বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভারতকে মুসলিম শুন্য করার ষড়যন্ত্র চলছে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ

ত্রিপুরায় মসজিদে আগুন--

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২১, ৯:০৬ পিএম

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে উগ্রপন্থী কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী কর্তৃক মুসলমানদের বাড়ি ঘর ও মসজিদে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে দুর্গাপূজার সময় মন্দির অপবিত্র করার গুজবকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরার সংখ্যালঘু মুসলমানদের বাড়ি ঘর ও তাদের পবিত্র মসজিদ আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা ভারতকে মুসলিম শুন্য করার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। ত্রিপুরায় মসজিদে অগ্নিসংযোগকারী উগ্রবাদী হিন্দুদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রধান আমীরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশে দুর্গাপূজার সময় মন্দির অপবিত্র করার গুজবকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরার সংখ্যালঘু মুসলমানদের বাড়ি ঘর ও তাদের পবিত্র মসজিদ আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া ভারতকে মুসলিম শুন্য করার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, ভারতের ক্ষমতাসীন জনতা পার্টির ইন্দনে বারবার সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর জুলুম-নির্যাতন চলছে। পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে এ পর্যন্ত ষোলটি মসজিদে কমপক্ষে ২৭ বার হামলা চালানো হয়েছে। ভিএসপির সন্ত্রাসীরা কয়েকটি মসজিদে তাদের পতাকা ও প্রতীক দিয়েছে এবং আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তিনটি মসজিদে। তিনি বলেন, কথিত গণতান্ত্রিক রাজ্য ভারতের কাছে সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর জুলুম নিপীড়ন কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে সে দেশে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বিনষ্ট হবে এবং সারাদেশে গৃহযুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়বে।

তিনি অবিলম্বে ত্রিপুরার মুসলমানদের বাড়ি ঘর ও মসজিদে হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং ভারতের ত্রিপুরাসহ সর্বত্র মুসলমানদের জান-মাল এবং মসজিদ-মাদরাসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মোদী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। ইসলামী ঐক্য আন্দোলন : ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে উগ্রবাদী হিন্দু সন্ত্রাসীদের তান্ডবে মুসলিম নারীর শ্লীলতাহানি, মুসলমানদের বাড়ী-ঘর, দোকান পাট ও মসজিদ-মাদরাসায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইসলামী ঐক্য আন্দোলন-এর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান বলেন, অনতিবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষিদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

তিনি বলেন, সা¤প্রদায়িক রাষ্ট্র ভারতে মাত্র কিছুদিন আগেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের উপর হামলার খুব প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। মানববন্ধন, মিটিং, বিজেপির কড়া বক্তব্য, এদেশে তাদের দূতাবাস থেকেও তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তাদের পশ্চিম বঙ্গের টিভি চ্যানেলগুলোতে সারাদিনের আলোচনার বিষয় ছিলো বাংলাদেশে হিন্দু স¤প্রদায়ের উপর হামলা। কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত আমাদের মহাগ্রন্থ পবিত্র কোরআন অবমাননার এখনও পর্যন্ত আমরা বিচার পাইনি। প্রশ্ন হচ্ছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুসলিম স¤প্রদায়ের উপর বর্তমানে যে হামলা হচ্ছে,মুসলিম ঘরবাড়ি, দোকান-পাট জ্বালিয়ে দিচ্ছে, মসজিদে আগুন দিচ্ছে, মাদরাসা ভাঙচুর করছে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর হামলার এ খবর তারা প্রচার করছে না কেন এবং কোনরূপ প্রতিকারও করছে না কেন? উল্টো পুলিশ বলছে সব ঠিক আছে, তেমন কিছুই ঘটেনি। একজন মুসলিম হিসেবে এবং একজন মানুষ হিসেবে মসজিদে হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সা¤প্রদায়িক দাঙ্গার নিন্দা জানাই।

তিনি আরো বলেন, হিন্দুত্ববাদী দেশ ভারতের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতা আজ কোথায়? বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা কোন ধরণের হামলার শিকার হলে ভারতসহ বিশ্বে তোলপার হয়। ভারতে মুসলমানরা নির্যাতনের শিকার হলে ভারতের মিডিয়া, বিশ্ব মিডিয়া, বিশ্বনেতৃবৃন্দ কোন প্রতিবাদ পর্যন্ত করে না। মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে? বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে এত মাতামাতি! অন্যদিকে ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে নীরবতারনীতি! এ কেমন রাজনীতি? এ কেমন মানবিকতা, সাংবাদিকতা, দায়িত্বশীলতা, ধর্মনিরপেক্ষতা আর জাতিসংঘ? আসলে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ভারত মুসলমান নিধনের হিংসাত্মক খেলায় মেতে উঠেছে। অনতিবিলম্বে ভারত সরকারকে মুসলমানদের উপর হামলাকারী উগ্রবাদী হিন্দু সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে কঠোর বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনার পূণরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের দাবানল জ্বলে উঠবে।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন একাংশ : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ মুহাম্মদ হোসাইন আকন্দ এক বিবৃতিতে বলেন, ভারতের ত্রিপুরায় মুসলিম স¤প্রদায়ের ওপর হামলা ও মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সাথে জড়িত উগ্রবাদী হিন্দুদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ভারতে শুধু মুসলমান নয় কোন স¤প্রদায়ের ওপরই এ ধরনের হামলা কাম্য নয়। সা¤প্রদায়িকতা সম্পূর্ণ অন্যায় ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে আমরা মনে করি। নিঃসন্দেহে এটি একটি জঘন্য নিন্দনীয় অপরাধ। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করা মুসলিম জনতার ওপর পরিকল্পিত এই হামলা খুবই অমানবিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বাংলাদেশেও যেমন এই সব সা¤প্রদায়িক হামলার নিন্দা জানিয়েছি ঠিক তেমনি ত্রিপুরার হামলারও নিন্দা জানাই। আশা করি সেখানকার প্রশাসন এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে হামলা বন্ধে ব্যবস্থা নিবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোঃ মোজাম্মিল হক ১৫ এপ্রিল, ২০২২, ৩:২০ পিএম says : 0
ভারত কখনোই অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র চিল না তারা অসাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে মুসলিম নিধনে তৎপর না হলে ভারতে অন্যান্য সম্প্রদায় গুলো নাগরিকত্ব পায় একমাত্র মুসলিম রা পায় না কেন???
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন