শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রাণশক্তি প্রধানমন্ত্রী - অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৫৩ পিএম | আপডেট : ৭:৩১ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২১

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সোনার বাংলা গড়তে দেশ গঠনে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, খাঁটি মুসলমান হতে হলে পিছিয়ে পড়া মানুষদের এগিয়ে নিতে হবে। ব্যবসায়ী, অর্থশালী ও বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান থাকবে তারা যেন তাদের প্রতিবেশীদের সহয়তা করে।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) অফিসার্স ক্লাব, ঢাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়োজিত সেরা করদাতাদের ‘ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা প্রদান’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বএসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার উষালগ্নে ১৯৭২ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গঠন করে এদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ধারাবাহিক উন্নয়নের ভিত রচনা করেছিলেন। তিনি অনুধাবন করেছিলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকারকে যে উন্নয়ন ব্যয় করতে হয় তার মূল যোগান আসে রাজস্ব ব্যবস্থা থেকে। ১৯৭২-১৯৭৩ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত অর্থনীতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৬৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছিল যা সময়ের পরিক্রমায় আজ মহীরুহে পরিনত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর তুলিতে আঁকা সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ আরও অনেক বাড়াতে হবে। এদেশের সম্মানিত করদাতাদের টাকায়ই আজ নির্মিত হচ্ছে আমাদের পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প। আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রাণশক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জনগণের স্বতর্স্ফূত অংশ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ এশিয়ার নব্য টাইগার হিসাবে আবির্ভুত হচ্ছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম অর্থনীতির দেশে পরিনত হবে। আমাদের এখন লক্ষ্য এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি অর্জন ও বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা এবং ২০৪১ সালের সুখী, সমৃদ্ধ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার জন্য সঠিক অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরী করে দেয়া।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রাকে সফল করতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সম্পদের যোগান বাড়াতে হবে। রাজস্ব অনুপাত এখনও আমাদের প্রতিবেশী ও উন্নয়ণ প্রতিযোগী অনেক দেশের তুলনায় কম। এ বিষয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। এনবিআর-এর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ২০০৫-০৬ সালের ৩৪ হাজার কোটি টাকা থেকে সাড়ে সাত গুণেরও বেশি বেড়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত এক যুগে আয়কর-এর পরিমাণ ৭ হাজার কোটি টাকা থেকে বার গুণ বেড়ে ৮৫ হাজার কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে দেশে একটি করদাতা-বান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়েছে। করদাতার সংখ্যাও প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে। ফলে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশার কথা হলো, আমরা দেখতে পাচ্ছি জনগণের মধ্যে কর প্রদানের আগ্রহ বাড়ছে। সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়োজিত ‘সেরা করদাতা সম্মাননা ও ট্যাক্স কার্ড’ অনুষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। সম্মানিত সর্বোচ্চ করদাতাদের সম্মাননা প্রদান এটি শুধু একটি পুরস্কারই নয়, এটি একটি স্বীকৃতি, একটি উৎসাহ, একটি অনুপ্রেরণা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের সহায়তা করা আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। আমাদের এগিয়ে যেতে অনেক কাজ করতে হবে। আপনার সম্পদে গরিবের হক আছে। আপনারা যে অর্থ কর হিসেবে দেন তা দিয়ে সরকার উন্নয়ন কাজে বিনিয়োগ করে। আসুন সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা একটু একটু করে দেশ গঠনে অংশগ্রহণ করে সোনার বাংলা গড়তে এগিয়ে আসি।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, জরিপের মাধ্যমে করদাতা চিহ্নিত করার কাজকে সাধুবাদ জানাই। করদাতা বাড়াতে হলে সচেতনতামূলক কাজ বাড়াতে হবে পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে এনবিআরের অফিস করা প্রয়োজন।

আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, করদাতা পরিষ্কারভাবে দেখতে পান, কর প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নতি হয়। কেন আমি কর দেই, কর দিয়ে কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তর করদাতারা পেয়েছেন বলেই, তারা করদিতে উৎসাহী হন।

তিনি বলেন, আমাদের ব্যক্তিপর্যায়ে করপ্রদানের সক্ষমতা বাড়ছে। সবাইকে করজালের আওতায় নিয়ে আসবো। আর তা হলে করহার কমবে। করজাল বাড়াতে এনবিআরকে ডিজিটাল ও অটোমেশন করার কাজ শুরু করা হয়েছে৷

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সেরা করদাতা হিসেবে বিশেষ সম্মাননা ‘ট্যাক্স কার্ড’-এর জন্য ১৪১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড এবং সর্বোচ্চ ও দীর্ঘসময় আয়কর প্রদানকারী ৫২৫ জন সম্মানিত করদাতা সম্মাননা পেয়েছেন। ট্যাক্স কার্ডের জন্য ব্যক্তি শ্রেণিতে ৭৫ জন, কোম্পানি ক্যাটাগরিতে ৫৪ ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ১২ করদাতাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।##

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন