জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার ১ নং কুলকান্দি ইউনিয়ন যমুনার করাল গ্রাসে ১৯৭৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৬ ভাগের ৫ ভাগই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই সময় সরকার স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে হরিণধরা বাঁধ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাঁধটি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়।
জানা গেছে, যমুনা বামতীর প্রতিবছর অব্যাহত ভাঙনের ফলে ১৯৯৫-৯৬ ফ্যাপ ২১-২২ রক্ষণাবেক্ষণ পরীক্ষামূলক সিসি ব্লক বাঁধ নির্মাণ করেন। জামালপুর পানি উন্নয় বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যমুনা ভাঙন প্রতিরোধ বাঁধটি ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেওয়ানগঞ্জ ফুটানী বাজার থেকে সরিষাবাড়ীর পিংনা পর্যন্ত তিন পয়েন্টে আড়াই হাজার মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০২০ সালে জুন মাসে বাঁধের কাজ শেষ হয়। গত বুধবার ২৭ অক্টোবর থেকে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে সিসি ব্লক।
এলাকাবাসীর দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এদিকে ভঙন আতঙ্কে রয়েছে পাইলিং পাড়, মধ্যপাড়া, বাজারী পাড়া, মিয়া পাড়া, বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক বীরমুক্তিযোদ্ধা হাসান হাফিজুর রহমানের বাড়ি, পারিবারিক কবরস্থান, মাগুন মিয়ার বাজার, শামচ্ছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়, কুলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় , মসজিদ-মাদরাসা, রাস্তা-ঘাটা ও ফসলি জমি ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে।
সাবেক চেয়ারম্যান জুবাইদুর রহমান দুলাল বিএসসি জানান, কুলকান্দি ইউনিয়নের ছয় ভাগের পাঁচ ভাগই নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। মাত্র একভাগ অবস্থান করছে। ১৯৯৫-৯৬ ফ্যাপ ২১-২২ পরীক্ষামূলক কাজের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ হলে আমরা এলাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। পরবর্তী ফ্যাপ ২১-২২ নদী ভাঙন প্রতিরোধ মেরামত কাজ শুরু হয়। এক শ্রেণীর বালু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী বাঁধের নিকটবর্তী থেকে বালু উত্তোলন করায় মেরামত কাজটি গত ২৭ অক্টোবর সিসি ব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়।
এলাকার অভিজ্ঞমহলের বক্তব্য শত শত কোটি ব্যয়ে নদী ভাঙন রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। অথচ বাঁধের নিকটবর্তী থেকে বালু উত্তোলন করলে নদীর তলদেশ পানি ঘূর্ণাবর্তার সুষ্টি হয়ে চ্যানেলের মধ্য পানির গতি বেড়ে যায়। ফলে বাঁধে আঘাত হানলে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাইদকে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞাসা করলে এই প্রতিবেদকে জানান, আমরা ভাঙনের খবর শুনার পরই ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। দুই একদিনের মধ্যে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ড্রাম্পিং করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন