মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইলিশ কমছে নদীর গতিপথ পরিবর্তনে

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা

রাকিবুল হাসান, বাকৃবি থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ। ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) সংক্ষেপে জিআই পণ্য হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি ইলিশ। জিআই পণ্যেও স্বীকৃতির পাশাপাশি ইলিশ উৎপাদনেও বাংলাদেশ পৃথিবীতে প্রথম। কিন্তু এ উৎপাদন ধরে রাখায় এখন চ্যালেঞ্জ বলে আশঙ্কা করেছেন গবেষকরা। নদীর গতিপথ পরিবর্তনে ইলিশের মোট উৎপাদন অনেকাংশে কমেছে। বছরে বছরে যে হারে উৎপাদন বাড়ার কথা ছিল তা হয়নি।

গত ৫০ বছরের পদ্মা নদীর গতি পরিবর্তন থেকে শুরু করে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ‘আমেরিকান জার্নাল অব ক্লাইমেট চেঞ্জ’ জার্নালের সর্বশেষ সংখ্যায় ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড অ্যানথ্রোপজেনিক ইন্টারফিয়ারেন্স ফর দ্য মরফোলজিক্যাল চেঞ্জেস অব দ্য পদ্মা রিভার ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ৬ জন গবেষক যৌথভাবে এটি পরিচালনা করেন।

গবেষণাটির প্রধান গবেষক হিসাবে ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম, সহযোগী গবেষক হিসাবে ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাইজার আহমেদ সুমন, ময়নসসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ, চাঁদপুরস্থ মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিউটের ইলিশ জোরদারকরণ প্রকল্পের প্রধান মো. আবুল বাশার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মিলন ও বাকৃবির স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সিরাজুম মুনীর।

গবেষকরা ২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত ইলিশ উৎপাদনের অভয়াশ্রম পদ্মা নদীর বৈশিষ্ট পর্যবেক্ষণ করেন। দীর্ঘ ৩ বছরের গবেষণায় তারা দেখেন গত ৫০ বছরে পদ্মা নদীর পরিবেশগত বৈশিষ্ট্যে ব্যাপক পরিবর্তন তুলে ধরেন। সরজমিনে তারা দেখতে পান, নদীটির গতিপথ বদলানোসহ সঙ্কুচিত হওয়ার নানাবিধ দিক। স্যাটেলাইট চিত্র ব্যবহারে তারা এগুলোর সাদৃশ্য পান। সে ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে তারা দেখেন গত ৫০ বছরে পদ্মা নদীটি এখন অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি, উষ্ণায়ন, পলি পড়ার মাত্রা বৃদ্ধি ও দখল-দূষণসহ নানাবিধ কারণে চিরচেনা চেহারা প্রায় হারিয়ে ফেলছে।

প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণ বিশেষ করে নানা অবকাঠামোগত প্রকল্প এবং দখল-দূষণ নদীটিকে পরিবেশগতভাবে ধ্বংসের মুখে নিয়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিককালে পদ্মা নদী ভাঙনের মাত্রা বেড়েছে, যা নদী-তীরবর্তী জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। স্থানে স্থানে নদী সঙ্কুচিত হয়ে পড়ায় মাছের পরিমাণ ক্রমেই কমছে। বিশেষ করে ইলিশের উৎপাদন যে হারে বাড়ার কথা ছিল, সে হারে তো বাড়েনি বরং কমেছে। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতেও দেখা যাচ্ছে এ নদীর চ্যানেল অস্বাভাবিক হারে পরিবর্তিত হয়েছে। গবেষকরা আশঙ্কা করেছেন যে হারে পদ্মা নদী পরিবর্তিত হচ্ছে তা চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইলিশ উৎপাদনের উপর ব্যাপকহারে প্রভাব ফেলবে। আর এ কারণে গবেষকরাও নতুন করে পদ্মা নদী থেকে শুরু থেকে ইলিশ ঊৎপাদনের সাথে জড়িত নদীগুলোকে বাঁচানোর তাগিদ দিয়েছেন।

গবেষকদলের প্রধান বাকৃবি এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, পদ্মা মূলত সর্পিল নদী, একেঁবেঁকে চলাই এর প্রধান কাজ। কিন্তু আবহাওয়া এবং নদীর ক্ষয় ও পলি জমার কারণে এটি অনেকটা চুলের বিনুনির আকার ধারণ করেছে, অর্থাৎ অনেক শাখানদী সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে জোয়ারের উচ্চতা থাকে বেশি। একই সঙ্গে উজান থেকে নিচের দিকে পানির প্রবাহও বেশি থাকে। সামনের দিনগুলোয় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি, বন্যার পানির তীব্রতা ও উচ্চ তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে উজানের পানিপ্রবাহেও পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে পলি জমা ও পাড় ক্ষয়ের কারণে বন্যার পরিমাণ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
আবদুল মান্নান ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ৩:২১ এএম says : 0
আমার কাছে সেরকম মনে হচ্ছে
Total Reply(0)
সফিক আহমেদ ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ৩:২২ এএম says : 0
শুধু সমস্যা বের করলে হবে না, এর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
Total Reply(0)
Parvez ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৩৮ এএম says : 0
পদ্মাকে আগের রূপে ফিরাতে গেলে তেনারা নাখোশ হবেন। অতএব, ওটা আশা না করা উচিত।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন