শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

উৎপাদন বন্ধ ছয় বছর

সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানা

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৬ এএম

বাংলাদেশের সর্ববৃহত নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখান। দেশের একমাত্র সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে মূল্যবান মেশিনপত্র খোলা আকাশের নিচে অযত্নে পড়ে আছে। বিশাল ইয়ার্ডজুড়ে হাজার কোটি টাকার লোহার মালামাল মাটিতে মিশে যাচ্ছে।
ওই কারখানার ৩টি উপ-কারখানার মধ্যে প্ল­াটফ্রম শেড বা নকশা ঘরটি তালাবদ্ধ। ভেতরে আর্বজনার স্তূপ। পাশে মেশিন শেডটির চিত্র একই। পুরো ইয়ার্ডজুড়ে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জঙ্গলি গাছ। পরিছন্নতার অভাবে খোলা আকাশের নিচে মাটির ওপরে এঙ্গেল রড, স্কয়ার রড, কভার প্লেট, মিটার ও ব্রডগেজ লাইনের সেতুর স্পেয়ার গাডার, তিস্তা ও পাকশি হার্ডিঞ্জ সেতুর পরিত্যাক্ত লোহা-লক্কর, রেললাইন, একটি বিকল স্টিম ক্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের লোহার মালামাল বিক্ষিপ্তভাবে রাখায় এর ভেতর দিয়ে বেরিয়েছে জঙ্গলী গাছ। এভাবে পুরো ইয়ার্ডজুড়ে মাটির নিচে চাপা পরেছে ফ্রাঞ্চ প্লেট ও কভার প্লেট। যার আনুমানিক বাজার মুল্য সাড়ে ৮ শত কোটি টাকা।
জানা যায়, ১৮৫৭ সালে দেশের সর্ববৃহত রেলওয়ে কারখান গড়ে ওঠে সৈয়দপুরে। ১৮৬৫ সালে তৎকালীন বৃটিশ সরকার সৈয়দপুর রেল কারখানার পাশে ১৮ একর জমিতে নির্মাণ করেন সেতু কারখানা। শুরুতে এ কারখানার কর্মকাণ্ড পরিচালনায় মেশিন সপ, পয়েন্টস এ্যান্ড ক্রোসিং সপ ও গাডার ইয়ার্ড সপ নামে তিনটি উপ-কারখানায় প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করত। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সকল স্টেশনের প্লাটফ্রম সেডের মালামাল, রেললাইনের পয়েন্ট এ্যান্ট ক্রোসিং, ব্রিজ গার্ডার, ট্রলিও মোটরট্রলি মেরামত এবং তৈরি, মোরগার্ডার, পানির ট্যাংকি, ফুটওভার ব্রিজের মালামাল, ট্যাং স্টেজিংসহ ২৫ ধরনের মালামাল তৈরি হত এ কারখানায়। থাকত সর্বদা কর্মচাঞ্চল্য।
১৯৯১ সালে সরকার বাধ্যতামূলক গোল্ডেন হ্যান্ডশেক ও নিয়মিত অবসরের কারণে ১২৭ জন মঞ্জুরিকৃত পদের বিপরিতে মাত্র ৬ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে ২জন অবসরে যাবেন। বাকি ১জন প্রেষণে পাকশিতে, ১জন সহকারী সেতু প্রকৌশলী তিনিও অফিসে অনিয়মিত। ১জন স্টোর কিপার ও ১ কর্মচারী ফাইলপত্র টানাটানি নিয়েই চলছে এ কারখানার কর্মকান্ড।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী সেতু প্রকৌশলী জুয়েল মিঞা জানান, দক্ষ জনবল সঙ্কট, কাঁচা মালের অভাবে ৬ বছর ধরে এ সেতু কারখানায় উৎপাদন বন্ধ আছে। পাশাপাশি নষ্ট মেশিনপত্র এ দেশে মেরামত সম্ভব নয় ভেবে প্রায় এ সকল মেশিন ক্রয়ে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। তাই উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে দেশের একমাত্র সেতু কারখানার এ অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন