পিয়ারা নবী নূরের রবি মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:) আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা সর্ব প্রথম সৃষ্টি। এতদ সম্পর্কে তিনি ইরশাদ করেছেন: (ক) সৃষ্টির ব্যাপারে আম্বিয়াদের মধ্যে আমিই সর্বপ্রথম। আর আবির্ভাবের ব্যাপারে আমি সর্বশেষ। (খ) তিনি আরো ইরশাদ করেছেন : আমি আদতেই আল্লাহ পাকের বান্দাহ ও খাতামুন নাবিয়্যিন নির্বাচিত হয়েছি, যখন আদম (আ:)-এর সৃষ্টিই হয়নি। (গ) আরো ইরশাদ হয়েছে: আল্লাহ জাল্লা শানুহু আমাকেই প্রথম ও শেষ নবী করেছেন। (ঘ) তিনি আরো ইরশাদ করেছেন: আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন। (ঙ) হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত আছে, মহান আল্লাহ জাল্লা শানুহু তার হাবীবে মুকাররাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ করেছেন: হে প্রিয় নবী! আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি এই ত্রিভ‚বন সৃষ্টি করতাম না।
গোটা সৃষ্টিকুল ও মানব জাতির প্রতি আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালার অগণিত রহমত, ফজল, করম ও নেয়ামতের মধ্যে হাবীবে কিবরিয়া মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনই সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত, যার স্বীকৃতি আল কোরআনে চিরবাস্বর হয়ে রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালা মুমিনদের প্রতি বিরাট উপকার করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য হতে তাদের নিকট এক রাসূল (সা:) প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদের সামনে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তায়ালার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করেন এবং তাদের আত্মশুদ্ধি প্রদান করেন এবং তাদের জ্ঞান বিজ্ঞানের বিষয়াদি শিক্ষা দান করেন। অথচ এর পূর্বে তারা সুস্পষ্ট গোমরাহির মধ্যে নিপতিত ছিল।’
সেই প্রথভ্রষ্টতা ও গোমরাহির নিশ্চিদ্র সুগভীর অন্ধকার ও জুলমাতকে চিরতরে দূরীভ‚ত করার জন্য আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত স্বীয় নূর দ্বারা খাতামুন নাবিয়্যিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আকর্ষিত করে প্রথমে এ ধরা ভ‚মির আরব ভ‚খÐকে আলোকিত ও সমুদ্রদ্ভাসিত করলেন। কেননা, পৃথিবীপৃষ্ঠের এই অংশটি তখন সমস্ত অন্যায়, অত্যাচার ও অনাচার এবং জুলুম ও নির্যাতনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এর চতুর্দিকে মূর্তিপূজারীদের দৌরাত্ম্য ও অশ্লীলাচারের ব্যাপকতা ছিল বিরাজমান।
তাই, পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের বরকতে শান্তি, স্বস্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও হেদায়াতের আলো লাভ করেছে গোটা জগৎবাসী। কী মুসলমান, কী বৌদ্ধ, কী খৃষ্টান, কী ইহুদি, কী পৌত্তলিক বরং জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র ও অঞ্চল নির্বিশেষে সকল মানুষ তার মধুময় সমুজ্জল চরিত্রের ব্যাপারে একমত যে, তার চেয়ে শ্রেষ্ঠতম আমানতদার, উৎকৃষ্টতম সত্যবাদী, তার মতো ত্যাগী, অতুলনীয় লজ্জাশীল, পাহাড়তুল্য ধৈর্যশীল, অতল জলধীসম দয়াবান এবং ন্যায়ানুরাগী ও কল্যাণকামী এমন আর কাউকে পরিদৃষ্ট হয়নি। কাসিদায়ে বুরদা শরীফে এই অভিব্যাক্তিই উচ্চারিত হয়ে ফুটে উঠেছে, ‘তিনিই তো সেই হাবীবে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যার শাফায়াতের আশা পোষণ করা যায় সকল সঙ্কটকালে, এমনকি কেয়ামতের অতিভয়াবহ পরিবেশেও’।
[উৎস: মাওয়ায়েজে সাইয়্যেদ মুফতী মোহাম্মাদ আমীমুল ইহসান (রহ:)]
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন