বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ই-কমার্সে প্রতারণার প্রতিযোগিতা

একে একে ধরা পড়ছে অভিযুক্তরা : ৬০ প্রতিষ্ঠানের তালিকা সিআইডির হাতে

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

সরকার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দায় নেবে না : বাণিজ্যমন্ত্রী
গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের জন্য সকলের বদনাম হতে পারে না : ইক্যাব

তথ্য-প্রযুক্তির নানা উদ্ভাবন কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়েছে উন্নত বিশ্ব। প্রযুক্তির সুযোগ-সুবিধা ছড়িয়ে দিয়েছে নিজ দেশ থেকে শুরু করে সারাবিশ্বের মানুষের মাঝে। অনলাইন কেনাকাটার অগ্রপথিক প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন, এল ইবে, রাকুতেন, আলিবাবার হাত ধরে ই-কমার্স নিজ নিজ দেশে যাত্রা শুরু করলেও এসব প্রতিষ্ঠান এখন এই খাতে জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাদের ব্যবসার বিস্তৃতি গোটা বিশ্বে। ব্যবসা পরিচালনায় সততা, নিষ্ঠা ও গ্রাহকের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে বছরের পর বছর টিকে আছে এসব প্রতিষ্ঠান। একই সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশেও। বিগত কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশে অনলাইন কেনাকাটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাজধানীর যানজট, নগরবাসীর ব্যস্ততাসহ নানা কারণেই এই মাধ্যমে ঝুঁকছিলেন মানুষ। আর করোনার আঘাত ই-কমার্সে সম্পৃক্ত করেছে মুদি দোকানী, ছোট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষকেও। কিন্তু হঠাৎ করে এই খাতে গজিয়ে উঠা ব্যবসায়ী, প্রতারণার মানসিকতায় সম্পৃক্ত হওয়া, গ্রাহকদের অতিলোভের কারণে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে সম্ভাবনাময় এই খাত। আর এদের অনৈতিক কর্মকান্ড ও প্রতারণার কারণে গ্রাহকদের আস্থা হারাচ্ছে অনলাইন কেনাকাটার প্রতিষ্ঠানগুলো।

গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে লোভনীয় অফার ঘোষণা করে শতাধিক প্রতিষ্ঠান হাতিয়ে নিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অফার ঘোষণার পর ক্রেতারা হুমড়ী খেয়ে পড়ে করেছেন বিনিয়োগ, আর এসব টাকা কেউ পাচার করেছেন দেশের বাইরে, কেউবা আত্মসাৎ করেছেন নিজেরাই। অন্যদিকে গ্রাহকদের দিনের পর দিন পণ্য না দিয়ে দিয়েছেন আশ্বাস। সম্প্রতি আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির মাধ্যমে এই খাতে প্রতারণার মুখোশ উন্মোচিত হয়। একে একে বের হতে থাকে প্রতারণাকারীদের থলের বেড়াল। প্রতারণার শিকার হওয়া গ্রাহকরাও মুখ খুলতে থাকে। মামলাও করেন অনেকে। এরপরই গ্রেফতার করা হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক, পরিচালক, কর্মকর্তাদের।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্রে জানা যায়, ই-কমার্সের নামে সন্দেহজনক লেনদেন করছে এমন ৬০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা সিআইডির কাছে আছে। যার মধ্যে ৩০-৩২টি প্রতিষ্ঠানকে মনিটরিং করা হচ্ছে।
যদিও আজকের ডিল ও বিডিজবস এর সিইও ফাহিম মাশরুর বলেন, গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের জন্য সকলের বদনাম হতে পারে না। বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠান ভাল সেবা দিচ্ছে এবং এই কারণে এই বিকশিত হচ্ছে। সেবা না পেলে ভোক্তারা এখানে আসতো না। তাই যারা সঠিক সেবা দিচ্ছে তাদের বিষয়টি ক্রেতা সাধারণকে জানানো উচিত।
জানা যায়, দেশে বর্তমানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। আর এফ-কমার্স (ফেসবুকভিত্তিক) আছে আরও ৫০ হাজারের বেশি। কোটি কোটি মানুষের হাতে হাতে থাকা ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সহজেই পণ্য সামগ্রী ভোক্তাদের হাতে পৌঁছে দেয়ার এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতারকচক্র রাতারাতি অনলাইনে পণ্য সরবরাহ ও পরিষেবার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রশিক্ষিত, অপ্রশিক্ষিত, প্রতারণার উদ্দেশ্যে যে যেভাবে পেরেছে ইচ্ছেমত একটি ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুকে পেজ খুলে শুরু করেছে ই-কমার্স ব্যবসা। যার জন্য প্রয়োজন হয়নি কোন লাইসেন্স, নেই কোন নীতিমালা, জবাবদিহিতাও নেই কারো কাছে। ফলে পণ্যের নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক দামে, কখনো পণ্যের সমপরিমাণ ক্যাশব্যাকসহ অসম্ভব ও লোভনীয় অফার ঘোষণা করে ক্রেতাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। গ্রাহকরাও লোভনীয় এসব অফার পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। এ যেন অনলাইন মাধ্যমকে ব্যবহার করে প্রতারণার নতুন ফাঁদ।

ই-কমার্সে গ্রাহক প্রতারিত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দায় সরকার নেবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, দেশে অন্তত ২০ হাজার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত। গ্রাহকেরা কম মূল্যে পণ্য কিনতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা কম মূল্যে পণ্য কেনার সময় তো সরকারকে জানায়নি। তাহলে তাদের ক্ষতির দায় সরকার নেবে কেন?

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তবে যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে সরকার। সরকার চায় ই-কমার্স ব্যবসা ভালো করুক। এখন পর্যন্ত ১০-১২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।

ই-কমার্স খাতে প্রতারণার প্রথম অভিযোগ উঠে ইভ্যালির বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকের কাছে হাজার কোটি টাকা দেনার বিপরীতে মূলধন মাত্র ৬১ কোটি টাকা। বাকী টাকা কোথায় তার কোন সদুত্তর নেই। এরপর একে একে বের হতে থাকে ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, সিরাজগঞ্জ শপ, রিং আইডি, কিউকম, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট, নিডস, দালাল প্লাস, বাজাজ কালেকশন, টুয়েন্টিফোর টিকেট ডট কম, গ্রিন বাংলা, এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এ্যাগ্রো ফুড এন্ড কনজ্যুমারস, গিøটার্স আরএসটি ওয়ার্ল্ডসহ অন্তত: ২৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার তথ্য। এর মধ্যে ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। তবে প্রতারণার মাধ্যমে যাদের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে সেই গ্রাহকরা আদৌও তাদের টাকা ফেরত পাবে কিনা সে বিষয়ে নেই কোন নিশ্চয়তা।

প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা বলছেন, শেয়ারবাজার লুণ্ঠন থেকে শুরু করে এমএলএম মার্কেটিং, যুবক-বিসমিল্লাহ গ্রæপ থেকে এখন ইভ্যালি, ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, রিংআইডি পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই শেষ পর্যন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সাধারণ ভোক্তা ও এজেন্টরা। মানুষ নিঃস্ব ও প্রতারিত হওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে যে সব আইনগত উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেয়া হয় তাতে বেহাত হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার বা প্রতারিত ভোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত পাওয়ার কোনো সাফল্য দেখা যায়নি।

গ্রেফতার হলেন যারা:
চোখধাঁধাঁনো অফার দিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে ইভ্যালি হাতিয়ে নিয়েছে হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির এক হাজার কোটি টাকার দেনার বিপরীতে মূলধন আছে মাত্র ৬১ কোটি টাকা। বার বার সময় দেয়ার পরও গ্রাহকদের টাকা কিভাবে ফেরত দেবে সে বিষয়ে জানাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মদ রাসেল। পরবর্তীতে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় এখন কারাগারে আছেন ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও রাসেলের স্ত্রী শামীমা নাসরিন।

২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপ ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে স¤প্রতি গ্রাহকরা টাকা নিয়ে সময়মত পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ করেছেন। পণ্য ডেলিভারি না দেয়া এবং অগ্রিম অর্থ ফেরত না দেয়ায় ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এখন কারাগারে।

গ্রাহকদের কয়েক শ’কোটি টাকা নিয়ে ‘লাপাত্তা’ হয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিং। চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন ও আকর্ষণীয় ছাড়ে পণ্য বিক্রির ফাঁদ তৈরি করে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৫৮৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) জসিমউদ্দিন চিশতি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। এ ছাড়া পরিচালনা পর্ষদের বেশির ভাগ সদস্য পালিয়ে বিদেশে চলে গেছেন বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত সংস্থা (সিআইডি)। এর মধ্যে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের দায়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ধামাকা শপিংয়ের চিফ অপারেশন অফিসার (সিওও) সিরাজুল ইসলাম রানাসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জের মত চটকদার বিজ্ঞাপন ও বিশাল ছাড়ের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সিরাজগঞ্জশপ ডটকম ও আলাদিনের প্রদীপের বিরুদ্ধে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানে পণ্য অর্ডার দিয়ে আগাম টাকা পরিশোধ করে বিপাকে অনেক গ্রাহক। সিরাজগঞ্জ শপের প্রতিষ্ঠাতা জুয়েল রানা জেলা প্রশাসনের লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রজেক্টে প্রশিক্ষণ নিয়ে গড়ে তোলেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি।

একইভাবে তাড়াশ উপজেলার নিভৃতপল্লির তরুণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন এবং মাহমুদ হাসান গড়ে তোলেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলাদিনের প্রদীপ। সিরাজগঞ্জশপ ডটকম ও আলাদিনের প্রদীপ প্রায় সোয়া চার লাখ অর্ডারের বিপরীতে আগাম নেয় ২০৫ কোটি টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কালো তালিকাভুক্ত ১৫টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে এই দুটি। প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, মার্চেন্ট এবং গ্রাহকদের কাছে সিরাজগঞ্জশপ ডটকমের প্রায় ১৭ কোটি আর আলাদিনের প্রদীপের প্রায় ৫ কোটি টাকা দেনা রয়েছে।

মাত্র তিন মাসে শুধু কমিউনিটি জবসের নামেই গ্রাহকের ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রিং আইডি। প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সাইফুল ইসলাম এখন কারাগারে।
কিউকমের ডিসকাউন্টের ফাঁদে পড়ে ৪২০ কোটি টাকা হারিয়েছেন শত শত গ্রাহক। বিজয় আওয়ার, স্বাধীনতা আওয়ার এবং বিগ বিলিয়ন- এ তিন ক্যাটাগরিতে গ্রাহকদের মোটরসাইকেল কেনার অফার দেয় প্রতিষ্ঠানটি। শুধু মোটরসাইকেল কিনতেই ২৫০ কোটি টাকা খুয়েছেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

সম্প্রতি পরিচালকসহ তিনটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ৮ জন গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। এর মধ্যে বিমানের টিকিট বিক্রির নামে গ্রাহকের ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অনলাইন টিকেটিং এজেন্সি টুয়োন্টিফোর টিকেট ডটকমের পরিচালক মিজানুর রহমানসহ দুইজন। গ্রাহকদের কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থলেডটকম ও উইকুমডটকমের হেড অব অপারেশন্স মো. নজরুল ইসলাম, একাউন্ট কর্মকর্তা সোহেল হোসেন, ডিজিটাল কমিউনিকেশন্স কর্মকর্তা মো. তারেক মাহমুদ অনিক, সেলস এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা সাজ্জাত হোসেন, কলসেন্টার এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা মুন্না পারভেজ এবং সুপারভাইজার মো. মাসুম হোসেন। এদিকে স¤প্রতি অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন ও নানা অস্বাভাবিক অফার দিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্ত তৈরি করায় চার ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এগুলো হচ্ছে- থলে, দালাল প্লাস, আনন্দের বাজার ও অলশপার। ১৭ অক্টোবরের মধ্যে চার কোম্পানির সব তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানানোর কথা বলা হয়েছে নোটিশে।

এছাড়া ডিজিটাল মাইক্রোফাইন্যান্সের নাম করে অ্যাপসভিত্তিক অবৈধ সুদের ব্যবসা করায় প্রতারক চক্রের সাত সদস্যের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আর পাঁচ সদস্যকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- চীনা নাগরিক হি মিংশি ও ইয়াং সিকি, মজুমদার ফজলে গোফরান, আহসান কামাল, হিমেল অর রশিদ, নাজমুস সাকিব ও জেরিন তাসনিম বিনতে ইসলাম। আর কারাগারে যাওয়া পাঁচ আসামি হলেন-ইমানুয়েল এডয়োর্ড গোমেজ, আরিফুজ্জামান, শাহিনুর আলম, শুভ গোমেজ ও আকরাম আলী। তারা সরকারি অনুমোদন ছাড়া থান্ডার লাইট টেকনোলজি লিমিটেড, নিউ ভিশন ফিনটেক লিমিটেড ও বেসিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করত।

অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন বর্তমানে এ খাতে বিরাজ করছে এক বন্য প্রতিযোগিতা। শৃঙ্খলা ফেরাতে শুধু কঠোর হলে মুখ থুবড়ে পড়তে পারে এ খাতের বিশাল সম্ভাবনা। তাই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সংকট উত্তরণের উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ তাদের। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেছেন, কাউকে শাস্তি দিয়ে বা জেলে পুড়ে, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এতে ব্যবসা থমকে দাঁড়াবে। আমরা যদি এ খাতের উন্নয়ন চাই, তাহলে তাদের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করে তা মেনে চলার সময় দিতে হবে।

তবে এ অবস্থাতেও ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য সহজে লাভজনক বাজার কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করছে দেশের ডিজিটাল মার্কেটের সিংহভাগ দখলে থাকা দারাজ বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে মানতে হবে, ই-কমার্স নীতিমালা আর ভোক্তাদের হতে হবে দায়িত্বশীল।

ই-কমার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, আমরা প্রকৃত ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের সামনে নিয়ে আসতে চাই এবং মন্দ ব্যবসায়িক কৌশল প্রয়োগের পথ খোলা রাখতে চাইনা। এ ব্যাপারে ই-ক্যাব সরকারের সাথে কাজ করছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে নজরদারীতে রাখা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
পায়েল ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ২:৪৯ এএম says : 0
কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না, সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে
Total Reply(0)
Iqbal Hasan ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
জনগণের অনেক কস্ট করে জমানো টাকা নিমেষে ই শেষ করে ফেলছে এরা. এদের বাচিঁয়ে রেখে লাভ কি? আর সাধারণ মানুষের দোষ তারা বেশি লোভ করে
Total Reply(0)
Shafiul Islam ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
This is not e- commerce. It's money game.
Total Reply(0)
Amirul Hasan ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৭ এএম says : 0
যারা এদের লালন পালন করেন ....যাদের আশির্বাদ নিয়ে এরা প্রতারনা করার সুযোগ পায়....যারা এদের থেকে সুবিধা নিয়ে সাধারণ মানুষকে নিঃস্ব করেন তারা কি বরাবরই ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থাকবেন।
Total Reply(0)
MD Imran Hashemi ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৮ এএম says : 0
দেশীয় অধিকাংশ কোম্পানিই দূর্নীতিগ্রস্ত। ফলে সাত নদী তের বিল পেরিয়ে এসে ব্যবসা করে নিয়ে যাচ্ছে দারাজ....
Total Reply(0)
Jamil Ahmed Tanvir ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৯ এএম says : 0
ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যতিত আর কোন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন যেন না দেয়া হয় তাহলে প্রতারণা অনেকটা কমবে কারন আমরা জাতি হিসেবে এখনো অনেকটা লোভী আর অসৎ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন