শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

তুহিনের শিকলবন্দি জীবন

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

স্ত্রী চলে যাওয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পাঁচ বছর ধরে ঘরে শিকলবন্দি হয়ে আছেন জয়নাল হোসেন তুহিন নামের এক যুবক। তুহিন বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের আব্দুল জব্বারের ছেলে। স্থানীয় ও ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, ২০১৩ সালে নিজের পছন্দে বিয়ে করেন তুহিন। মা-বাবা, স্ত্রী নিয়ে আনন্দেই দিন কাটছিল তুহিনের। বিয়ের পর বরিশালের একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি হয় তার। ফলে বরিশালেই থাকতে হত তাকে। ২০১৭ সালের কোনো কারণ ছাড়া ডিভোর্স দিয়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে যায়। খবর পেয়ে তুহিন বাড়ি চলে আসেন। ঘরে ঢুকে দরজা-জানালা বন্ধ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকেন। পরে স্বজনরা দরজা ভেঙে অজ্ঞান অবস্থায় তুহিনকে উদ্ধার করেন। এরপর থেকেই তুহিন অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে। এসময় জিনে ধরেছে মনে করে বেশ কয়েকজন ওঝাঁর স্মরণাপন্ন হন তুহিনের বাবা-মা। তাদের পরামর্শে পুনরায় বিয়ে করান তাকে। তারপরও সুস্থ হয়নি তুহিন। ফলে দ্বিতীয় স্ত্রীও বাবার বাড়িতে থাকেন।
তুহিনের মা সুফিয়া বেগম জানান, টাকার অভাবে ছেলেটার কোনো চিকিৎসা করাতে পারছি না।
তাই বাধ্য হয়ে তাকে বেঁধে রাখতে হয়। ছাড়া পেলে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। সরকার এতো মানুষকে সহায়তা দেয় আমাদের চোখে পড়ে না।
এ বিষয়ে তুহিনের বাবা আবদুল জব্বার বলেন, আমার চার মেয়ে দুই ছেলে। মেয়েরা সবাই শ্বশুরবাড়ি থাকে। আর বড় ছেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা থাকে। আমার ছোট ছেলে তুহিন পাঁচ বছর ধরে পাগল। লোকজনের কাছ থেকে খাবার চেয়ে এনে জীবন চালাই। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তাই পাইনি।
বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মইনুদ্দিন ময়না জানান, আগে ভালো ছিল তুহিন। কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি করত। হঠাৎ স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যাওয়ায় ভীষণভাবে মানসিক আঘাত পায়। এরপর থেকে তার এ হাল হয়েছে। বরগুনা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়েই তার কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন