মঙ্গলবার সিরিয়ায় গেছেন আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন তিনি। দশ বছর পর কোন আরব প্রতিনিধি সিরিয়ায় সফরে গেলেন। তবে এই বৈঠকে খুশি নয় মার্কিন প্রশাসন।
আলোচনার শেষে সিরিয়া জানিয়েছে, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। আরব আমিরাতও সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সিরিয়ার সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে উঠছে আরবের। ২০১২ সালের আগে সিরিয়া আরব লিগের অংশ ছিল। আরব আমিরাতের সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্কও ছিল ঘনিষ্ট। কিন্তু ’১২ সালে সিরিয়ায় বাসার-বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, আরব দেশগুলি বিদ্রোহীদের সাহায্য করছে। বাসারের কার্যকলাপ নিয়ে আমিরাতও আপত্তি জানায়। সেই সময় থেকে আমিরাতের সঙ্গে সিরিয়ার কার্যত সম্পর্ক ছিন্ন হয়। দামেস্কে দূতাবাসও বন্ধ করে দেয় আমিরাত। ২০১৮ সাল থেকে সেই বরফ খানিকটা হলেও গলতে শুরু করেছে। সিরিয়াকে আবার আরব লিগে ঢোকার আহŸান জানিয়েছে আমিরাত। দামেস্কে দূতাবাসও খোলা হয়েছে। কিন্তু আমিরাতের কোনো উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি আসাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেননি। সেই দিক থেকে দেখলে মঙ্গলবারের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সিরিয়া জানিয়েছে, আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিনিয়োগের কথা বলেছেন। এছাড়াও দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরির জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ বন্ধের জন্য সবরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত আমিরাত। দুইপক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র খোঁজার কথাও বলা হয়েছে।
আরব দেশগুলো আমিরাতের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র । হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘আসাদ খারাপ একনায়ক। তার জন্য সিরিয়ার সাধারণ মানুষ ভুগছেন। আসাদ যুদ্ধপরিস্থিতি বন্ধ না করলে তার সঙ্গে কারো আলোচনায় বসা উচিত নয়। আমিরাত যেভাবে তার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তা বিপজ্জনক।’
যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও আসাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। রাশিয়া আসাদকে সমর্থন করে বলেও একাধিকবার অভিযোগ তুলেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে আমিরাতের সঙ্গে সিরিয়ার নতুন বন্ধুত্ব আরব বিশ্বের ক‚টনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : রয়টার্স, এপি, এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন