শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

যানজট ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

টঙ্গী ব্রিজে ফাটল বিমান যাত্রীদের সময় নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

গাজীপুর মহাসড়কের টঙ্গী বাজার তুরাগ নদীর সেতুতে বিশাল ফাটল দেখা দেয়ায় গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে সকাল থেকে এই সেতুটিতে ঢাকামুখী সকল প্রকার যানবাহন চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
বিকল্প সড়ক হিসেবে আপাতত টঙ্গী এজতেমা কামারপাড়া রোড দিয়ে আবদুল্লাহপুর হয়ে ঢাকামুখী সকল প্রকার গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে আবদুল্লাহপুর আশুলিয়া টঙ্গী কামারপাড়া সড়কে চতুর্মুখী তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর সড়কেও দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।

দায়িত্বশীল কোন কর্তৃপক্ষ না থাকায় এ ব্যাপারে কোন বক্তব্যও পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি কবে নাগাদ সেতুর মেরামত কাজ শুরু হবে তাও জানা সম্ভব হচ্ছে না। টঙ্গী সেতুর এই অচলাবস্থাকে ঘিরে যান চলাচলে হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর সড়কে। ২০টি জেলার যানবাহন চলাচল করে এই টঙ্গী সেতু দিয়ে। এই সমস্যার কারণে গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশ পড়েছে বিপাকে।

এ অবস্থায় ট্রাফিক পুলিশ সড়কের যানজট কোন ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। বন্ধ হয়ে যাওয়া টঙ্গী সেতু দিয়ে কবে নাগাদ গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে তাও কেউ বলতে পারছে না। বিআরটি সড়কের কাজের জন্য মূলত এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছ থেকে বিআরটি কর্তৃপক্ষের কাছে এয়ারপোর্ট-টঙ্গী-গাজীপুর সড়কটির দায়িত্ব যাবার পর থেকে সড়ক ও সেতুতে কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। শত বছরের পুরোনো সেতুটি এখন নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে।
সেতুটির উত্তর অংশে কয়েকটি বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে রড বেরিয়ে পড়েছে। গর্তের কয়েকটিতে স্টিলের পাত দিয়ে ঢেকে দিয়ে এতদিন যানবাহন চলাচল করানো হয়েছে। কোন মেরামত কাজে হাত দেয়া হয়নি। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েই এতদিন গাড়ি পাড়ি দিয়েছে এই সেতুটির উপর দিয়ে। সেতুটি যান চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছিল বহু আগেই।

গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, টঙ্গী সেতুতে আগে থেকেই গর্ত ছিল। এতোদিন ফুটোর ওপরে রাখা ধাতব পাতের উপর দিয়েই যানবাহন চলাচল করছিল। সেতুটি দিয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে পুরোপুরি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর সড়কে দেখা দিয়েছে স্মরণকালের মহা যানজট।

তিনি আরও জানান, ব্রিজটি সংস্কার কাজ করতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে বিআরটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। হঠাৎ করে ব্রিজ বন্ধ হওয়ায় অনেকেই না জেনে এ পথ ব্যবহার করছে। যানজট নিরসনে ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর ও দক্ষিণ বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিআরটিএ (বিবিএ-পার্ট) এর পকল্প পরিচালক লিয়াকত আলী বলেন, কিউরিং করতে বেশী সময় লাগবে না, তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে আমাদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ভালো না হওয়ায়া আমরা একটু সমস্যায় আছি।

এদিকে বিমান যাত্রীদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসার আগে হাতে সময় নিয়ে রওনা দেয়া অনুরোধ জানিয়েছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গতকাল শুক্রবার এবপিবিএনর পক্ষ থেকে এই অনুরোধ করা হয়।
এবপিবিএনর পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গত দুই দিন ধরে চলছে তীব্র যানজট। এতে করে কম সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হলে যাত্রীদের ফ্লাইট মিস করার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। তাই দেশের ভেতরের ও আন্তর্জাতিক যাত্রীদেরকে নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে বাসা থেকে অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে রওনা হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার গাজীপুরের টঙ্গীর একটি ব্রিজের সø্যাব ফুটো হয়ে যায়। এতে করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ব্রিজটির সংস্কার কাজ সম্পূর্ণ করতে ১৫ দিন লাগবে বলে জানিয়েছেন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ব্রিজের সø্যাব বিশেষ ঢালাইয়ের মাধ্যমে পুনঃস্থাপন করতে হবে। এই ঢালাইয়ে সাত দিন লেগে যাবে। তারপর আরও কিছু কাজ রয়েছে। তাই এ সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে অন্তত ১৫ দিন লাগবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এই ১৫ দিন দুর্ভোগ পোহাতে হবে। এ বিষয়ে বিআরটি প্রকল্পের (ব্রিজ বিভাগ) পরিচালক মো. মহিরুল ইসলাম খান বলেন, টঙ্গী ব্রিজের একটি ডেস্ক সø্যাব পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই ব্রিজটি ব্যবহারে ঝুঁকি রয়েছে। গত বুধবার রাত ১২টার আগে থেকে ব্রিজটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত সø্যাবে নতুন করে আরেকটি সø্যাব বসানো হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন