মিরপুরের একাডেমি মাঠে জাতীয় পতাকা টানিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অনুশীলন নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ কেউ মিরপুরে অনুশীলনের সময় পাকিস্তানি পতাকা ওড়ানো নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তবে অনেকেই বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে দেখছেন এবং খেলাধুলায় রাজনীতিকে টেনে না আনার আহ্বান জানাচ্ছেন।
এদিকে পতাকা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কোন মন্তব্য না করলেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বলছে, মাস দুয়েক ধরে অনুশীলনে পতাকা ওড়ানোর এই রীতিটি মেনে আসছে পাকিস্তান দল।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কেউ কেউ অনুশীলনের সময় মাঠে পাকিস্তানি পতাকা ওড়ানোকে একটা রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখতে চাইছেন। তবে অনেকেই আবার এটাকে খেলোয়াড়ি মেজাজে নেয়ার ব্যাপারেই আগ্রহী।
পাকিস্তান অবশ্য ঢাকায় এসেই প্রথম অনুশীলনে পতাকা ওড়াচ্ছে না। সেপ্টেম্বর মাসে পাকিস্তানের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের সময়েও অনুশীলন চলাকালে পতাকা মাঠের ভেতরে পতাকা গেড়ে নেয়া হতো।
জামাল মিজি নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘যেহেতু পাকিস্তান খেলোয়াড়রা তারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে তারা যেখানে যাবে সেখানে তাদের ন্যাশনাল ফ্ল্যাগ তাদের কাছেই থাকবে আমরা যারা প্রবাসে থাকি বাংলাদেশ টিম যখন প্রবাসে খেলতে আসে আমরা বাংলাদেশের পতাকা স্থানীয় মানুষদের তারা তৈরি করে সে পতাকা নিয়ে আমরা মাঠে যাই সাপোর্ট করার জন্য এখানে... অতিরঞ্জিত ভাবে উপস্থাপন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতেছে।’’
হাবিব খান লিখেছেন, ‘‘যখন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানির পতাকা নিজের টাকায় কিনে এবং নিজের দেশে তৈরি করে সবচেয়ে উঁচু স্থানে টানানো হয় তখন চোখে পড়ে না।তখন হেড লাইন হয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার দেশেও এতো পতাকা ও সাপোর্টার নাই যা আমাদের দেশে আছে। বিঃদ্রঃ আপনারা ভাবতে পারেন আমি পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলছি কিন্তু না। আমি বলতে চেয়েছি বাংলাদেশে অন্য কোন দেশের পতাকা উড়বে না সেটা পাকিস্তান বা ব্রাজিল আর্জেন্টিনা যাইহোক। রাজনৈতি আর খেলা এক না। দুটি দুই ব্দিযাপার।’’
দিদারুল আলম সুমন লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তান দল অনুশীলনে স্টেডিয়ামে তাদের পতাকা গেড়েছে, এটা যদি বেআইনী হয় তবে এখনি সিরিজ বাতিল করা জরুরী। আর যদি বেআইনী না হয় তবে যারা ভারতীয় পতাকা গলায় ঝুলিয়ে পানি ঘোলা করে জাতিকে বিভক্ত করছে সেই সব ...দের বিরুদ্ধে জরুরী একশন নেয়া হউক।’’
কাবিল সাদির মন্তব্য, ‘‘যে দেশের ঘরবাড়ি দোকান-পাট, অফিসে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকায় একাকার হয়ে যায় সে দেশের মানুষের এই ধরনের চেতনা ভিত্তিহীন। তাছাড়া এটা অন্যন্য দেশেও তারা করে আসছে। এগুলোতে যারা রাজনীতি মেশাতে চাইছে তাদের উদ্দেশ্য অনেকটা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে পিছনে ঠেলা আর কিছু মানুষকে চেতনা ব্যবসায় উস্কে দেয়া এবং নিউজিল্যান্ড কে যারা পাকিস্তান থেকে খেলার আগ মুহূর্তে সরিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র করেছিল তারাই আবার এখানে জাল ফেলেছে কি না সেটাও আমাদের ভাবতে হবে।’’
শাহজাহান ব্রিকমের পরামর্শ, ‘‘শুধু ক্রীড়া অঙ্গন অর্থাৎ খেলাধুলার জন্য প্রত্যেক দেশের আলাদা করে জাতীয় পতাকার সাথে মিল রেখে পতাকা নির্মাণ করা উচিত। তাহলে খেলাধুলা নিয়ে কোন দেশই পতাকার অজুহাতে রাজনীতি করতে পারবে না। যেমন প্রায় সব দেশেই রাজনৈতিক দলের বা অন্য সংগঠনগুলোর পরিচয়ের জন্য আলাদা পতাকা থাকে ঠিক তেমন ক্রীড়া অঙ্গনের জন্যও আলাদা পতাকা থাকলে দোষের কি।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন