শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভাড়া বাড়ানোর বৈঠক

বিআরটিএ’র সঙ্গে বাস-ট্রাক-লঞ্চ মালিকদের আলোচনা আজ জ্বালানি তেলের দাম কমানোর জনদাবির প্রতি ভ্রুক্ষেপ নেই দাম বাড়ার আগেই অসাধু চক্র তেল মজুদ করেছে সিএনজিচালিত গণপরিবহন বন্ধ রহস্যজন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

জ্বালানির ২৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ধর্মঘট চললেও তেলের দাম কমানোর কোনো উদ্যোগ নেই। হঠাৎ তেলের দাম বাড়ানোয় জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হলেও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে মূল্যবৃদ্ধির কারণ ব্যাখা করেছে। ইতোমধ্যেই প্রেসিডেন্টের আদেশক্রমে দাম বৃ্িদ্ধর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি ও ভারতে পাচাররোধে মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। তবে গণপরিবহন হিসেবে পরিচিত বাস, লঞ্চ, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের ভাড়া বৃদ্ধির জন্য আজ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বিআরটিএ আয়োজিত এই বৈঠক বিকেলে হওয়ার কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় বিআরটিএ’র ভাড়া পুনঃনির্ধারণ কমিটির বৈঠকে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট অন্য স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত থাকবেন। সবার সঙ্গে আলোচনা করে জনগণের ওপর বাড়তি চাপ যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে সে ব্যাপারে ইতিবাচক উদ্যোগ ও প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থা শতকরা একশ’ ভাগ ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাবনা দিয়ে ধর্মঘটে যোগদান করেছে। সন্ধ্যায় মন্ত্রীর সঙ্গে আরেকটি বৈঠকের কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। বাস মালিক সমিতিগুলো ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, জনগণকে জিম্মি করা রাষ্ট্রের কাজ নয়। সরকার জ্বালানি তেলে গত ৭ বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। জনগণের দুঃসময়ে রাষ্ট্র জ্বালানিতে ভর্তুকি দিতে পারবে না এটা গ্রহণীয় নয়।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর অজুহাতে বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) চিঠি দিয়েছে বাস মালিক সমিতি। বাস মালিক সমিতির ওই চিঠির সূত্র ধরে আজ রোববার বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, বাসের ভাড়া বাড়াতে বাস মালিকদের চিঠি তারা পেয়েছেন। ওই চিঠির আলোকে রোববার বিকেল ৩টায় ভাড়া বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ভুক্তোভোগীরা বলছেন, সরকার জনগণের দিকে না তাকালেও বাস মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে থাকেন। ফলে তারা বাস ভাড়া বাড়াবেন। তবে শতকরা ২৩ ভাগ জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে শতকরা কত ভাগ বাসভাড়া বৃদ্ধি করেন সেটাই দেখার বিষয়। কারণ ব্যবসায়ীরা যখন যা দাবি করেন সরকার তখন সেটা মেনে নিতে বাধ্য হন।

রাজধানীতে রিকশা-সিএনজির দৌরাত্ম্য : জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কগুলোতে গতকাল ছিল রিকশা, সিএনজি ও মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য। দ্বিতীয় দিনের ধর্মঘটে যারা বের হয়েছেন তাদের ভোগান্তি ছিল চরমে। বাসের বিকল্প হিসেবে বাধ্য হয়ে যারা এসব বাহনে উঠছেন তাদেরও গুনতে হয়েছে ৩ গুণ থেকে ৫ গুণ অতিরিক্ত ভাড়া। আবার বাধ্য হয়ে অনেকেই হেঁটেই গেছেন গন্তব্যে। সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, সরকার জনগণকে এভাবে ভোগান্তিতে না ফেলে অতি দ্রুত এ ব্যাপারে যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। শনিবার রাজধানী যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, পল্টন, ওয়ারী, মিরপুর, ধানমন্ডি, আসাদগেট, শ্যামলী, আগারগাঁও, মিরপুর-১০, ফার্মগেট, বাংলামোটর, শাহবাগসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন অলিগলিতে ছিল রিকশার দৌরাত্ম্য। গন্তব্যে যেতে রিকশাচালকরা হাঁকেন অতিরিক্ত ভাড়া। আর এক একটি সিএনজি দেখলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা। এ সুযোগে বেশি ভাড়া আদায় করছেন সিএনজিচালকরা। একই অবস্থা ভাড়ায় চালিত মোটরবাইকগুলোরও। গত শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে ধর্মঘট। তবে প্রথম দিন ছুটির দিন হওয়ায় খুব একটা প্রভাব পড়েনি জনজীবনে। যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি প্রার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়তে হয়। গতকাল ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে তাদের ভোগান্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও জরুরি সেবা সংস্থার কর্মীদের ভোগান্তি। সকাল থেকেই সড়কের মোড়ে মোড়ে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে দেখা যায় শত শত মানুষকে। বাস বন্ধ থাকলেও চালু রয়েছে সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বাস। যাতে করোনার এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরে থাক কোনোরকম জায়গা পাওয়াই যেন হয়ে উঠেছে সোনার হরিণ। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কোনো একটি বাস এলেই হুড়োহুড়ি করে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ওঠেন অপেক্ষারতরা। প্রতিটি বাসেই দেখা গেছে ভিড়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিফল বৈঠক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতারা। তবে বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং বৈঠকের পর ধর্মঘটে যোগদানের ঘোষণা দেয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে মালিক সমিতির কয়েকজন নেতা যান। পরে তারা বৈঠকে বসেন। একপর্যায়ে মন্ত্রী নেতাদের কথা শোনেন এবং আশ্বাস দেন। তবে তেলের দাম ও ভাড়া সমন্বয় না করা পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত তারা জানান। জানতে চাইলে সংগঠনের অতিরিক্ত মহাসচিব আবদুল মোতালেব জানান, তেলের দাম প্রত্যাহারের দাবিতে দেয়া ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে তাদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ট্রাক শ্রমিক-মালিক প্রতিনিধিদের সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আবারও ডাকা হতে পারে বলেও জানান তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আবদুল মোতালেব বলেন, যেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি মেনে নেয়া হয়নি, তাই আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। যেকোনো সময় মন্ত্রী আমাদের ডাকতে পারেন, আমাদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কী সিদ্ধান্ত দেন সেটি জানানোর জন্য।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় দেশজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট ইস্যুতে সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডাকা হয়েছিল একটি সভা। কিন্তু সভাটি হঠাৎ স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়াও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

দাম বৃদ্ধির আগেই তেল মজুদ : ডিজেল, কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির আগেই একটি অসাধু চক্র বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বিভিন্ন বিপণন কোম্পানি থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একদিনের ব্যবধানে প্রায় ২ হাজার টন ডিজেল বেশি বিক্রি হয়েছে গত বুধবার।
ডিজেল, কেরোসিন এবং ফার্নেস অয়েলের দাম বৃদ্ধির সংবাদ আগে থেকেই পেয়ে মজুদ বাড়িয়েছে ফিলিং স্টেশন এবং ডিলাররা। পিছিয়ে নেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও। তারাও দাম বাড়ছে আঁচ করতে পেরে অতিরিক্ত জ্বালানি সংগ্রহ করে রেখেছে। বিপিসির কর্মকর্তারা জানান, দেশে বর্তমানে ডিজেল মজুদ আছে ৫ লাখ ২০ হাজার টন। কেরোসিন আছে ২২ হাজার টন। এসব জ্বালানি পণ্য দিয়ে ১ মাসেরও বেশি সময় দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তবে বিপিসির বিপণন বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে ভয়াবহ চিত্র। গত মঙ্গলবার এবং বুধবার দেশের বিভিন্ন ডিপো থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বুধবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ৩টি জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ার ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু এর আগেই হঠাৎ করে বেড়ে যায় ৩টি জ্বালানি পণ্যের (ডিজেল, কেরোসিন এবং ফার্নেস অয়েল) বিক্রি।

হঠাৎ বিক্রি বৃদ্ধির কারণ জানতে বিপিসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্ত বলেন, দু’টি কারণে দু’দিন জ্বালানি তেলের বিক্রি বেশি হয়েছে। এক. আগে থেকে সংবাদ পেয়েছে তেলের দাম বাড়ছে। দুই. বিপণন কোম্পানির কর্মকর্তাদের কারসাজি থাকতে পারে। তারা কম দামে এই ৩টি পণ্যের বেশি বিক্রি দেখিয়েছেন। এতে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হলো।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মঙ্গলবার বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন বিপণন কোম্পানির (পদ্মা, মেঘনা, যমুনা এবং এসএওসিএল) ডিপো থেকে কেরোসিন বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টন, ডিজেল বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার টন এবং ফার্নেস অয়েলের বিক্রি ছিল ১ হাজার ৬০০ টন। বুধবার সারাদেশে ডিজেল বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার টন, কেরোসিন বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫০০ টন এবং ফার্নেস অয়েল বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টন। শুধু একদিনের ব্যবধানে ডিজেলের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ২ হাজার টন। কেরোসিনের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ১৫০ টন এবং ফার্নেস অয়েলের বিক্রি বেড়েছে ৮০০ টন।

এ বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ দাবি করে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির তথ্য পাচার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টির গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। কখন দাম বাড়ানো হবে, তা আমরাও সঠিক করে বলতে পারি না। আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করি মাত্র।

নৌ ধর্মঘট : জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন ধর্মঘটে যোগ দিয়েছে নৌ-পরিবহন মালিক সমিতি। ভাড়া বৃদ্ধির লোভে শনিবার রাজধানীর সদরঘাট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে দূরপাল্লার সব ধরনের লঞ্চ। একাধিক লঞ্চ মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা শনিবার থেকেই লঞ্চ বন্ধ রাখছেন। এ বিষয়ে জানতে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমেদের (বীর বিক্রম) জানান, সাংগঠনিকভাবে আমরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে লঞ্চ মালিকরা লঞ্চ চালাবেন না বলে জানিয়েছেন। তাই তারা তাদের লঞ্চ সরিয়ে নিচ্ছেন। কেন সরিয়ে নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেলের দাম বেড়ে গেছে। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এ কারণেই লঞ্চ না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আনুষ্ঠানিক ধর্মঘটের ঘোষণা না দিলেও জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) নৌযানের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে লঞ্চ মালিক সমিতি। শনিবারের মধ্যে ভাড়া সমন্বয় না করায় অঘোষিত ধর্মঘটে যাচ্ছেন লঞ্চ মালিকরা।

সিএনজিচালিত বাস বন্ধ রহস্য : প্রাইভেট কারের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলাচল করে এমন অধিকাংশ বাস সিএনজি করা। বাসগুলো গ্যাসে চলাচল করে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে চলা পরিবহন ধর্মঘটে সিএনজিচালিত বাসগুলো বন্ধ রহস্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের অভিযোগ এই ধর্মঘট এলে তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদ না, এটা ভাড়া বাড়ানোর পাঁয়তারা। শনিবার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পথে পথে মানুষের দীর্ঘ অপেক্ষা দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন পরীক্ষার্থী ও জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া রাজধানীবাসী। গণপরিবহন না থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে রিকশা-সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মোটারসাইকেলে কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে তাদের। দু-একটি বিআরটিসি ডাবল ডেকার বাস চললেও সেগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

ভুক্তভোগীদের প্রশ্ন, রাজধানীর অধিকাংশ গণপরিবহনই সিএনসিচালিত। তারপরও তারা কেন বাস বন্ধ রেখেছেন? সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কেন দ্বিগুণ-তিন গুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে? সংশ্লিষ্টদের যথাযথ মনিটরিং না থাকায় ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাস মালিক সমিতির কিছু নেতা রোববার থেকে বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে চলমান পরিবহন ধর্মঘট বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বানের ধর্মঘট নয় বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, আমরা ধর্মঘট করছি না, আহ্বানও করিনি। এটা সাধারণ মালিকরা করেছেন। কারণ, বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশন একতরফাভাবে এক রাতেই ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Pathan Abdullah Omar Nasif ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৩ এএম says : 0
একজন গরিব মানুষ কীভাবে খাবার সংগ্রহ করেন সেই খবর কেউ রাখেন না।
Total Reply(0)
Polash Ahmed ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৩ এএম says : 0
দু'দিন ধরে পত্রিকা গুলোতে খুব ভালো করে চোখ রাখছি। তাতে জ্বালানি তেলের যে প্রভাব বিস্তার ঘটছে।তাতে করে জীবন নির্বাহর এক করুন পার্যায়ে সাধারণত জনগণ।
Total Reply(0)
Bilas Chandra Roy ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৪ এএম says : 0
বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর সব থেকে চোরেদের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে,,,,,, শুধু ধোঁকাবাজি আর দুর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের গরিব মানুষের পিসিয়ে ফেলা হচ্ছে,,, বিশেষ করে শিক্ষিত সমাজ শিক্ষা নিয়েছে ঠিকই কিন্তু চুরি শিক্ষাটা নিয়েছে তারা,,,, দেশের মানুষ আজকে কথাবোলতে ভয় পায়,,, কোথায় গেল দেশ প্রেম,,,, মুখে আছে অন্তরে নাই,,, আমার তো মনে হয় সোমালিয়া রাষ্ট্র বর্তমান বাংলাদেশ থেকে অনেক ভালো,,,, এইরকম বাটপারি আরচোরে রাজ্য নয়,,
Total Reply(0)
মির্জা জোবায়ের হোসেন ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৪ এএম says : 0
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ক্রমান্বয়ে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে... সরকারের এ বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত জনগণের ও সরকারকে সাহায্য করা উচিত
Total Reply(0)
Proshanta Biswas ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৫ এএম says : 0
সবকিছুর দাম যখন বৃদ্ধি, তেলে আর দোষ করলো কি?জনগণের কৈ মাছের প্রান সহজে মরবে না,শুনতেছি তেলের দাম লিটারে ১০-১৫ টাকা বৃদ্ধিহবে, ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর হয়ে গেছে। যারা তেলর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে খুশি হবার কথা গণপরিবহন মালিকদের এবং যানরা তেলের দাম বৃদ্ধি করেছেন তাদের কে পুরস্কার দেওয়া উচিৎ, কারণ তেলের দাম বৃদ্ধি পেলেই বেশি ভাড়া আদায় করা যায়।
Total Reply(0)
Aarif Hossain ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৫ এএম says : 0
তেলের দাম বৃদ্ধি,,,, সরকার কামডা মোটেও ভালো করেনি! আমি ক্ষুব্ধ এবং এই হঠকারী সিদ্ধান্তের ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ করছি
Total Reply(0)
MD Sadikur Rahman ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৬ এএম says : 0
হতভাগা জনসাধারণ মানুষদের নিয়ে ভাবার লোকের বড় অভাব। যার বাস্তব চিত্র প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে প্রকাশ পাচ্ছে। এদেশে কেউ স্বার্থের জন্য লড়ে কেউ আবার অর্থের জন্য লড়ে কিন্তু খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করে মনে রাখবেন এগুলো। আপনারা এই দেশকে যত উন্নত করতে চান মানব কল্যাণে কাজ না করলে আপনাদের মানবতা মরে গেছে বলে আপনারা জীবিত থাকা অবস্থায় মৃত হিসেবে বেঁচে থাকবেন মনে রাখবেন সবকিছু।
Total Reply(0)
Abdur Razzak Mreedha ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৬ এএম says : 0
বিশ্বে শুধুমাত্র বাংলাদেশেই জ্বালানী তেলের দাম বেড়েছে!
Total Reply(0)
Abdulla Al-Mamun ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৭ এএম says : 0
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষক থেকে শুরু করে নাগরিক মধ্যবিত্তরা ভোগান্তির শিকার হবেন বেশি।আর এদেরকে নিয়ে ভাবার মতো সময় আমাদের সরকার প্রধানের নেই!!!
Total Reply(0)
Rudhava Shamim ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:৩৭ এএম says : 0
এই সরকার মোটেই জনগনের নয়। জনগণ এই সরকারের কাছে কিছুই না। এই সরকারের কাছে জনগনের কোন মুল্য নেই কোন জবাবদিহিতা নেই। আর বিরোধীদল গুলো জনগণের জন্য নপুংসকের ভুমিকা পালন করছে। আর জনগণ বধির হয়ে গেছে।
Total Reply(0)
Md Oli Ullah ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৭:১০ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেশকে সব ধরনের ষড়যন্ত্র থেকে হেফাজত করুন আমীন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন