বরিশাল মহানগরীর আলেকান্দা এলাকার হাজিবাড়ি গলিতে ১৪ বছরের শিশু গৃহকর্মীকে প্রকাশ্য রাস্তায় মারধর করে গৃহকর্ত্রী। খবর পেয়ে পুলিশ আহত মরিয়মকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে। নির্যাতিতা শিশু গৃহকর্মীটির বাড়ি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর এলাকায়। তার পিতার নাম রফিকুল ইসলাম। সে কিছুদিন আগে সাগরদি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একেএম হুমায়ুন কবিরের হাজিবাড়ি গলির যুননুরাইন ভবনের মালিকের বাসায় গৃহকর্মী হিসাবে যোগ দেয়।
স্থানীয় অন্য বাড়ির বাসিন্দারা জানান, গত শুক্রবার রাতে হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী গৃহকর্মী মরিয়মকে রাস্তার উপর নির্দয়ভাবে নির্যাতন করছিলেন। আর পাশে দাঁড়িয়ে হুমায়ুন কবির অশ্রাব্য ভাষায় মরিয়মকে গালাগাল করে। পরে স্থানীয়রা ঘটনাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে মরিয়মকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, হুমায়ুন কবিরের জামাতা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আর জামাতার ক্ষমতার দাপট দেখানোর কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে ওই পরিবারের কারো সুসম্পর্ক নেই। উদ্ধারকৃত মরিয়ম পুলিশকে জানিয়েছে, মাত্র ৫-৬ দিন আগে সে ওই বাসায় গৃহকর্মী হিসাবে যোগ দেয়। কাজে যোগ দেয়ার পর থেকেই সামান্য ঘটনাতেও তাকে মারধর করত গৃহকর্ত্রী। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১০ লাখ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মরিয়মকে মারধর করা শুরু করলে সে পালানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সে আশপাশের বাসিন্দাদের কাছে আশ্রয় চাইলেও কেউ তাকে আশ্রয় দেয়নি। পরে রাত ১১টার দিকে প্রকাশ্য রাস্তায় পেয়ে তাকে মারধর করে ওই গৃহকর্ত্রী। অপরদিকে হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী দাবি করেছেন মরিয়মের সাথে প্রতিবেশী এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত শুক্রবার রাতে মরিয়ম ওই যুবকের সাথে পালানোর চেষ্টাকালে সে তাকে কয়েকটি চরথাপ্পর মেরেছে মাত্র।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটির পিতা-মাতাকে বরিশাল আসতে বলা হয়েছে।
তারা এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। গৃহকর্তার জামাতা পুলিশের কর্মকর্তা হলেও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন