শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বাবার লাশ বাড়িতে, আজ পরীক্ষা দিতে এলো রাজিয়া

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২১, ৮:০০ পিএম

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে রাজিয়া ইসলাম নিছা নামে এক শিক্ষার্থী। আজ রবিবার (২১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয় রাজিয়া ইসলাম।

একই দিন ভোরে রাজিয়ার বাবা মিজানুর রহমান বাবু (৪৫) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সিলেট উইমেনস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এদিন সকাল ৯টায় পরীক্ষায় অংশ নেয় রাজিয়া। সে কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। জানা যায়, রবিবার ভোরে এসএসসি পরীক্ষার্থী রাজিয়া ইসলাম নিছার বাবা পতনঊষার গ্রামের মিজানুর রহমান মারা যান। স্বজনরা লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওদিকে পরীক্ষার সময় হয়ে যায়। এ অবস্থায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে রাজিয়া পরীক্ষায় অংশ নেয়। সকালে চোখের পানি মুছতে মুছতে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায়। সহপাঠী ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সহযোগিতায় দ্বিতীয় দিনের ভূগোল পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে বাবার লাশ দাফনে অংশ নেয়।

স্বজনরা জানান, রবিবার রাজিয়ার দ্বিতীয় দিনের এসএসসি পরীক্ষা ছিল। এর মধ্যে তার বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও স্বজন ও শিক্ষকদের উৎসাহে পরীক্ষায় অংশ নেয় রাজিয়া। কমলগঞ্জ পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ফয়েজ আহমেদ বলেন, রাজিয়ার বাবার মৃত্যুর কথা শুনে সকালে বাড়িতে যাই। তাকে ও পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়েছি। রাজিয়াকে উৎসাহ দিয়েছি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষা সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র কুমার পাল বলেন, রাজিয়া সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা দিয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক তার দিকে খেয়াল রেখেছি।

পরীক্ষা শেষে রাজিয়া ইসলাম নিছা জানায়, বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। বাবা চাইতেন আমি যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হই। তাই এমন অবস্থাতেও পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। বাবার আত্মাকে আমি কষ্ট দিতে চাই না। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, বাবাকে হারানো যে কারও জন্য বেদনাদায়ক। বাবা হারানোর কষ্ট বুকে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে রাজিয়া ইসলাম নিছা। আমরা পরীক্ষার সময় যতটা সম্ভব তার পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন