ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, পরস্পর সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও সাম্য-মৈত্রীর দৃঢ় বন্ধন সামাজিক, জাতীয় এবং বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র মাধ্যম। পৃথিবীর শুরুলগ্ন থেকেই একদল স্বার্থান্বেষি সাম্প্রদায়িক কট্টোর জনগোষ্ঠি ধর্মীয় স্পর্শকাতর অনুভুতিকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরোধের সৃষ্টি করে আসছে। দেশের মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের বৃহত্তর পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন ও মহসচিব অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ মোমতাজী দেশে চলমান ধর্মীয় সংকট নিয়ে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লার একটি মন্দিরে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন শরীফ রাখাকে কেন্দ্রকরে দেশের সর্বত্র অস্থিরতা বিরাজমান। যাতে শুধুমাত্র সাধারণ মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না বরং বর্হিবিশ্বে ব্যপকভাবে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এমন সময় শান্তির বার্তাবাহক বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হযরত মোহাম্মাদ (স.) এর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। ঐতিহাসিক মদিনা সনদ-এর মাধ্যমে রাসূল (স.) যেভাবে ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে সুশৃঙ্খল সমাজ ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রনীতির অদ্বিতীয় নজির স্থাপন করেছিলেন তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেন- দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেয়নি তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেননি। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন (সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ৮)। হজরত সুফিয়ান ইবনে সালিম (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) বলেছেন, জেনে রেখ! কোনো মুসলিম যদি অমুসলিম নাগরিকের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করে, তার কোনো অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করে, তার কোনো জিনিস বা সহায়-সম্পদ জোরপূর্বক কেড়ে নেয়, তবে কেয়ামতের দিন আল্লাহর বিচারের কাঠগড়ায় আমি তাদের বিপক্ষে অমুসলিমদের পক্ষে অবস্থান করব (আবু দাউদ)।
শ্রোতের অনুকূলে চলতে গিয়ে যেন বড় কোন ভুল না হয়ে যায়, নিজেরা যাতে গুনাহে নিমজ্জিত না হই সে ব্যাপারে সর্বদা শতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ দেশের সকল স্তরের মাদারাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থী, আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, খতিব ও ইমামগণকে নিজ নিজ অঙ্গনের সাধারণ মানুষকে অতিআবেগি হয়ে উগ্রতার দিকে ধাবিত হওয়ার কুফল ও ভবিষ্যৎ ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত করার অনুরোধ জানান। একই সাথে যে বা যারা ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট ও দেশকে অশান্ত করার জন্য এধরণের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে কিংবা এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকার ও প্রসাশনের প্রতি উদার্ত আহ্বান জানান। তদন্তকালে যাতে নিরপরাধ কেউ অপরাধির তালিকাভুক্ত না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে সুষ্ঠ তদন্তের জন্য অনুরোধ জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন