শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চলছে সরব আলোচনা কে হচ্ছেন দ্বাদশ সিইসি

প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হাবিবুর রহমান : দেশের ১২তম প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে হচ্ছেন? নির্বাচন কমিশনারই বা কারা হচ্ছেন? এ নিয়ে এখন চলছে সরব আলোচনা। প্র্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবেন কি না-সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে ফেরার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। অন্যদিকে, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশের সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার দাবি তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গতকালও এক গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে যাদের নাম উচ্চারিত হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, বিনিয়োগ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এস এ সামাদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ এবং সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম আবদুল আজিজ। মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ সূত্র আভাস দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদকে জ্বালানী উপদেষ্টা করা হলে সেক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হতে পারে বিনিয়োগ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এস এ সামাদ অথবা সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম আব্দুল আজিজকে।
এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আগের প্রক্রিয়ায় নতুন ইসি গঠন করা হবে। ২০১২ সালে যেভাবে বর্তমান ইসি গঠন করা হয়েছিল এবারও সেভাবেই হবে। ‘সার্চ কমিটি’র মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হবে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদের চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ডিসেম্বরে। তার আগে আগামী নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদকে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতে পারে।
সূত্র জানায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব নজিবুর রহমানের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব করা হতে পারে। এ ছাড়া জনপ্রশাসন সচিব করা হতে পারে বর্তমান স্বরাষ্ট্র সচিব ড. মোজ্জাম্মেল হক খানকে। পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্যও আছেন সম্ভাব্য এ তালিকায়।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, দলের পক্ষ থেকে অন্তত ৯/১০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রীর কাছে এ তালিকা জমা দেয়া হবে।
বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাবেক সচিব কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ এবং চার কমিশনার মোঃ শাহ নেওয়াজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোঃ জাবেদ আলী, মোহাম্মদ আবু হাফিজ এবং মোহাম্মদ আবদুল মোবারাক ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরে আরও একজন যুক্ত হন। সংবিধান অনুযায়ী কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর। এ হিসাবে আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। পাশাপাশি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমাও ঘনিয়ে আসছে। আগাম নির্বাচন না হলে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হবে ২০১৯ সালে। সঙ্গতকারণে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নতুন কমিশনের অধীনে।
বর্তমান কমিশনের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট অংশ নেয়নি। ওই নির্বাচনে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের ভূমিকা নিয়েও বিতর্ক আছে। আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, এবার দলের পক্ষ থেকে ‘ক্লিন ইমেজের কাউকে নির্বাচন কমিশনে আনার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে বেশ ক’জনের নামও আলোচনায় চলে এসেছে। সবার নাম এখনো জানা না গেলেও পরবর্তী কমিশনারের তালিকায় বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ, অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও বিচারপতির নাম রয়েছে।
সূত্র মতে, সরকারি দলের তালিকায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইখতেদার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলদলের প্রভাবশালী নেতা ড. মোহাববত খান, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মমতাজউদ্দিন আহমদ। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে পুনর্নিয়োগ দেয়ার জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবারও সুপারিশ করেছেন।
জানা গেছে, নির্বাহী, বিচার ও প্রতিরক্ষা বিভাগের ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা শোনা গেলেও তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের অনেকেই লবিংয়ে পিছিয়ে নেই।
এ প্রসঙ্গে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা বলেন, অনেক দেশে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিশন গঠন করা হয়। এটি একটি ভালো কৌশল। আমরা কমিশনার নিয়োগ আইনের যে খসড়া তৈরি করে দিয়েছিলাম, সেখানে এ কথা বলা ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর মত নিয়ে কমিশন গঠন করা হলে জনগণের আস্থা তৈরি হবে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সুজন আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি বলেন, জনগণের আস্থা থাকলেও সরকারের সদিচ্ছা না থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাহায্য করেছিল বলেই কিছু কিছু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। সাবেক সিইসি শামসুল হুদার মতে, বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ঐতিহাসিক ভুল করেছে। সংসদ বর্জনও এক ধরনের অপসংস্কৃতি। এসবের কারণে গণতন্ত্রের ভীত নষ্ট হয়ে যায়। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ ও আস্থাযোগ্য কমিশন গঠন করতে হলে একটি পদ্ধতি বের করতে হবে। সেটি করা হলে ইসির ওপর জনগণের আস্থা তৈরি হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মুহাঃ সাঈদুর রহমান সাঈদ ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ৬:৫৪ পিএম says : 0
একজন আলেম বা মুফতী কে নির্বাচন কমিশন রাখা হউক।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন