শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

লাখ লাখ আশ্রয়প্রার্থী ইউরোপকে গ্রাস করতে পারে: পোল্যান্ড

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০২১, ৬:৫৮ পিএম

বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডের পূর্ব সীমান্ত দিয়ে ঢোকার অনুমতি দেয়া হলে তারা আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে লাখ লাখ আশ্রয়প্রার্থী শীঘ্রই ইউরোপকে গ্রাস করতে পারে। বৃহস্পতিবার জার্মান সংবাদপত্র বিল্ডকে দেয়া সাক্ষাতকারে এই মন্তব্য করেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি।

হাজার হাজার অভিবাসী, প্রধানত মধ্যপ্রাচ্য থেকে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পোল্যান্ড এবং বেলারুশের মধ্যবর্তী সীমান্ত দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে মোরাউইকি বলেন, ‘বেলারুশের সীমান্তে হাজার হাজার লোককে অবৈধভাবে পশ্চিমে পাড়ি দেয়া বন্ধ করা না গেলে অভিবাসীদের একটি নতুন ঢেউ মহাদেশে প্লাবিত হতে পারে।’ ব্রিটেন এবং ইইউ মিত্ররা ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের শক্তিশালী নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে অভিবাসীদের - প্রধানত ইরাকি কুর্দিদেরকে সীমান্তে প্রলুব্ধ করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। গত বছর বিরোধী বিক্ষোভ দমন করার পর তার শাসনের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ হিসাবে লুকাশেঙ্কো এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বরে তারা দাবি করেন।

বেলারুশিয়ান সীমান্ত বাহিনী বলেছে যে, তারা পোল্যান্ডের সীমান্তে একটি অস্থায়ী অভিবাসী শিবির খালি করেছে যেখানে প্রায় ২ হাজার লোক ছিল, তাদেরকে কাছাকাছি একটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ক্রসিং পয়েন্টে অভিবাসীদের উপরে পোলিশ বাহিনীর টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহারের পরে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। পোলিশ পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর দ্বারা অভিবাসীদের কঠোর পদক্ষেপের সমর্থন জানিয়ে মোরাউইকি বলেছেন, ‘পোলিশ সীমান্ত রক্ষা করে আমরা পুরো ইউরোপকে রক্ষা করি। আমরা আমাদের সীমান্তকে সব উপায়ে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর, যা ইউরোপ এবং ন্যাটোর পূর্ব সীমান্তও।’

ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়ান সৈন্যরা অবস্থান নেয়ার পরে এই প্রতিক্রিয়াটি এসেছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে. ওই অঞ্চলে প্রায় ৯০ হাজার রাশিয়ান সৈন্য জমায়েত হয়েছে। তবে ক্রেমলিন দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে যে, তারা আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে ইতিমধ্যেই সীমান্তের কাছে একটি বিশাল হ্যাঙ্গারে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে মিনস্কের মতে, তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যাওয়ার পরেও প্রায় 800 জন বাইরে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। তারা তাঁবুতে বা ক্যাম্পফায়ারের আশেপাশে রাত কাটিয়েছিলেন।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা সচিব বেন ওয়ালেস বলেছেন যে, অভিবাসীদের 'ঘুঁটি’ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং পোলিশ সীমান্তকে সামরিকভাবে শক্তিশালী করতে রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রায় ১০০ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে লুকাশেঙ্কো এবং তার রাশিয়ান মিত্র প্রেসিডেন্ট পুতিন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং অভিবাসীদের না নেয়ার জন্য পোল্যান্ডের সমালোচনা করেছেন। পোলিশ মিডিয়া বলছে, আগস্টে সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ১১ জন অভিবাসী মারা গেছে।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল লুকাশেঙ্কোর সাথে দুবার ফোনে কথা বলার পরে চলতি সপ্তাহে সঙ্কট কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার, এই জুটির দ্বিতীয়বার আলাপরে একদিন পরে, অভিবাসীদের জন্য প্রথম প্রত্যাবাসন ফ্লাইট ইরাকে অবতরণ করে। লুকাশেঙ্কোর মুখপাত্র নাটালিয়া ইসমন্ট বৃহস্পতিবার বলেছেন যে, দেশটিতে মোট প্রায় ৭ হাজার অভিবাসী ছিল। তিনি জানান, বাকি ৫ হাজার অভিবাসী চাইলে বেলারুশ সরকার তাদের বাড়িতে পাঠানোর দায়িত্ব নেবে। তিনি দাবি করেছেন যে, চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল জার্মানিতে মানবিক করিডোর তৈরির বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে আলোচনা করবেন। তবে বার্লিন এই দাবি অস্বীকার করেছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন