ধলাই নদীতে পলো, উড়াল জাল, প্লেন জাল দিয়ে মাছ শিকারের উৎসব পালন করা হয়। স্থানীয়রা যার নাম দিয়েছেন “পলো বাওয়া” উৎসব। পলো শব্দটি এসেছে বাঁশ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি এক ধরনের ঝাঁপির নাম থেকে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একটি নদীকে কেন্দ্র করে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে পালিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা উৎসব। গ্রাম বাংলায় প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই মাছ ধরা উৎসব জানিয়ে দেয় মাছে-ভাতে বাঙালির দেশে মাছ হারিয়ে যায়নি।
পুরোদমে শুষ্ক মৌসুম শুরু না হলেও উপজেলার বুক দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীসহ বিভিনড়ব এলাকার প্রবাহমান ছোট ছোট ছড়া বিলসহ বিভিনড়ব জলাশয়ে শুরু হয়েছে পলো বাওয়া উৎসব। গতকাল সকাল সাড়ে ১০ টায় ধলাই নদীতে এই মৎস্য আহরণ শুরু হয়। এতে প্রায় ৪ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়ন কালাছড়া থেকে শুরু করে ধর্মপুর মিরতিংগা ব্রিজে এসে শেষ হয়।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ কুমড়াকাপন, আলেপুর, চন্ডিপুর, কুমড়াকাপন ও উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা ও মিতরিঙ্গা এলাকারসহ বিভিনড়ব গ্রামের মানুষজন এতে অংশগ্রহণ করেন। কমলগঞ্জের খাল-বিল ও নদী নালার পানি কমতে শুরু করেছে।
কমলগঞ্জের ফসলি মাঠগুলো এখনো হয়ে উঠেনি আবাদের উপযোগী। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকের হাতে নেই তেমন কোন কাজ। এ অবসরে অল্প পানিতে মাছ শিকারের উৎসবে মেতে উঠেছে সবাই। ধলাই নদীর স্বল্প পানিতে এখন বিভিনড়ব উপকরণ দিয়ে দল বেঁধে মাছ ধরার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে পলো, উড়াল জাল, পেলেন জাল এসব দিয়েই মাছ শিকার করছেন মানুষ। দলবদ্ধভাবে মাছ শিকারের এ দৃশ্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা।
বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলে-মেয়েরাও যে যার মতো করে মাছ ধরতে সহযোগিতা করছে। মাথা ও কোমরে আঁটসাঁট করে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরছেন সবাই। পলে বাওয়া উৎসবে আলেপুর গ্রাম থেকে আসা আনিস মিয়া বলেন, বছরের এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। সবাই মিলে এক সঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। এক কেজি ওজনের একটি ঘাগট মাছ পেয়ে আরো বেশি আনন্দ লাগছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন