আল ওয়াকি শিলুর এক বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে তিনি মামলার রায়ের বিষয়ে আপিল করেছেন। তিনিও দলীয় মনোনয়নে চেয়ারম্যান হতে চান।

ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদ্য বহিস্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ তারেক হেলাল মাদক মামলার আসামী। ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা হয়। তিনিও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চাইছেন। একই উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মুর্ত্তজা একটি মাদক মামলার আসামী। ২০০৭ সালে তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা হয়। তিনিও দলীয় মনোনয়ন পেতে তদবির করছেন।

এছাড়া জেলার শিবগঞ্জ ও শেরপুর উপজেলায় ২০টি ইউনিয়নে যাদেরকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই হত্যা,সরকারী মানবিক সহায়তার টাকা ও সরকারী গাছ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। এরা মনোনয়ন পাওয়ায় এলাকায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে দলের মধ্যে।

এ সব বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু বলেন,আমরা শুধু তৃণমুলের মনোনীত নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠাই,মনোনয়ন দেয় কেন্দ্র। এতে আমাদের কিছু করার নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
jack ali ১২ অক্টোবর, ২০২১, ৫:৩৮ পিএম says : 0
আল্লার শরীয়তের আইনে কেউ কখনো নিজেকে সরকারি কোন পোস্টের জন্য দাড়ি দাঁড়াতে পারে না বাংলাদেশের যত চোর বাটপার আছে তারাই সরকারের ধারক-বাহক আর এই জন্যই আজকে আমাদের ধ্বংস হয়ে গেছে
Total Reply(0)
Dr. Rayhanul Haque ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ৮:৫৭ এএম says : 0
এটা ছিল রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা। মুজিবুর রহমান আলতাফ ভাই সোনারায় ইউনিয়ন বাসির চোখের মনি, আর কিছু আনকোরা রাজনৈতিক নেতাদের এই বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে রাজনৈতিক চাল খাটিয়ে তালক জনগন এর নিকট ছোট করতে ও হয়রানি করতে এই মামলাটি করা হয়েছিল। আর তার জনপ্রিয়তা ও দলীয় সমর্থন আছে বলেই সে আজ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এর সাধারন সম্পাদক ও সোনারায় ইউনিয়ন বাসির মাটি ও মানুষের নেতা। আমরা তার প্রতি করা অন্যায় ও মিথ্যা অপপ্রচার এসব কিছুর জবাব দিব ব্যলট এ। বিঃদ্রঃ সব নেতার এমন দু চারটা মামলা আছে বা থাকে সেইটা পাবলিক বোঝে। আপনারা এখনও বোকার সাগরে বাস করছেন।
Total Reply(0)
হরিশংকর রায় ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ১০:২২ পিএম says : 0
নিউজ রিপোর্টারদের এখন মৌসুম চলছে! নির্বাচনের সময় আসছে আর বিরোধী দল এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে থেকে একটা এমাউন্ট পেলেই কাজ শেষ! সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্যতায় রুপ দেয়া যেন এক চরম অভ্যাসে পরিণত হয়েছে! দু একজন দুধে ধোঁয়া তুলসিপাতা কে নিয়ে সুন্দর নিউজ করেন! তাদের মনোনয়ন এর জন্য রেফার করেন! রাজনীতি সম্পর্কে যদি জ্ঞান থাকতো এমন নিউজ করতে আপনারা একটু হলেও ভাবতেন, আমাউন্ট আর চামচাদের কথায় উল্টোপাল্টা নিউজ পাবলিশ করতেন না! ধন্যবাদ!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন