শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার আগে ফাঁসি কার্যকর নয়

আইজি প্রিজন্সের সঙ্গে কথা বলতে বললেন সুপ্রিম কোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার আগে যেন কোনো দণ্ডিতের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা না হয়- সে বিষয়ে আইজি প্রিজনের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলকে কথা বলতে বলেছেন আপিল বিভাগ।
একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার শুনানিকালে গতকাল রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। সরকারপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিনউদ্দিন এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট হেলালউদ্দিন মোল্লা সংযুক্ত ছিলেন।

হেলালউদ্দিন মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, ২০০৪ সালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে সাবিনাকে (১৩) ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। এ মামলায় গত ১৮ আগস্ট এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন সুপ্রিম কোর্ট। ওই মামলা প্রসঙ্গে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি শুকুর আলীর কৌঁসুলি আদালতকে জানান, আসামির ফাঁসি কার্যকরের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অ্যাডভান্স অর্ডারের কারণে তাকে ফাঁসি দিতে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়নি। রিভিউ আবেদন করা হবে, সে পর্যন্ত ফাঁসি যাতে না দেয়া হয়, এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ সময় আদালত বলেন, আবেদন করেছেন? জবাবে আইনজীবী বলেন, ‘ওকালতনামা পাইনি। ডিসির মাধ্যমে এখন ওকালতনামা পেতে ১০ দিন লাগে। অ্যাডভান্স অর্ডারের জন্য আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়েছে। অথচ এখনও রায় স্বাক্ষর হয়নি। আদালত বলেন, অ্যাডভান্স অর্ডার দেয়া হয়েছে। যাদের মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে, তাদের নরমাল সেলে স্থানান্তরের আদেশ হয়েছে।
পরে আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আইজি প্রিজনসকে বলবেন পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগে যাতে দ্রুত দণ্ড কার্যকর করা না হয়। এছাড়া আসামিপক্ষের আইনজীবীকে চেম্বার বিচারপতির কাছে আবেদন দিতে বলেন আদালত।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের আব্দুল মালেক ঝনুর মেয়ে সাবিনা (১৩) প্রতিবেশীর বাড়িতে টেলিভিশন দেখে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা তাকে অপহরণ করে। এরপর লালনগর ধরমগাড়ী মাঠের একটি তামাক ক্ষেতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়। পরদিন সাবিনার বাবা আব্দুল মালেক ঝনু বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন।

এ মামলার বিচার শেষে ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর হোসেন। আসামিরা হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের খয়ের আলীর ছেলে শুকুর আলী, আব্দুল গনির ছেলে কামু ওরফে কামরুল, পিজাব উদ্দিনের ছেলে নুরুদ্দিন সেন্টু, আবু তালেবের ছেলে আজানুর রহমান ও সিরাজুল প্রামাণিকের ছেলে মামুন হোসেন।

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। এর মধ্যে কামু ওরফে কামরুল মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
এরপর আসামিরা আপিল করেন। সে আপিলের রায়ে আপিল বিভাগ শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। মামলার অন্য তিন আসামি নূরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন। এছাড়া তাদের কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন আদালত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন