মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলের ৪৮টি ইউপিতে ভোট গ্রহনের প্রস্তুতি সম্পন্ন পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েনের পরেও ভোটারদের মধ্যে আস্থা সংকট রয়েছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২১, ১:০৩ পিএম

দক্ষিঞ্চলের ৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদে পরবর্তি ৫ বছরের জন্য চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নির্বাচনে বৃহস্পতিবারের ভোট গ্রহনে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার দুপুর থেকে ৪৪৯টি কেন্দ্রের ২ হাজার ৪৮৭টি বুথে ভোট গ্রহনের সব সরঞ্জাম পৌছতে শুরু করেছে। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে ইতোপূর্বেই পর্যাপ্ত আইনÑশৃংখলা বাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানান হয়েছে। তবে ৫টি জেলার ৪৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে আড়াইশরও বেশী কেন্দ্রই ঝুকিপূর্ণ। যারমধ্যে প্রায় ১০টি নদী বেষ্টিত কেন্দ্র রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ লক্ষে স্বরাষ্ট্্র মন্ত্রনালয় মাঠ পার্যায়ে দিক নির্দেশনা প্রদানের পরে ইতোমধ্যে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে সশস্ত্র ও নিরস্ত্র আনসার সদস্য থাকছে। কোন কোন এলাকায় র‌্যাবও টহলে থাকবে বলে জানা গেছে। দক্ষিনাঞ্চলের ৬টি জেলার মধ্যে ঝালকাঠী বাদে যে ৫টি জেলার ৪৮টি ইউপি’তে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে প্রায় ৭০ ভাগ কেন্দ্রই ঝুকিপূর্ণ। এসব কেন্দ্রে পুলিশ বিভাগের বিশেষ নজরদারী থাকছে বলেও জানা গেছে। তবে এর পরেও এ নির্বাচন কতটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে তা নিয়ে এ অঞ্চলের ভোটারদের মধ্যে সংশয় রয়েছে অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে।
বৃহস্পতিবারের এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১৭৩, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪৮৮ এবং সাধারন সদস্য পদে ১,৫৭২ জন প্রতিদন্ধীতা করছেন। তবে ভোটের আগেই শাষক দল সমর্থিত ৬ চেয়ারম্যান, ৭ সদস্য ছাড়াও ৬জন সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদন্ধীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের ইউপি নির্বাচনে ৪ লাখ ৭ হাজার ৩১ জন নারী সহ ৮ লাখ ২৮ হাজার ১৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ লাভের কথা। তবে গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত দক্ষিণাঞ্চলের ১৭৩টি ইউপির মত বৃহস্পতিবারের নির্বাচনেও বিপুল সংখ্যক প্রার্থী বিনা প্রতিদন্ধীতায় নির্বাচিত হওয়ায় এ ভোট নিয়ে অনেক এলাকার ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ কিছুটা কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আবার অনেক এলাকাতে কিছুটা বেশী মাত্রায়ই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে পিরোজপুর ও পটুয়াখালীর বাউফলে সহিংশতার ঘটনা সহ নানা ধরনের উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আবার কোন কোন এলাকায় দীর্ঘদিনের প্রার্থীরা জনগনের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হবার পরে ভোটারদের মনোভাব বিপক্ষে যাবার আশংকায় প্রাণপন চেষ্টা করছেন ফলাফল নিজের পক্ষে আনতে। ফলে ঐসব এলাকায়ও উত্তেজনার পারদ উর্ধমুখি।
বরিশালের চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে গত ৩ দফায় দায়িত্ব পালন করেছেন চরমোনাইর বর্তমান পীর ছাহেব সহ তার অনুজ। এবারো তার অরেক ছোটভাই জিয়াউল করিম প্রার্থী। কিন্তু এবার আওয়ামী লীগের পরক্ষো সমর্থনের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ্য বিরোধিতার মুখে চরমোনাই পরিবার। আর বিষ্ময়কর হলেও সত্যি, এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে এককাট্ট হয়ে নেমেছে বিএনপি। অতীতে বিএনপিকে পরাজিত করতে এ ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন ও আওয়ামী ঐক্যবদ্ধ ছিল। এবার সেখানে চীর ধরেছে। এবার ইসলামী আন্দোলনের প্রত্যক্ষ্য প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের পক্ষে বিএনপি। ফলে গোটা ইউনিয়নে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ উর্ধমুখি।
এনির্বাচনে প্রতিটি জেলার নিজস্ব ফোর্সের সাথে স্পেশাল আর্মড ফোর্স ছাড়াও পটুয়াখালী ও পিরোজপুরের জন্য ৬৬৮ জন অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে বরিশাল রেঞ্জ থেকে। যারমধ্যে শুধু পটুয়াখালীতেই প্রায় সাড়ে ৪শ অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে। বরিশাল জেলাতেও নিজস্ব পুলিশ ফোর্সের বাইরে আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন ও র‌্যাব-এর সদস্যরা থাকছে।
তবে বৃহস্পতিবারের এ নির্বাচন কতটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে তা নির্ভর করছে শাষক দলের মনোভাবের ওপর। সাথে পুলিশ ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভ’মিকারও কোন বিকল্প নেই বলেই মনে করছেন রজনৈতিক ও নির্বাচনী পর্যবক্ষক মহল।
করোনার চোখ রাঙানীর মধ্যেও গত ২১ জুন দক্ষিণাঞ্চলের ১৭৩টি ইউপি নির্বচনের ভোট গ্রহনের দিনে আইনÑশৃংখলা বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার সদস্য মোতায়েন ছিল। কিন্তু তা সত্বেও বিভিন্নস্থানে সহিংশতায় ৪ জনের মৃত্যু হয়। আহতের সংখ্যা ছিল শতাধীক। ঐ নির্বাচনেও ভোটের আগেই ২৬ চেয়ারম্যান এবং সাধারন ৩১ সদস্য ও ৭ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ভোটারদের আগ্রহ অনেকটাই লোপ পায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন