হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান লাগিয়ে কৃষক ফসল ঘরে তোলার আগেই শেষ সময়ে বিশেষ করে স্বর্ণা -৫, শম্পা কাটারি, ব্রি- ৩৪, আমন ধানে দেখা দিয়েছে কারেন্ট পোকা। ঝাকে ঝাকে পোকা নষ্ট করছে ক্ষেতের ধান। থোড় থেকে ধান বেরোতে পারছে না। লাল হয়ে মরে যাচ্ছে ধানের ক্ষেত। এমন অবস্থা বগুড়ার আদমদীঘি ও ধানের জেলা দিনাজপুরে। অগ্রাহয়নের নবান্নের উৎসব অমøান করে দিচ্ছে কারেন্ট পোকা। আমাদের সংবাদদাতারা পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন-
আদমদীঘি (বগুড়া) : চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রামের পশ্চিম মাঠে চাষিরা জানান, হঠাৎ করে জমিতে ক্যারেন্ট পোকা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিসের ব্লকসুপার ভাইজার মাঠ পরিদর্শনে করে বলেন সমান্য আকারে পোকা দেখা দিয়েছে ঔষধ প্রয়োগে পোকা দমন হবে। পরে জমির ধান দেখে প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারীর সাথে কথা বলেন, আবহাওয়ার কারণে একটু দেখা যায়। তবে গত দুদিনের বৃষ্টির ফলে কৃষকদের আর ক্ষতির সম্ভবনা নেই। এরপরও যেসব এলাকায় পোকা দেখা দিয়েছে সেসব এলাকায় কৃষি অফিস থেকে অফিসার পাঠিয়ে পোকা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বিরামপুর (দিনাজপুর) : আমন মৌসুমে আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষকের ঘরে উঠতো আমন ধান। অগ্রাহয়নের নবান্নের উৎসব অম্লান করে দিচ্ছে কারেন্ট পোকা। বিভিন্ন জাতের ধান বিশেষ করে গুটি স্বর্ণা,স্বর্ণা ৫,কাটারি- ৩৪, বিভিন্ন জাতের মোটা ধান উপজেলায় ব্যাপক ভাবে আবাদ করেছে কৃষককুল। আমন ধানের আবাদ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। গ্রামের কৃষককুল ধারদেনা করে সারা বৎসরের সঞ্চয়ী অর্থ আমন ধানে বিনিয়োগ করে পাচ্ছনা কাঙ্খিত ফল।
বিঘা প্রতি ধান রোপণ থেকে শুরু করে ধানের শীষ বের হওয়া পর্যন্ত প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধানে রোগবালাই না হলে বাম্পার ফলন কৃষক প্রতি বিঘায় ১৫-২০ ধান ঘরে তুলতে পারত। আগাম জাতের ধানের জমিতে পোকামাকড় জন্য বালাইনাশক ঔষধ নিয়মিত প্রয়োগ করেও ধানের জমি থেকে পোকা দমন করতে পারছেন না কৃষক। ধানের গোড়ায় ছোট বাদামী রঙের ফড়িং (কারেন্ট পোকা) দিনরাতের সাবাড় করছে কৃষকের ফসলের কৃষক। বিরামপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভুক্তভোগী কৃষকের কাছ থেকে জানা যায় কারেন্ট পোকা দমনের জন্য জমিতে কীটনাশক স্প্রে করে কাঙ্খিত ফল পাচ্ছেন না। কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উদ্যোগে কৃষকের মধ্যে কারেন্ট প্রকার প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কোনো কার্যকর হচ্ছে না। রকমারি নানা রঙ্গের কীটনাশকের ব্যান্ডে হাজার হাজার টাকা কীটনাশক কিনে জমিতে স্প্রে করে কৃষক ফল পাচ্ছে না।
কারেন্ট পোকার প্রাদুর্ভাব বাড়ায় আমন ধানের ক্ষেতে ধান লাল হয়ে শীষ বের হওয়া ধান মরে যাচ্ছে। বাম্পার ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আক্রান্ত জমিতে ধান লাল হয়ে মরে যাচ্ছে।শীষ বের হতে পারছেনা। এই উপজেলার প্রায় শত শত একর জমির আমন ক্ষেতে কারেন্ট প্রকার ধরছে। আমনের জমিতে ধানের শীষ বের হওয়ার পর এবং আগে ৩-৪ বার বালাইনাশক বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক প্রয়োগ করে কারেন্ট পোকা দমনে ব্যর্থ হয়েছেন শতশত কৃষক। বিঘা প্রতি যে জমিতে ১৮-২০ মণ ধান হওয়ার কথা সেই জমিতে কারেন্ট প্রকার আক্রমণে অর্ধেক ধান কৃষকের ঘরে উঠবে না বলেও দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নিক্সন চন্দ্র পাল জানান, দিনে অতিরিক্ত গরম,রাতে কুয়াশা পড়ায় জমিতে কারেন্ট প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। কারেন্ট প্রকার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষার জন্য কৃষককে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান বিরামপুর উপজেলায় (প্রায় )১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন বিভিন্ন জাত বিশেষ করে স্বর্ণা ৫ কাটারি ধান ও মোটা জাতের ধানের আবাদ হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন