মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কুমিল্লার মূল অভিযুক্তকে শিগগির গ্রেফতার করা হবে

র‌্যাবের অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:১২ এএম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, উসকানি দিচ্ছেন, তাদের খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে। তাদের জবাব দিতেই হবে। কুমিল্লার মূল অভিযুক্ত পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাকেও শিগগির গ্রেফতার করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার ‘র‌্যাবের প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন’ শীর্ষক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন ও ক্যাম্প পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ও সার্বিক ব্যবহার বিস্তৃত করার লক্ষ্যে গতকাল র‌্যাব সদর দফতরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। র‌্যাব ডিজি অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এনটিএমসির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার পূজা মণ্ডপে যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তাকে আমরা শনাক্ত করেছি। সে বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাকে আমরা ধরে ফেলতে পারব। কুমিল্লায় কেন সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা জানতে পারব। আজ পর্যন্ত কোনো পূজা মণ্ডপে কোনো কিছু ঘটেনি। কিন্তু এবার দেখছি অপ্রীতিকর কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে কিছু উগ্র মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। সেখানে পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। সেখানে ৪ জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার আরেকজন মেডিকেলে মারা গেছেন।

তিনি আরো বলেন, কেন এই হত্যাকাণ্ড, কেন এই মৃত্যু; কার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য এই মৃত্যু? আমরা দেখলাম পরিতোষ নামে এক অল্প বয়সী ছেলে ফেইসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দিয়েছে। সেটা কেন্দ্র করে সহিংসতা। আমাদের পুলিশ বাহিনী তার বাড়ি ঘর রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে তার পাশের গ্রামে অগ্নি সংযোগ লুটপাট ভাঙচুর হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। অতীতেও ফেইসবুকে মিথ্যে প্রচারের মাধ্যমে রামু, নাসিরনগর ও ভোলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১৬ মে রাজধানীর পল্লবীতে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দুই যুবক একজনকে চাপাতি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করছে। সেই ঘটনা দেখে সবার হৃদয় কেঁপে উঠেছে। সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ক্লিপ আকারে প্রচার করে। একটি মহল নোয়াখালীর যতন সাহাকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে মর্মে অপপ্রচার করছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, ন্যক্কারজনক ও অমানবিকও বটে। যারা এই ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন, তাদের হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। তাদের অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করবে। জবাব দিতে হবে তাদের, কেন তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট করছে।

তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যখনই এসব ঘটনা আপনারা (গণমাধ্যম কর্মী) ফেসবুকে দেখেন, তার সত্যতা যাচাই করবেন। উত্তেজনা সংবরণ করবেন। শুধু শুধু উস্কানিতে অন্যায় কাণ্ড ঘটিয়ে বসবেন না। ইতোমধ্যে রংপুরে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে র‌্যাবের ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, তথ্য দিতে সেই ভয় পায় যে অপরাধী। সাধারণ মানুষ কখনো তথ্য দিতে ভয় পায় না। অপরাধীরা যদি তথ্য দেয় তাহলে হয়তো ধরা পড়ে যাবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে আটকে যাবে। সেজন্য তথ্য দিতে ভয় পায়। আমরা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বিস্তৃত করার উদ্যোগ নিয়েছি। এখন সার্চ দিলেই কোনো অপরাধ সম্পর্কে ও অপরাধী বা আসামি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য মিলবে। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তার সুফল এখন দেশের মানুষ ভোগ করছে। র‌্যাব এর উৎকর্ষতা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপরাধ দমন একটি কষ্টসাধ্য বিষয়। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে অপরাধীরা প্রতিনিয়ত অপরাধের ধরন ও মাধ্যম পরিবর্তন করছে। ফলে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বর্তমান প্রেক্ষাপটের সঙ্গে তাল মেলাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও তদন্তকারী সংস্থা হিমশিম খাচ্ছে।

এনটিএমসি পরিচালক বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই বেশি সতর্ক ও অভিজ্ঞ হতে হবে। এজন্য প্রয়োজন পর‌্যাপ্ত তথ্য-ভাণ্ডার সমৃদ্ধ ইন্টিগ্রিটেড ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম এবং এটি পরিচালনার জন্য প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি। এ প্রযুক্তিগত উন্নতি যদি আমরা না ব্যবহার করতে পারি, তাহলে ক্রাইম আরও বাড়বে। ক্রাইম কন্ট্রোলের জন্য বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিগত শক্তি বাড়ানো প্রয়োজন। আমরা যে ইন্টিগ্রিটিড সল্যুশনস কাঠামো তৈরি করেছি, এর মাধ্যমে সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য সরবরাহ করা যাবে। এনটিএমসি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থাকে সব সময় তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে থাকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ২০ অক্টোবর, ২০২১, ১১:০৪ পিএম says : 0
দৈনিক গ্রেপ্তার করতেছে স্থান পরিবর্তন করতেছে সব কিছু উনি জানেন কয় দিন হয়েছে এখনও কি স্থান পরিবর্তন করতেছেন ,মনে নয় জিন পরি হবে ,অন্যথায় ধরা যাচ্চে না কি জন্য,নয়তো বা ভূত পেত্নি হবে,...
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন