শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৩০ অক্টোবর থেকে পেট্রোলপাম্পে লাগাতার ধর্মঘটের হুমকি

জমির মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ১২ দাবি

প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ থেকে ইজারা নেয়া জমির মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ১২ দাবি আদায়ে আবারো সরকারকে ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে পেট্রোলপাম্প ও ট্যাঙ্ক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে দেশের সকল পেট্রোলপাম্পে লাগাতার ধর্মঘট শুরুর হুমকি ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পেট্রোলপাম্প ও ট্যাঙ্কলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাজমুল হক এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেন। তেল বিক্রির কমিশন বৃদ্ধিসহ ১২ দফা দাবি আদায়ে এর আগে এর আগে গত ২৮ আগস্ট সারাদেশে পেট্রোলপাম্পে সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালন করে তারা। ওইদিন রাজধানীসহ দেশের ৫ হাজার ৬০০টি পাম্পে নয় ঘণ্টা জ্বালানি তেল বিক্রি, ট্যাঙ্ক লরির মাধ্যমে তেল উত্তোলন, পরিবহন এবং বিপণন বন্ধ ছিল। এরপরও সরকার দাবি পূরণে সাড়া না দেয়ায় বুধবার লাগাতার ধর্মঘটের এ হুমকি দিয়েছে সংগঠনের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতিসহ ১২ দাবি পূরণের দাবি জানাচ্ছি অনেক দিন ধরে। তা না হলে আগামী ৩০ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে দেশের সকল পেট্রোলপাম্পে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলবে। সংবাদ সম্মেলনে জানান, দাবি দাওয়া পূরণের বিষয়ে আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে মন্ত্রণালয়ে গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। একাধিকবার ধর্মঘট করলেও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। বরং বিভিন্ন সময় আমাদের অপমান করা হয়েছে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আমাদেরকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন। এটি আমাদের ব্যথিত ও হতাশ করেছে। এ ধরনের ধর্মঘটে জনগণের ভোগান্তি হলেও দাবি আদায়ে এটা করতে হচ্ছে।
ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব আকতার হোসেন, বাংলাদেশ ট্যাংক লরি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহজাহান, বাংলাদেশ পেট্রোলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঐক্য পরিষদের নেতাদের অভিযোগ, তিন মাসের মধ্যে কমিশন বৃদ্ধিসহ নানা দাবি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ছয় বছরেও তা মানা হয়নি। সম্প্রতি ১২ দফা দাবি আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে তিনবার চিঠি পাঠিয়েও কোনো লাভ হয়নি। গত কয়েক বছওে পেট্রোলপাম্প পরিচালনায় ব্যয় কয়েকগুণ বাড়লেও কমিশন বাড়ানো হয়নি। ২০১১ সালের হিসেবেই পাম্প মালিকদের কমিশন দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় কমিশন না বাড়লে পাম্প চালানো সম্ভব নয়। সড়ক-মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের জমি সংযোগ সড়ক হিসেবে ইজারা নিয়ে গড়ে উঠেছে অনেক পেট্রোলপাম্প। কয়েকবছর পরপর সওজের পক্ষ থেকে জমির ইজারা মাশুল বাড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
এ সময় তিনি ১২ দফা দাবি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। (১) শ্রম মন্ত্রণালয়ের এস আরও নং ১৪১ তারিখ ১০-০৬-২০০৮ ইং বাতিল পূর্বক ট্যাংকলরীকে পৃথক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নতুন এসআরও জারী করা। (২) বাস্তবতার নিরিখে তেল বিক্রয়ের কমিশন ও ট্যাংকলরী ভাড়া বৃদ্ধি করা। (৩) ট্যাংকলরী শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা প্রণয়ন করা। (৪) অপারেশন লস, ইভাপোরেশন লস এবং বিএসটিআই টলারেন্স মাত্রা যৌক্তিক হারে নির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষান্তে পুনঃনির্ধারন করা। (৫) ফেরী ঘাটে ট্যাংকলরীকে পারা পারে অগ্রাধিকার দেয়া। (৬) ভেজালরোধে বেসরকারী রিফাইনারী কর্তৃক বাজারে তৈল বিক্রয় বন্ধ করা। (৭) সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযাযী বিদ্যমান ট্যাংকলরী টার্মিনাল সংস্কার এবং প্রয়োজনীয় স্থানে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ করা। (৮) পেট্রোলপাম্প স্থাপনের নিতিমালা পুর্নবিন্যাস করা। (৯) ট্যাংকলরী চলাচলে পুলিশি হয়রানী বন্ধ করা। (১০) পেট্রোলপাম্প পরিদর্শনকালীন বিপিসি এবং এসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করা। (১১) বিএসটিআই টলারেন্স মাত্রার হার যাচাইপূর্বক পুনঃনির্ধারন না করা পর্যন্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখা

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন