‘ভবঘুরে’ সেই ইকবালকে কক্সবাজার থেকে কুমিল্লায় আনা হয়েছে। পুলিশ বলেছে সে ভবঘুরে। এছাড়াও খবরে প্রকাশ সে নাকি মাদকাসক্ত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ইকবাল পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার দায় স্বীকার করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচার করা ফুটেজ ও তথ্য মতে এই ইকবাল হোসেন গভীর রাতে কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন পূজামণ্ডপে রেখেছিল। কুমিল্লায় মন্দিরের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার সাথে জড়িত সন্দেহে কক্সবাজারে আটক সেই ইকবাল হোসেনকে কুমিল্লায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার থেকে কুমিল্লায় আনার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার নানুয়াদিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখার কথা স্বীকার করেছেন ইকবাল হোসেন। গতকাল শুক্রবার কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে জিজ্ঞাসাবাদের সময় এ কথা স্বীকার করেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গ্রেফতারের পর থেকেই ইকবাল অসংলগ্ন আচরণ করছে। তবে মণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার পর হনুমানের মূর্তি থেকে গদা সরিয়ে নেওয়ার কথাও পুলিশকে জানিয়েছেন ইকবাল। তবে কার নির্দেশে এই কাজ করেছেন, তা এখনও জানাননি।
জানা গেছে, কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নেওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট। এর আগে, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ইকবালকে বহন করা পুলিশের গাড়ি কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে পৌঁছায়। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় কুমিল্লায়। এরপর সাড়ে ১২টা তাকে পুলিশ লাইন্সে হেলমেট ও বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরা অবস্থায় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত করা হয়। কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর হোসেন বলেন, কালো গ্লাসের একটি গাড়িতে করে কঠোর নিরাপত্তায় ইকবালকে কুমিল্লায় আনা হয়। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাকে।
ইনকিলাবের কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, কক্সবাজারের এসপি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার ভোরে অভিযুক্ত ইকবালকে নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশের একটি টিম। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৩ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সহায়তায় ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ইকবাল হোসেনকে সৈকত এলাকায় ঘোরাফেরা করার সময় জেলা পুলিশের একটি দল আটক করে। পরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অতপর কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি টিম কক্সবাজারে পৌঁছলে আটক ইকবালকে কুমিল্লা জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
কুমিল্লার এই পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনা দেশ-বিদেশে তোলপাড় চলছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুইজন নিহত হন। চাঁদপুরে প্রতিবাদ মিছিলে হামলায় ৭ জন নিহত হয়। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে মাঝিপাড়া নামক হিন্দু পল্লীতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় প্রায় দুই শতাধিক মামলা এবং ৬শ’ থেকে ৭শ’ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়ার দিঘিরপাড় পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা নিয়ে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় ৯ মামলায় ৭৯১ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৫টি, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২টি এবং দাউদকান্দি ও দেবীদ্বার থানায় একটি করে মামলা হয়েছে। ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলায় ৭০০ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি ইকবালকে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন জানান, কক্সবাজার থেকে কুমিল্লায় আনার পর স্থানীয় সাংবাদিকদের অনুরোধে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শুধু ফটো ও ভিডিও ধারনের জন্য গ্রেফতারকৃত ইকবালকে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। এ সময় তার মাথায় হেলমেট ও শরীরে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ছিল।
এ সময় কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইকবালকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে এটা কখন করা হবে সময় নির্ধারণ হয়নি। তবে কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ইকবালকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে যে ইকবালকে শনাক্ত করেছিলাম এটা সেই ইকবাল। গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নগরীর নানুয়া দীঘিরপাড় এলাকার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছিল এই ইকবাল। সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়ে ইকবালই পাশের দারোগাবাড়ি মসজিদ থেকে কোরআন শরীফ নিয়ে গভীররাতে মণ্ডপে রাখেন।
পূজামণ্ডপের ওই ঘটনায় কুমিল্লা নগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘাত-সংঘর্ষ হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব ঘটনা সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন।
যেভাবে ধরা পড়ল : কাক্সবাজারে ইকবালকে গ্রেফতারের ঘটনা জানাতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী অনিক জানান, ১৯ অক্টোবর সোমবার রাতে বন্ধু মেহেদি হাসান মিশু ও ঢাকার তিন ব্যবসায়ী বন্ধু রায়হান, মামুন ও হৃদয়সহ ৫ জন কক্সবাজারে বেড়াতে যান। ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে থাকা আরেক বন্ধু সাইফুল ইসলাম সাইফ তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তিনি বলেন, আমরা বিকেলে দরিয়ানগরে ঘুরতে বের হই। সেখানে ৬ বন্ধু মিলে সময় কাটাতে গান গাওয়ার সময় ইকবালও পাশে এসে গানে সুর মেলায়। এরপর ওই রাতে টেলিভিশনে এবং ফেসবুকে ছবি দেখে ইকবালের বিষয়ে নিশ্চিত হই। এস এ কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র এবং ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদী হাসান মিশু জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তারা সুগন্ধা পয়েন্টে গেলে ইকবালের সঙ্গে তাদের আবার দেখা হয়। তিনি বলেন, আমরা তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলি। একপর্যায়ে সে পালিয়ে যেতে চাইলে তাকে নাশতা ও সিগারেট খাইয়ে কৌশলে আটকে রাখি। এ সময় তার নাম জানতে চাইলে সে ইকবাল বলে জানায়। তখন আমরা কৌশলে তার ছবি তুলে নোয়াখালীর এএসপির সঙ্গে যোগাযোগ করি ও ছবি পাঠাই। তিনি আমাদের কুমিল্লার পুলিশ সুপারের মোবাইল নম্বর দেন। এরপর কুমিল্লার পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছবি পাঠাই। তিনি কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরবর্তী সময়ে রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ এসে ইকবালকে আটক করে নিয়ে যায়।
এর আগে, কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় ১৬ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমের কাছে আসে। সেখানে দেখা যায়, অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন মসজিদ থেকে কীভাবে কোরআন নিয়ে বের হয়ে পূজামণ্ডপের দিকে যান এবং মণ্ডপ থেকে হনুমানের গদা ঘাড়ে নিয়ে ফেরেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেন : কক্সবাজারে গ্রেফতার হওয়া ইকবালকে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, কক্সবাজারে যাকে গ্রেফতার করা হয় সেই কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে আসা ইকবাল। গ্রেফতারের কাজটি পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে। ঘটনার পেছনে কেউ রয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরাও এমন বেশকিছু প্রশ্ন নিয়ে কাজ করছেন।
রানা দাশগুপ্ত : কক্সবাজারে শনাক্ত হওয়া আসামি গ্রেফতারের পর বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেছেন, ইকবাল হোসেন নামে যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার নামের আগে ‘ঘরঘুরে’ শব্দজুড়ে দেয়া হয়েছে। কখনো কখনো এমন যাদের ধরা হয়, কখনো বলে পাগল, না হলে বলে ভবঘুরে। এই ভবঘুরে কীভাবে পবিত্র কোরআন শরীফ চিনল? এটি কোনো ভবঘুরের কাজ হতে পারে না। এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। চক্রান্তকারীরা পেছনে আছে। এদের বের করা রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্য দৃষ্টান্ত বলে আমরা পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। কিন্তু নিকট অতীতের এই ঘটনা আমাদের আত্মপরিচয়কে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে আমরা কি এমন দেশ চেয়েছিলাম? এমন দেশের জন্যই কি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল? একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তেই বাংলাদেশের জন্ম। অথচ ৫০ বছর পরেও একটি সম্প্রদায়ের মানুষ চরম নিরাপত্তহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। তাই অবিলম্বে ইকবালের পেছনে কারা, তাদের খুঁজে বের জরুরি। আর দেশজুড়ে হামলা ছড়িয়ে দেয়ার নেপথ্যের পরিকল্পনাকারী কারা তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা দরকার। না হলে বরাবরের মতোই বিচারহীনতার জটে আটকা পড়ে যাবে ঘটনার মূল হোতারাও।
বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন রহস্য : কুমিল্লা নানুয়া দীঘিপাড়ের মণ্ডপে ওই দিন কী কারণে কিছু সময়ের জন্য মণ্ডপ এলাকা বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সে বিষয়গুলো তদন্তের আওতায় আনা হলো কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। সংগঠনটি বলেছে, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হনুমান মূর্তির কোলের ওপর রাখা পবিত্র কোরআন শরীফটি সরিয়ে নেওয়ার পর কেন ভিডিও করার সুযোগ দিলেন এবং কেন সে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তা সবার কাছে বিরাট প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।
গতকাল রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এই সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, দুর্গাপূজার আগে ৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ৪ অক্টোবর ডিএমপি কমিশনার ও ৬ অক্টোবর পুলিশের মহাপরিদর্শকের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়। প্রতিটি সভায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকে স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে মতামত দিয়েছেন প্রতিটি সভায় নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এমন ঘটল। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক দোষারোপের কারণে প্রকৃত দোষীরা পার পেয়ে যাচ্ছে যা দেশের আইনশৃঙ্খলা ও পারস্পরিক আস্থার জন্য সুখকর নয়।
নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ৪৭ নাগরিকের প্রশ্ন : দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, মণ্ডপ, বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা ছিল উল্লেখ করে এর কারণ খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন ৪৭ নাগরিক। এসব হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছেন তারা। বিবৃতিতে হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পূজামণ্ডপ ও বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা মনে করি যারা এসব ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত, তারা দেশের সব নাগরিকের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠারবিরোধী এবং পক্ষান্তরে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। তাই অবিলম্বে এইসব দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আমরা সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।
এতে বলা হয়, কুমিল্লায় সংঘটিত ঘটনার পর প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরো সতর্ক, সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত ছিল। কিন্তু ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আরো সাম্প্রদায়িক হামলা আমরা দেখলাম, যার দায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই নিষ্ক্রিয়তার কারণ কী তা খুঁজে বের করতে হবে। তারা বলেন, অন্যদিকে কিছু জায়গায় জড়ো হওয়া জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিবর্ষণের যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে শক্তিপ্রয়োগ পরিমিত ও আইনানুগ ছিল কি-না তদন্ত করে দেখতে হবে।
বিবৃতিদাতারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি আব্দুল মতিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মানবাধিকারকর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমদ, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক করিম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, সভাপতি সালমা আলী, আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন