বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটার জাতীয় মহাসড়কের লেবুখালীতে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দীর্ঘ প্রতিক্ষিত ‘পায়রা সেতু’ আগামী রোববার প্রধনমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও এসড়কে মানসম্মত ও যাত্রী বান্ধব যনবাহন কবে চলবে তা এখনো সবার কাছেই অজ্ঞাত। বরিশাল থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দুরে পটুয়াখালী জেলা সদর এবং ১০৮ কিলেমিটার দুরে কুয়াকাটায় পৌছতে এখনো যথাক্রমে আড়াই থেকে ৩ ঘন্টা ও সাড়ে ৪ থেকে ৬ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগছে। মূলত বাস মালিক ও শ্রমিকরা এ লাগামহীন বিলম্বের জন্য লেবুখালীতে ফেরি পারপারের বিড়ম্বনাকে দায়ী করে আসছিলেন এতদিন। এমনকি রাষ্ট্রীয় সরড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি পর্যন্ত বরিশলÑকুয়াকাটা রুটে মান সম্মত বাতনুকুল বাস সার্ভিস সম্প্রসারনে কোন উদ্যোগ নেয়নি এখনো।
কিন্তু যাত্রীদের পক্ষ থেকে এসব রুটের গনপরিবহনের বাসগুলো মোটেই যাত্রী বান্ধব নয় বলে অভিযোগের পাশাপাশি সরাসরি না চালানোর পরিবর্তে তা অনেকটাই লোকাল বাসের মত মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে পথে পথে বিলম্ব করে চলে বলেও অভিযোগ সাধারন যাত্রীদের। বরিশালÑপটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতি দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ রুটের গন পরিবহনকে নিয়ন্ত্রন করে আসছে।
অথচ সারা দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক সড়ক ও নৌপথে বরিশালে পৌছে এখান থেকে বরিশালÑপটুয়াখালী মহাসড়ক ধরেই কুয়াকাটায় যাতায়াত করে থাকেন। এতদিন লেবুখালীতে ফেরির বিড়ম্বনা আগামী রোববার সকাল ১১টার পরে আর থাকছে না। কিন্তু এরপরেও কি পটুয়াখালী ও কুয়াকাটাগামী গনপরিবহনে দ্রত না হোক সময়মত পটুয়াখালী ও কুয়াকাটা সহ ঐ মহাসড়কের গন্তব্যে পৌছান যাবে কিনা, সে প্রশ্ন দক্ষিণাঞ্চলবাসীর। আগামী রোববার সকাল ১০টায় গনভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেবুখালীতে পায়রা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
তবে এব্যাপারে বরিশালÑপটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিকদের একাধীক নেতৃবৃন্দ নানা বানিজ্যিক সমস্যার কথা তুলে ধরে যত দ্রুত সম্ভব যাত্রীদের গন্তব্যে পৌছান সহ যাত্রী বান্ধব বাস চালানোর কথা বলেছেন। পাশাপাশি পায়রা সেতুতে বর্তমানে ফেরি ভাড়ার তিন থেকে পাঁচগুন টোল নির্ধারন করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কোন কোন বাস মালিক বর্ধিত এ টোল প্রদান সম্ভব নয় বলে দাবী করে প্রয়োজনে ফেরি সার্ভিস চালু রাখারও দাবী জানিয়েছেন। নচেত বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১০৮ কিলোমিটার মহাসড়কে ৬টি সেতুর টোল পরিশোধ করে চলতে হলে যাত্রী ভাড়া দ্বিগুন বৃদ্ধি করতে হবে বলেও জানান বাস মালিকগন। তাদের মতে পায়রা সেতুতে টোল হার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। যা যমুনা সেতুর পরের অবস্থানে নির্ধারন করা হয়েছে।
এদিকে সারা দেশের সাথে পটুয়াখালী ও কুয়াকাটার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নির্বিঘœ হতে চললেও বিআরটিসি’র পক্ষ থেকে এ রুটে যাত্রী পরিবহন আরমাদায়ক ও সম্প্রসারনের কোন পদক্ষেপ নেই। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারীতে ১টি ‘পর্যটক স্পেশাল বাস সার্ভিস’ চালু করে। অতি সম্প্রতি সকাল ৮টায় ১টি বাতনুকল বাস বরিশাল থেকে চালু করা হলেও তা সকাল ৭টায় চালানোর দাবী পর্যটক সহ সাধারন যাত্রীদের। পাশাপাশি বরিশাল থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এবং দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাতানকুল বাস সার্ভিস চালু করার দাবীও সাধারন যাত্রীদের।
এ ব্যাপারে বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোর ব্যবস্থাপকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, সদর দপ্তরে আরো ৪টি এসি বাস-এর চাহিদা দেয়া হয়েছে। এসব বাসের বরাদ্ব পেলেই কুয়াকাটায় সার্ভিস সম্প্রসারন করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন