শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

কাঁটাতার পেরিয়ে মাঠের উত্তাপ

পাক-ভারত মহারণ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম

ক্রিকেট দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ম্যাচ কোনটি? আপনি হয়তো বলতে পারেন অ্যাশেজ, কোন বিশ্বকাপের ফাইনাল কিংবা আরো বড় কোন কিছু। কেউ কেউ ব্রাজিল আর্জেন্টিনার ফুটবল লড়াইয়ের কথাও বলবেন। তবে একজন সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে সবচেয়ে আকাঙ্খিত ম্যাচের সংজ্ঞাটা একটু ভিন্ন। যেই ম্যাচের উত্তাপ ক্রিকেট মাঠ থেকে ছড়িয়ে পড়ে গোটা দুনিয়া থেকে শুরু করে রাজনীতির টেবিলে, শহরের অলিগলিতে কিংবা বারুদ ঠাঁসা সীমান্তে। যেই ম্যাচের উত্তাপ টের পান নূন্যতম ক্রিকেট বোঝা এক দর্শকও।

অনেক প্রতিক্ষার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দামামা ইতোমধ্যেই বেজে গেছে। বাছাইপর্বের খেলা শেষে গতকাল মূলপর্বের প্রথম দিনের খেলায় মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গ্রুপপর্বে দর্শকরা দেখতে পারবে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের ম্যাচও। এছাড়া এবারের আসরের ডার্ক হর্স আফগানিস্তানকেও খেলতে দেখা যাবে ভারতের সাথে। অনেকে আবার তাকিয়ে থাকবেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচগুলোর দিকে। তবে এই সবকিছু ছাপিয়ে দর্শকরা অপেক্ষার প্রহর গুণছেন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচটির জন্য।

প্রতিক্ষিত এই ম্যাচটিকে নিয়ে এখনই মাঠ ও মাঠের বাইরে শুরু হয়েছে নানারকম আলোচনা। ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ কিংবা রাজনীতিবিদরাও যুক্ত হয়েছেন এই আলোচনায়। সবমিলিয়ে ক্রিকেটে এই দুই দলের তুমুল লড়াই, দুই দেশের রাজনৈতিক সংকটসহ সবমিলিয়ে ম্যাচটা যেনো আর দশটা ম্যাচের মত নয়।

এই ম্যাচ এত বেশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে আরেকটি কারণে। ২০১৩ সালের পর থেকেই কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলছেনা এই দুই দেশ। ক্রিকেট বাদে অন্য খেলাগুলোতে কিন্তু ঠিকই একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। এমনকি ভারত ও পাকিস্তান সফরেও যাচ্ছেন নানা ডিসিপ্লিনের খেলোয়াড়রা। তবে ক্রিকেটের বেলাতেই যেনো সব আপত্তি। ফলে বিশ্ব আসর ছাড়া এই দুই দেশের ক্রিকেট ম্যাচ দেখা এখন প্রায় অসম্ভব। ফলে আজ দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তানের এই ম্যাচ নিয়ে নানা রকম পরিকল্পনা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

আজ বিকালে বাংলাদেশও মূলপর্বের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও রাতের ম্যাচ নিয়ে সমান আগ্রহী। ফলে ক্যালেন্ডারে বুকমার্ক করে ২৪ তারিখের কাজ গুলো সেরে রাখছেন আগেভাগেই। কেউবা পরিকল্পনা করছেন ছুটি নেয়ার। দিনটা যে শুধুই ক্রিকেটপ্রেমীদের।

তবে বিশ্বকাপে দুই দলের মুখোমুখি হওয়া নিয়েও গরম হয়েছে রাজনীতির বৈঠক। ভারতের অনেক নেতারা এই ম্যাচ বাতিল করার দাবিও তুলেছিলেন। তবে সেসবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিল্লি কিংবা করাচি শহর হয়তো ঘন্টা চারেকের জন্য থমকে যাবে এই ম্যাচকে ঘিরে। কিংবা কাশ্মীর সীমান্তে হয়তো মোতায়েন করা হবে দ্বিগুন সৈন্য। উপমহাদেশের প্রতিটা বাড়িতে উৎসব হবে বিরাট কোহলির কাভার ড্রাইভে কিংবা শাহীন আফ্রিদির কোন বাউন্সারে। গলির মোরে প্রজেক্টর বসবে কিংবা চায়ের দোকানের ছোট টিভিতে আঁটকে থেকে অগণিত জোড়া চোখ। কেননা আজ মাঠে নামছে ভারত-পাকিস্তান।

এই দুই দেশ গত পাঁচ বছরে মাত্র দুইবার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। দুটিই অবশ্য ছিল ওয়ানডে ম্যাচ। একটি ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল যেখানে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। এরপর দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৯ বিশ্বকাপে। সেখানে অবশ্য আবার জয় তুলে নিয়েছিল ভারত।

ফলে এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই দলের ম্যাচ নিয়ে উত্তাপ যেনো অনেক বেশিই। যদিও ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেছেন এই ম্যাচটাকে আর সব ম্যাচের মত করেই দেখতে। তবে সেটা কী আদো সম্ভব? যেই ম্যাচ নিয়ে এত প্রতীক্ষা, যেই ম্যাচ ছড়িয়ে পড়ে সীমান্তের কাঁটাতারে, যেই ম্যাচ বদলে দেয় দুটি দেশের রাজনীতি তাকে কী এত সহজেই শুধু একটি ম্যচ বলে ঘোষণা দেয়া যায়?

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন