শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভোটে নেই দল: জোটের প্রার্থীরা লড়বেন ভিন্ন প্রতীকে

ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০২১, ৬:০৬ পিএম

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৫৪জন চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের মনোনয়ন দাখিল করেছেন। সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য ১০৮ ও সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩৮৪জন। ১০টি ইউনিয়নে সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীরা (নৌকা) পেয়ে

মাঠে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া অন্যান্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামীলীগের একাধিক বিদ্রোহী। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এখানে দলীয় ভাবে
বিএনপি-জামায়াত অংশ না নিলেও একাধিক প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তারা ভিন্ন প্রতীকে এ নির্বাচনে লড়বেন।

জানা যায়, ছাতক উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের মধ্যে প্রথম ধাপে নোয়ারাই ও সিংচাপইড় ইউনিয়নে ভোগ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করে মারা যাওয়ায় ভাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত হয়েছিল। ওই ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ আগামী ২ নভেম্বর। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন মাস্টার (নৌকা) প্রতীকে লড়ছেন। তার সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন জামায়াত নেতা উবায়দুল হক শাহীন (টেলিফোন)সহ অন্য প্রার্থীরা।
তফসিল ঘোষণা অনুযায়ী অবশিষ্ট ১০টি ইউনিয়নের দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সে হিসেবে গত ১৭ অক্টোবর শেষ হয়েছে মনোনয়নপত্র দাখিল। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৭ অক্টোবর।

অবশ্যই এর আগে আওয়ামীলীগের দলীয় সমর্থীত নৌকা পেয়ে উচ্ছ্বাসিত ছাতক সদর ইউনিয়নের নতূন মূখ রঞ্জন দাস, ইসলামপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হেকিম, কালারুকা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অদুদ আলম, খুরমা উত্তর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ, খুরমা দক্ষিণ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মছব্বির, জাউয়াবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, চরমহল্লা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কদর মিয়া, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুন্দর আলী, ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ ও দোলারবাজার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সায়েস্তা মিয়া।
এছাড়াও আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীক নৌকা না পেয়ে অসংখ্য বিদ্রোহি প্রার্থী মাঠে আছেন। তারা
লড়বেন স্বতন্ত্র হয়ে। এখানের চরমহল্লা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হাসনাতও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ও ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি। ওই ইউনিয়নে খেলাফত মজলিস নেতা কামরুল ইসলামও স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি সিলেট বিমানবন্দর থানার খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক। ইসলামপুর ইউনিয়নে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট সূফি আলম সুহেল। তিনি ছিলেন ছাতক পৌর জামায়াতের সাবেক আমীর। ওই ইউনিয়নে সুনামগঞ্জ জেলা খেলাফত মজলিসের সহ-সভাপতি মাওলানা আকিক হোসাইনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এছাড়া ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের নতূনমূখ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী নানু মিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন জমা। তিনি কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে সারাসরি সম্পৃক্ততা না থাকলেও তার পরিবার বিএনপির বলে জানা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি, জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের
সমর্থীত একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি জোট থেকে খেলাফত
মজলিস বেরিয়ে এসেছে। কালারুকা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অদুদ আলম নৌকা পেয়ে তিনি
মাঠে কাজ করছেন। এক সময় তিনি সাবেক সাংসদ মিলনের সাথে বিএনপির রাজনৈতি করেছিলেন।
পরবর্তীতে তিনি ছাতক পৌর মেয়রের গ্রুপে আওয়ামীলীগ করলেও ক’বছর ধরে আছেন সাংসদ মানিকের গ্রুপে। স্থানীয়রা মনে করছেন এবার ইসলামপুর, চরমহল্লা ও ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নে জমে উঠবে ভোট।

এদিকে, দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯টি ইউনিয়নেও চেয়ারম্যান পদে ৪৯জন, সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য ১০৮ ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৬২জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীক (নৌকা) পেয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৯জন। আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীকে প্রার্থীরা হলেন, দোয়ারা সদর ইউনিয়নে আবদুল হামিদ, দোহালিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আনোয়ার মিয়া
আনু, বাংলাবাজার ইউনিয়নে মানিক মিয়া, পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহিদ, নরসিংপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ, মান্নারগাঁও ইউনিয়নে অসিত কুমার দাশ, সুরমা ইউনিয়নে এমএ হালিম বীর প্রতীক, লক্ষীপুর ইউনিয়নে আবদুল কাদির ও বোগলাবাজার ইউনিয়নে মোহাম্মদ মিলন খাঁন। এখানে দোয়ারা সদর, পান্ডারগাঁও ও বোগলাবাজার ইউনিয়নের প্রার্থীরা গেলো ভোটেও আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীক নৌকা পেয়ে পরাজয় বরণ করেছিলেন। এবারও তারা
দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে লড়ছেন।

জানা গেছে, দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শামছুল হক নমু নরসিংপুর ইউনিয়ন নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল বারী ও যুবদল নেতা মামুন মিয়া সদর ইউনিয়নে জমা দিয়েছেন মনোনয়ন। দোয়ারাবাজার উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ সুরমা ইউনিয়নে মনোনয়ন দিয়েছেন। বোগলাবাজার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা আরিফুল ইসলাম জুয়েল, মান্নারগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবু হেনা আজিজ, পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, জেলা বিএনপি নেতা ফারুক আহমদ মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এ ইউনিয়নে দোয়ারাবাজার উপজেলা খেলাফত মজলিসের সহ-সভাপতি মাওলানা ময়নুল ইসলাম প্রার্থী হয়েছেন। দলীয় প্রতীক না পেলেও যারা স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের নিজ নিজ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সাথে ভোটের লড়াই হবে বলে দোয়ারাবাসী মনে করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন