শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

ইসলামে যাকাত আদায়ের গুরুত্ব

মল্লিক মাকসুদ আহমেদ বায়েজীদ | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৬ এএম

মহান আল্লাহ তার নিজ অনুগ্রহে চিরন্তনী আবাসস্থল দান করবেন এবং সেখানে আমাদের কোন দুঃখ এবং ক্লান্তি থাকবেনা’ (সূরা ফাতিরঃ ৩৫)।

নবী করীম (সাঃ) বলেন [সহীহ বুখারী হাদীস নং ৩২৪৪ ,সহীহ মুসলিম হাদীস নং ২৮২৪ ]‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পার, ‘‘কেউ জানেনা, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে’’- (আসসাজদাহঃ ১৩)
বর্ণিত সুখকর, ক্লান্তি-লেশহীন,মনোহর,চিরন্তন আবাসস্থলের নামই হচ্ছে জান্নাত।জান্নাতে যেতে চান কি চান না কোনো মুসলিমকে এমন প্রশ্ন করা হলে সোজাসাপটা জবাব দিবে হ্যাঁ জান্নাতে যাবার প্রয়াসেই আল্লাহর একত্বাদে বিশ্বাস করি, তার প্রদত্ত কুরআনুল কারীম ও বিশ্বনবীর সুন্নাহ মোতাবেক চলি, দৈনিক পাঁচবার সালাত কায়েম করি, সাওম(রমজান) পালন করি, শরীয়তের শর্ত সমূহ মেনে চলার চেষ্টা করি।

আমাদের আসল গন্তব্য চিরন্তন বসত, সুখ-সূধা, প্রশান্তির শেষ আশ্রয়স্থল জান্নাত যেখানে যাবার জন্য আমরা আত্ববিশ্বাসী বটে এবার কিন্তু প্রশ্ন আসতে পারে একজন মুসলমান পরিচিতিতে আমরা কি শুধুই নামে মাত্র পির্তৃপুরুষের ধারনকৃত ধর্ম আঁকড়ে ধরে রাখি না বারযাখ- জান্নাতের পাথেয় “ঈমান”কে পোষণ করি?

ঈমান কি এবং কেনো: যার ঈমান নেই সে মুসলমানো নয়। প্রকৃত মুসলমান হতে হলে অবশ্যই ঈমানের অঙ্গ সমূহে বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করা শরীয়াহী বাধ্যতামূলক।

“আমানতু বিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহী ও ওয়া রাসূলিহি কুতুবিহীয় ওয়াল ইয়াওমিল আখিরী ওয়াল ক্বাদরী খইরিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লাহি তা›আলা ওয়াল বা›ছি বান্দাল মওত।” অর্থঃ- প্রথমত-আমি ঈমান আনলাম আল্লাহ তা›আলার উপর,দ্বিতীয়ত- ঈমান আনলাম তাঁর ফেরেশতারগণের উপর,তৃতীয়ত- ঈমান আনলাম তাঁর কিতাব সমূহের উপর,চতুর্থত- ঈমান আনলাম তাঁর রাসূলগণের উপর,পঞ্চমত- ঈমান আনলাম আখিরাতের উপর,ষষ্ঠত- ঈমান আনলাম তাক্বদীরের উপর,সপ্তমত- ঈমান আনলাম মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার উপর।

হে বন্ধু;আমি আপনি সকলেই মুসলমান হিসেবে প্রথম বাক্যটি বিশ্বাস করি এবং পাঠ করি ্রলা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ।মেনে নিচ্ছি আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়।মেনে নিলাম নির্দ্ধিধায় মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।

ঈমানের সাতটি অঙ্গের ৫টিতে আমরা বিশ্বাসস্থাপন করে চলি সর্বদা নিশ্চিন্তে নির্দ্ধধায়।বাকী রইলো আখিরাত ও মৃত্যুর পর পুনুরুথানে বিশ্বাস।আমরা কিন্ত অমর,অক্ষয়,চিরঞ্জীব নই (কেবলমাত্র মহান আল্লাহ সুবাহানাল্লাহু তায়ালার ক্ষেত্রে শোভনীয়)।মৃত্যু অনিবার্য যা আদম (আঃ) থেকে বংশানুক্রমে ঘটেই আসছে এবং মৃত্যুর পরের ঠিকানা কবর।শুরু হয়ে যায় আখিরাতের হিসাব নিকাশের পালা শুরু হলো আরেকটি জগতের,এরপর কিয়ামতের প্রশস্ত মাঠ।আর এ কিয়ামতের মাঠে সকল মানুষগণের পুনুরুথান ঘটবে যা পবিত্র আসমানী কিতাব কুরআন এবং রাসূলুল্লাহর (সাঃ) বাণী সুন্নাহ থেকে আমরা নিশ্চিত।আর কিয়ামতের ভয়াবহ মাঠের কঠিন বিচার কার্য শেষে আমাদের শেষ আবাস হবে জান্নাত অথবা জাহান্নাম।বিশ্বাস করি ইনশাহআল্লাহ।

ঈমান থাকলেই জান্নাতীঃ আল্লাহ এবং তার সৃষ্টিকূলে ঈমান আনার সীমাবদ্ধতায় জান্নাত নিশ্চিত নয়; অন্যকথায় ঈমান হলো ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ কলেমা,সালাত,সাওম,হজ্জ্ব ও যাকাতের অনুপ্রেরক, নিয়ন্ত্রক ও রক্ষক আর জাগরনের অ্যালার্ম মাত্র।

ঈমান নিয়ন্ত্রিত ইসলামের স্তম্ভ: ইসলামের মূল স্তম্ভ পাঁচটি।১)কলেমা ২)সালাত ৩)সাওম ৪)হজ্জ্ব ৫)যাকাত।
আমরা মহান রবকে এক ও অদ্বিতীয় এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে তার বান্দা ও শেষ রাসূল হিসেবে মেনে নেয়ার শপথ করে ঈমান আনায়ন ও রক্ষার অঙ্গীকার ঘোষণা করেই কিন্তু কলেমার কাজটিই সম্পাদন করে নিয়েছি।দুই নম্বর কাজটি হলো,সালাত আদায় করা বা প্রতিষ্ঠা করা বা কায়েম করা যা দৈনিক পাঁচবার বাধ্যতামূলক।সালাত জান্নাতের চাবিকাঠী।চাবি ছাড়া যেমন কোনো ঘরের লক খোলা সম্ভব নয় তেমনি সালাত ছাড়া জান্নাতের দরজা খোলা সম্ভবপর হবেনা বরং জাহান্নামে গমন করতে হবে।সালাত হচ্ছে আমাদের শারিরীক ও মানসিক ও সময়াপেক্ষীক একটা মৌলিক ইবাদত।এটি এতো গুরুত্বপূর্ন যে যার তাগিদ এসেছে পবিত্র কুরআনে ৮২ বার।এরপরে সাওম পালন(রমাজান) যা একটি বছরের মাত্র একটি মাস (৩০ দিন) ফরয করা হয়েছে।এটিও একটি শারিরীক ও মানসিক ত্যাগমূলক মৌলিক ইবাদত।হজ্জ্ব একটি আর্থিক ইবাদত।যার অর্থ আছে পাশাপাশি আরোকিছু শর্ত শিথিল বা মৌলিকের উপর হজ্জ্বের ফরয কার্য নির্ভরশীল।বাকী যাকাত?

আলোচ্য বিষয় যাকাতঃ এবার আসি যাকাত।পবিত্র কুরআনে একাধিক আয়াত রয়েছে যেখানে সালাতের পাশাপাশি যাকাতের জন্য মহান রাব্বুল আলামীন তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, “তোমরা সালাত কায়েম করো ও যাকাত আদায় করো এবং যারা রুকূ’করে তাদের সাথে রুকূ’করো।” (সূরা বাকারাহ ঃ আয়াত ৪৩)

সালাতের পাশাপাশি যাকাতের গুরুত্ব এতো বেশি যা সম্পর্কিত আয়াতসমূহে ধারাবাহিক তাগিদ পরিলক্ষনে স্পষ্টটা আসে।পবিত্র কুরআনে সালাত এসেছে ৮২ বার যাকাতও এসেছে ৮২ বার।আল-কুরআনে প্রত্যক্ষভাবে ৩২ বার যাকাত এর কথা বলেছেন। এর মধ্যে নামায ও যাকাতের কথা একত্রে বলেছেন ২৮ বার।আল-কুরআনে মোট ১৯টি সুরায় ২৯টি আয়াতে যাকাত শব্দটির উল্লেখ দেখা যায়। আল-কুরআনের সূরা আত তাওবার ১০৩ নং আয়াত দ্বারা যাকাত ফরজ হয়। আয়াতটি হলোঃ “(হে রাসূল!), আপনি তাদের সম্পদ থেকে সাদাকা (যাকাত) গ্রহণ করে তাদেরকে পূত-পবিত্র করুন এবং তাদের জন্যে (তাদের সম্পদে) প্রবৃদ্ধি ঘটান।” (সূরা তাওবা হ ঃ ১০৩)

যাকাত কাকে বলেঃ এক কথায় কোনো মুসলমান আল্লাহ নির্ধারিত (নিসাব) পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে এবং তা এক বছর পর্যন্ত তার কাছে থাকলে তার নির্ধারিত পরিমাণ অংশ হকদারের কাছে পৌঁছে দেয়াকে যাকাত বলা হয়।

যাকাত প্রদান একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ বাধ্যতামূলক ইবাদাত, তেমনি তা আর্থসামাজিক উন্নয়নে পরিবার,সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করে ন্যায় ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কার্যকর একটি উপাদানও বটে। যাকাতপ্রাপ্তির হকদার ব্যাক্তিদের সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আটটি খাতে প্রদানের বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছেন।
যাকাত কে পাবেঃ যাকাত বণ্টনের খাত ৮ টি

মহান আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআন মাজীদে যাকাত প্রদানের ৮টি খাত উল্লেখ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন; ‘নিশ্চয়ই ছাদাক্বাহ্ (যাকাত) হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্ল­াহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়’ (তওবা ৯/৬০)।

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যাকাত প্রদানের ৮টি খাত উল্লেখ করেছেন। নিম্নে প্রত্যেকটি খাত আলাদাভাবে আলোচনা করা হল- (১) ফকীর ঃ নিঃসম্বল ভিক্ষাপ্রার্থী। যাকে আল্লাহ তা‘আলা যাকাতের ৮টি খাতের প্রথমেই উল্লেখ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রতিনিয়ত দারিদ্র্য থেকে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন, ্র‘ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট কুফরী ও দারিদ্র্য থেকে আশ্রয় চাচ্ছি’।[ আবুদাউদ হা/৫০৯০; নাসাঈ হা/১৩৪৭; মিশকাত হা/২৪৮০।] অতএব ফকীর যাকাতের মাল পাওয়ার হকদার। আল্লাহ তা‘আলা বলেন; ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে ছাদাক্বাহ প্রদান করো তবে উহা ভাল; আর যদি তা গোপনে কর এবং দরিদ্রদেরকে দাও তা তোমাদের জন্য আরো ভাল’ (বাক্বারাহ ২/২৭১)।

(২) মিসকীন ঃ যাকাত প্রদানের ৮টি খাতের মধ্যে দ্বিতীয় খাত হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা মিসকীনকে উল্লেখ করেছেন। আর মিসকীন হল ঐ ব্যক্তি যে নিজের প্রয়োজন মিটাতেও পারে না, মুখ ফুটে চাইতেও পারে না। বাহ্যিকভাবে তাকে সচ্ছল বলেই মনে হয়।

আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, এমন ব্যক্তি মিসকীন নয় যে এক মুঠো-দু’মুঠো খাবারের জন্য বা দুই একটি খেজুরের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায় এবং তাকে তা দেওয়া হলে ফিরে আসে। বরং প্রকৃত মিসকীন হল সেই ব্যক্তি যার প্রয়োজন পূরণ করার মত যথেষ্ট সঙ্গতী নেই। অথচ তাকে চেনাও যায় না যাতে লোকে তােকে ছাদাক্বাহ্ করতে পারে এবং সে নিজেও মানুষের নিকট কিছু চায় না।
(বুখারী হা/১৪৭৯, ৪৫৩৯; মুসলিম হা/১০৩৯; মিশকাত হা/১৮২৮)।

(৩) যাকাত আদায়কারী ও হেফাযতকারীঃ আল্লাহ তা‘আলা যাকাত প্রদানের তৃতীয় খাত হিসাবে ঐ ব্যক্তিকে উল্লেখ করেছেন, যে ব্যক্তি যাকাত আদায়, হেফাযত ও বণ্টনের কাজে নিয়োজিত। অতএব উক্ত ব্যক্তি সম্পদশালী হলেও সে চাইলে যাকাতের অংশ গ্রহণ করতে পারবে।

(৪) ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য কোন অমুসলিমকে যাকাত প্রদান করা ঃ ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে অথবা কোন অনিষ্ট বা কাফেরের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে কোন অমুসলিমকে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়।

(৫) দাস মুক্তির জন্য ঃ যারা লিখিত কোন চুক্তির বিনিময়ে দাসে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে মালিকের নিকট থেকে ক্রয়ের মাধ্যমে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়। অনুরূপভাবে বর্তমানে কোন মুসলিম ব্যক্তি অমুসলিমদের হাতে বন্দি হলে সে ব্যক্তিও এই খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে।

(৬) ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ঃ ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে তার ঋণ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাত প্রদান।

কাবীছা ইবনু মাখারেক (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি কিছু ঋণের যিম্মাদার হয়েছিলাম। অতএব এ ব্যাপারে কিছু চাওয়ার জন্য আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট গেলাম। তিনি আমাকে বললেন, (মদ্বীনায়) আবস্থান কর যতক্ষণ পর্যন্ত আমার নিকট যাকাতের মাল না আসে। তখন আমি তা হতে তোমাকে কিছু দেওয়ার নির্দেশ দান করব। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) বললেন, মনে রেখ হে কাবীছা! তিন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো জন্য (যাকাতের মাল হতে) সাহায্য চাওয়া হালাল নয়। (১) যে ব্যক্তি কোন ঋণের যিম্মাদার হয়েছে তার জন্য (যাকাতের মাল হতে) সাহায্য চাওয়া হালাল যতক্ষণ না সে তা পরিশোধ করে। তারপর তা বন্ধ করে দিবে। (২) যে ব্যক্তি কোন বালা মুছীবতে আক্রান্ত হয়েছে যাতে তার সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে তার জন্য (যাকাতের মাল হতে) সাহায্য চাওয়া হালাল যতক্ষণ না তার প্রয়োজন পূর্ণ করার মত অথবা তিনি বলেছেন, বেঁচে থাকার মত কোন কিছু লাভ করে এবং (৩) যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত হয়েছে এমনকি তার প্রতিবেশীদের মধ্যে জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন তিন জন ব্যক্তি তার দারিদ্র্যের ব্যাপারে সাক্ষী প্রদান করেছে তার জন্য (যাকাতের মাল থেকে) সাহায্য চাওয়া হালাল যতক্ষণ না সে তার জীবিকা নির্বাহের মত অথবা তিনি বলেছেন, বেঁচে থাকার মত কিছু লাভ করে। হে কাবীছা! এরা ব্যতীত যারা (যাকাতের মাল থেকে) চায় তারা হারাম খাচ্ছে।(মুসলিম হা/১০৪৪; মিশকাত হা/১৮৩৭।)

(৭) আল্লাহর রাস্তায় ঃ আল্লাহর দ্বীনকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে যে কোন ধরনের প্রচেষ্টা ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ বা আল্লাহর রাস্তার অন্তর্ভুক্ত। জিহাদ, দ্বীনী ইলম অর্জনের যাবতীয় পথ এবং দ্বীন প্রচারের যাবতীয় মাধ্যম এ খাতের অন্তর্ভুক্ত। হাদীছে এসেছে।

৮) মুসাফির ঃ সফরে গিয়ে যার পাথেয় শেষ হয়ে গেছে সে ব্যক্তিকে যাকাতের অর্থ প্রদান করে বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে যাকাতের অর্থ দান করা যাবে। এক্ষেত্রে উক্ত মুসাফির সম্পদশালী হলেও তাকে যাকাত প্রদান করা যাবে।

আমাদের দেশে প্রচলিত নামকায়ান্তে সাদকা বা যাকাত দেয়ার রয়েছে মনোরঞ্জিত হিড়িক।একজনকে দান করার জন্য দু›শো,পাঁচশো জনের টীম গঠন করে বক্তৃতা বিবৃতি,সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ,কাস্ট, গ্রুপ ছবি তুলে প্রকাশ করতে না পারলে যেনো যাকাত,সাদকা (দান) পরিশুদ্ধই হয়না।দেখুন কুরআনে এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “হে মুমিনগণ! দানের কথা প্রচার করে এবং ক্লেশ দিয়ে তোমাদের দানকে নিষ্ফল করো না -- আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না” (আল-বাকারাঃ ২৬৪) (চলবে)

লেখকঃ কলামিস্ট এবং ইসলামী চিন্তাবিদ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন