দুয়েকটা বিরল উদাহরণ বাদ দিলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী? চট করে মনে পড়ার মতো তেমন কিছু নেই। অসাধারণ কোনো ইনিংস বা দুর্দান্ত কোনো বোলিং, কিছুই নেই। বিপরীতে বরং তিন বিভাগেই আছে ব্যর্থতায় মোড়া অনেক কিছু। এর মধ্যে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছে দলের ব্যাটিং। ঘুরে দাঁড়াতে, ভালো কিছু করতে অনেক পরিবর্তনের প্রয়োজন বোধ করছেন তিনি।
চোটে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ও সাকিব আল হাসান ছিটকে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ৯ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। অন্তত আট ব্যাটসম্যান ছিলেন প্রতি ম্যাচেই। তবুও বড় রানের দেখা মেলেনি। পাওয়ার প্লেতে রান না পাওয়া আর শেষটায় ঝড় তুলতে ব্যর্থ হওয়া, এ তো ছিল নিয়মিত চিত্র। পাপুয়া নিউ গিনি ও শ্রীলঙ্কা ছাড়া আর কোনো দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাট হাসেনি। ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করতে করতেই গেছে সময়। ভুগতে হয়েছে বাউন্ডারির জন্য। ডট বল গেছে অগণিত।
সব মিলিয়ে আট ম্যাচের মাত্র তিনটিতে দেড়শ ছাড়াতে পারে বাংলাদেশ। এর দুটি ওমান ও পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে। অন্যটিতে প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ধুঁকতে ধুঁকতে কোনোমতে করতে পারে ১২৪। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে থমকে যায় কেবল ৮৪ রানে। সবচেয়ে খারাপটা জমা ছিল যেন শেষ ম্যাচের জন্য। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গুটিয়ে যায় ¯্রফে ৭৩ রানে, এই সংস্করণে যা নিজেদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। প্রাথমিক পর্ব ও ম‚ল পর্ব মিলিয়ে ৮ ম্যাচে ফিফটি কেবল চারটি। মোহাম্মদ নাঈম শেখের ব্যাট থেকে আসে দুটি। মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক করেন একটি করে ফিফটি। ৮ ম্যাচ মিলিয়েও দুইশ পর্যন্ত যেতে পারেননি কেউ। দেড়শ ছাড়াতে পারেন কেবল নাঈম ও মাহমুদউল্লাহ।
পরিসংখ্যানের পাতায় পাতায় যেন জীর্ণ ব্যাটিংয়ের ছাপ। কিছুতেই মানতে পারছেন না মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়কের কাছে, বাংলাদেশের এমন হতশ্রী ব্যাটিং অগ্রহণযোগ্য। এর মাঝেও বললেন, সুপার টুয়েলভের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতলে চিত্রটা ভিন্নরকম হতে পারত, ‘পরিস্থিতি বেশ জটিল এই মুহ‚র্তে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দলের জন্য ছন্দটা খুব গুরুত্বপ‚র্ণ। বিশেষ করে যখন আমরা কোনো টুর্নামেন্ট শুরু করি বা সিরিজ খেলি। দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ছন্দটা আমাদের জন্য খুব প্রয়োজনীয় থাকে। শুরুতে সেটাতেই ব্যঘাত হয়েছিল। তারপর আমরা ভুগেছি। যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা জিততে পারতাম, সম্ভবত সেই ছন্দটা আসত এবং হয়তো সবার আত্মবিশ্বাস আরেকটু বাড়ত। কিন্তু এখন এই কথা বলেও তো আর লাভ নেই। বিশেষ করে আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
বিশ্বকাপ শেষ হলেও বাংলাদেশের ব্যস্ততা কমছে না। সপ্তাহ দুয়েক পরেই দেশের মাটিতে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে তারা। সেই সিরিজে ভালো করতে অনেক পরিবর্তনের দরকার দেখছেন অধিনায়ক, ‘সামনে যেসব সিরিজ আছে, বিশেষ করে সামনে পাকিস্তান সিরিজ আছে, সেখানে অনেক কিছুই বদলাতে হবে। কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে, উন্নতির অবশ্যই জায়গা আছে এবং আগেই বললাম অনেক প্রশ্নের উত্তর আমার কাছেও জটিল মনে হচ্ছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন