শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

পাকিস্তান ইস্যুতে ভেস্তে গেলো ভারতীয় সব কূটচাল, হতাশায় নিমজ্জিত মোদি

প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : জয়েশ-ই-মুহাম্মদ ও লস্কর-ই-তাইয়্যেবার দোহাই দিয়ে ভারত গোয়ায় ব্রিকস সম্মেলনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে ঘোষণা আশা করেছিলো, তা থামিয়ে দিয়েছে চীন। চীনের এ বিরোধিতা আগে থেকেই ছিলো। ভারত আশা করেছিলো রাশিয়া তার উদ্যোগে সমর্থন দেবে, তাও শেষ পর্যন্ত হয়নি। ভারতকে হতাশার সমুদ্রে ডুবিয়ে রাশিয়া এ ব্যাপারে নীরব থেকে মূলত চীনের সিদ্ধান্তেকেই সমর্থন দিয়েছে। ফলে ভেস্তে গেছে ভারতের পাকিস্তান-বিরোধী উদ্যোগ। ভারতের শেষ ভরসার স্থল রাশিয়ার এহেন আচরণে নতুন দিল্লি ব্যথিত। এ থেকে আরও একটা বিষয় পরিস্কার হয়ে গেলো, তা হলো- বিশ^ রাজনীতিতে রাশিয়া ভারতের চেয়ে চীনকেই বেশি গুরুত্ব দেয়, যা নতুন দিল্লিকে ভাবিয়ে তুলছে। খবরে বলা হয়, সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ এনে পাকিস্তানকে কোনঠাসা করার জন্য ব্রিকসের এবারের আসরকে ঘীরে কৌশলগত সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন মোদি। কিন্তু এতোসব প্রস্তুতির মধ্যেও রাশিয়া এবং চীনের কৌশলগত ভূমিকার কারণে ভেস্তে গেলো সব। দিনভর আলোচনায় পাকিস্তান নিয়ে সুর চড়িয়ে সীমান্তপারের সন্ত্রাসকেই ব্রিকসের মূল আলোচ্য বিষয় করে তুলতে সক্রিয় ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু বেলাশেষে ব্রিকসের ঘোষণাপত্রে অনুপস্থিতই রয়ে গেলো কথিত সীমান্তপারের সন্ত্রাস।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে সীমান্তপারের সন্ত্রাসকে গোয়ার ‘অ্যাকশন প্ল্যান’-এ আনার সব রকম চেষ্টা চালিয়েছিল ভারত। কিন্তু এ ব্যাপারে চীন এবং রাশিয়ার সহমত আদায় করা সম্ভব হয়নি। সে কারণেই সন্ত্রাস প্রসঙ্গে আইএস বা সিরিয়ার জিহাদি সংগঠন আল নুসরার নাম ঘোষণাপত্রে ঠাঁই পেলেও পাকিস্তানি সংগঠন জইশ বা লস্করের নাম থাকলো না সেখানে। সীমান্তপারের সন্ত্রাস প্রসঙ্গটি না-রাখা হলেও সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক জঙ্গিপনার সমালোচনা করে তার মোকাবিলায় পদক্ষেপ করার কথা অবশ্য বলা হয়েছে গোয়ার ঘোষণাপত্রে। উরি হামলার পর সার্ক-ভুক্ত দেশগুলির সাহায্যে পাকিস্তানকে একঘরে করার সবধরনের কূটনীতি শুরু করেছিল নয়াদিল্লি। সেই কূটনীতি প্রাথমিকভাবে সফলও হয়েছিল। যার জেরে সার্ক-ভুক্ত প্রায় সবক’টি দেশই ইসলামাবাদে প্রস্তাবিত সার্ক বৈঠক বয়কট করে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছিল।
নয়াদিল্লির মাষ্টারপ্ল্যান ছিল, এর পর গোয়ার বৃহত্তর মঞ্চে লিখিতভাবে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করা। কিন্তু রোববার রাতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকেই ভারত টের পায় পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার যে প্রবল প্রয়াস চালানো হচ্ছে তাতে রাজি নন বেইজিং। ব্রিকসের মঞ্চে মোদির তীব্র পাক বিরোধিতার পরে চীনা প্রেসিডেন্টের আলোচনায় পাকিস্তান ইস্যুতে চীনের কৌশলগত ভূমিকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে। অন্য দিকে ভারতের সঙ্গে ১৬টি চুক্তি করলেও সদ্য যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে আসা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লিখিত ঘোষণায় মস্কো যে সায় দেবে না তা-ও ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যায়। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াশিংটন নিজের স্বার্থে যতো বেশি করে ভারতীয় বাজার, অর্থনীতি এবং কৌশলগত দোসর হওয়ার চেষ্টা করছে ততোই মস্কোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে নয়াদিল্লির। পাশাপাশি রাশিয়ার আগ্রাসী সিরিয়া নীতিকেও সমর্থন করেনি নয়াদিল্লি।
ভারতের ঘোষিত বক্তব্য, সিরিয়ার সন্ত্রাসবাদীদের হিসেব নিকেশ করা উচিত ঠিকই। কিন্তু সে দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে যুদ্ধবিরতির কথাও ভাবা উচিত। যার পাল্টা হিসেবে রাশিয়ার যুক্তি, সে ক্ষেত্রে আইএস’র পালাতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, রোববারের বৈঠকেই মস্কো জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানের নাম করে কড়া শব্দ ঘোষণাপত্রে ব্যবহার করায় তাদের সম্মতি নেই। সে কারণে সোমবার ব্রিকসের মঞ্চে পুতিন সন্ত্রাস নিয়ে বিশেষ কথাই বললেন না। সব মিলিয়ে ব্রিকস মঞ্চকে ব্যবহার করে পাকিস্তান-বিরোধী ঝড় এককভাবে নরেন্দ্র মোদী তুললেন ঠিকই, কিন্তু তার বৃহত্তর প্রতিফলন আপাতত ঘটানো সম্ভব হল না বলেই ঘরোয়াভাবে স্বীকার করছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একটি অংশ। এর পরেও অবশ্য পাকিস্তানকে ছেড়ে কথা বলছেন না মোদী। চীন এবং রাশিয়ার মনোভাব বুঝেও সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানকে একঘরে করে ফেলতে দিনভর ঝাঁঝালো ভাষায় তাদের নিশানা করেছেন তিনি। এবিপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Nizam Uddin ১৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:০৫ এএম says : 0
ঠিক করেছে
Total Reply(0)
rustom ১৯ অক্টোবর, ২০১৬, ৪:১৯ পিএম says : 0
india nijer sartho chara r ki buje. .........ra ekta .........
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন