শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঢাবিতে ফের চালু হলো গণরুম

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা গণরুম সংস্কৃতি বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত মাসে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সভায় কয়েক ধাপে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর গত ৫ অক্টোবর স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য হল খোলার সময়ও কথিত গণরুম থাকবে না বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো.আখতারুজ্জামান। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ১৩ ছাত্রসংগঠনের ফোরাম পরিবেশ পরিষদও প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু গত ১০ অক্টোবর সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেয়া হলে আবারও আগের মতোই শিক্ষার্থীদের গণরুমে অবস্থান করতে দেখা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল, স্যার এফ রহমান হল, বঙ্গবন্ধু হলসহ বেশ কয়েকটা হল সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার আগে যেমন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা গণরুমে বসবাস করতেন এখনো সেভাবেই বসবাস করছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় ৭১ হলের প্রভোস্ট প্রফেসর আব্দুল বাছির বলেন, যে হলগুলোতে জায়গা সংকুলান কম সেগুলোতে আলাদা বেড বানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বিজয় একাত্তরের মত বড় বড় হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ আবাসনের আওতায় আনার জন্য কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। তিনি জানান, বিজয় একাত্তর হলে ইতোমধ্যে প্রায় দুইশ’র অধিক শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীর আবদেন এখনো পাননি বলে জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর ড.একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, হলের সবগুলো রুম এখন হল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং যেসব রুমে থাকার ব্যবস্থা আছে সেরুমগুলোতে সিট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এখন শিক্ষার্থীরা যদি বরাদ্দ না নিয়ে গণরুমে থাকে সেটা তো তাদের ব্যাপার। তিনি বলেন, আমাদেরও এটা জানা দরকার যে তারা কেন গণরুমে থাকছে। কারণ পারস্পারিক সাহায্য ছাড়া তো কোনো কিছুই সম্ভব না।
প্রক্টর বলেন, হলগুলোতে এখন আর কোনো গণরুম নেই; সবগুলো রুম রূপান্তরিত করে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাদেরকে রুম দেওয়া যায় তাদের রুম দিবে হল প্রশাসন।

এদিকে পুনরায় গণরুম চালু হওয়ায় প্রশাসনের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, গণরুম বিলুপ্তির কথা বলে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি বলেন, প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে অনেক খুশি হয়েছিলাম কিন্তু হলে উঠে দেখি ভিন্ন চিত্র; পূর্বের ন্যায় থাকতে হচ্ছে গণরুমে, করতে হচ্ছে গেস্টরুম, প্রোগ্রাম।

দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মতামত, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যত যাই বলুক না কেন হলগুলো চলবে ছাত্রলীগের কথায়। গণরুম, গেস্টরুম আছে থাকবে।
বিপরীতে হল খোলার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তে ঐক্যমত্য পোষণ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, গণরুম নয়; একটি পরিপূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় চায় ছাত্রলীগ। তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতির কারণে গণরুম তৈরি হয়নি বরং গণরুমের কারণে ছাত্ররাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কোনো রাজনৈতিক অপসংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দেয় না। আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যেটা মনে করি তা হচ্ছে তারা (গণরুমবাসী) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সুতরাং তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে মর্যাদার সাথে থাকবে, পরিপূর্ণ আবাসন ব্যবস্থা পাবে,সকল রকম সুযোগ সুবিধা পাবে, তাদের এসব অধিকার আদায় করিয়ে দেওয়াই হচ্ছে ছাত্র সংগঠন হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। তাই বিশ্ববিদ্যালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা সাংগঠনিকভাবে তাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন