পটুয়াখালীর দুমকির মুরাদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি-২০২১ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে উপহারের নামে দামি পণ্যাদি নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ এর বিরুদ্ধে।
মুরাদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন,প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ তাদের কাছে একটি টেলিভিশন,শিক্ষকদের খেলার জন্য একটি কেরামবোর্ড ও সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য একটি করে দামী ভালো মানের পণ্য উপহার দিতে বলা হয়।শিক্ষার্থীরা জানান তারা এবার অত্র বিদ্যালয় থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী বিদায় নিচ্ছে,শিক্ষকদের চাহিদা মতো পণ্যসামগ্রী উপহার দিতে স্কু্ল থেকে বিদায় নেয়া ৩৫ জন শিক্ষার্থী ১০০০ হাজার করে টাকা চাঁদা ধার্য করে,এতো টাকা অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার দিতে না পারায় পরে তারা ৫০০ টাকা ধার্য করে তা উত্তোলন করেন।শিক্ষার্থীদের তোলা সেই টাকা দিয়ে টেলিভিশন না দিতে পারলেও চার হাজার টাকা দিয়ে একটি কেরামবোর্ড ও সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য একটি করে ৫০০ টাকা দামের সুপ সেট দেয়া হয় ৮-নভেম্বরের বিদায় অনুষ্ঠানের দিনে।শিক্ষার্থীরা জানান তারা শিক্ষকদের চাহিদামত পণ্যাদি না দিলে এসএসসি পাশ করার পরে স্কু্ল থেকে সার্টিফিকেট নেয়ার সময় বিভিন্নভাবে বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে তাই বাধ্য হয়েই তারা উপহারের নামে স্যারদের দাবীকৃত জিনিসপত্রগুলো দিয়েছেন।দুই বছর আগে ঐ স্কু্ল থেকে বিদায় নেয়া প্রাক্তন কয়েকজন শিক্ষার্থী এসব বিষয়ে স্কুলে গিয়ে প্রতিবাদ করলে অত্র বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক খাইরুল ইসলাম পান্না তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দেয় বলে ঐ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
স্কুলের ২০২০ এসএসসি'র কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান তারা স্কু্ল থেকে বিদায় নেয়ার সময় সকল শিক্ষকদের জন্য একজোড়া করে প্লেট এনেছিল,কিন্তু সেই প্লেট গুলো শিক্ষকদের পছন্দ হয়নি তাই শিক্ষকরা সেই প্লেট গুলো গ্রহন করেননি,পরে শিক্ষার্থীরা প্লেটগুলো পার্শ্ববর্তী একটি এতিমখানায় দিয়ে দেন।ঐ শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে সার্টিফিকেট নেয়ার সময় বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয় বলে জানান।
শিক্ষার্থী সুজন হোসেনের পিতা অটো-রিক্সা চালক শামিম হোসেন আক্ষেপ করে বলেন আমি করোনার কারণে পরিবার নিয়ে দিশেহারা,আমি পরিবার নিয়ে ঠিকমতো খেতে পারিনা,কাজকর্ম নাই,কয়েকটি এনজিওতে কিস্তি দেই,তারপরও ছেলের বিদায় অনুষ্ঠানের চাঁদা দিতে হইছে,আমি ধার করে ছেলেকে টাকা এনে দিছি।চাঁদা না দিলে শিক্ষকরা বিভিন্ন রকমের সমস্যা করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অনেক শিক্ষার্থীকে বিদায় অনুষ্ঠান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন রকমের পোস্ট দিতেও দেখা গেছে।
বিদায় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রকম পণ্য সামগ্রী নেয়ার বিষয়ে মুরাদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ বলেন-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গুলো ভিত্তিহীন,শিক্ষার্থীরা বিদায়বেলায় খুশি হয়ে কিছু দিয়ে গেলে আমরা তা গ্রহণ করি তাছাড়া আমরা তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করে কিছুই নেই না,২০২০ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দেয়া প্লেট গ্রহণ না করার ব্যাপারে বলেন সেই প্লেটের গুনগতমান ভালো ছিল না তাই আমরা তা গ্রহণ করি নাই।
বিদায় অনুষ্ঠানে জোড়করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পণ্যসামগ্রী নেয়ার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বদরুন নাহার ইয়াসমিন বলেন-বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা খুশি হয়ে কিছু দিতে পারে,কিন্তু জোর করে কোন কিছুই নেওয়ার সুযোগ নেই,এবিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব,তবেঁ যেহেতু বিষয়টা আপনাদের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম সেহেতু আমি একটু পরেই প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে এবিষয়ে জানতে চাইবো।
#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন