পর্যটকদের জন্য হরেক রকমের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নতুন আঙ্গিকে ফের যাত্রা শুরু করেছে ক্রুজশিপ বে-ওয়ান। করোনা সংক্রমণের কারণে টানা আট মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে এই বিশ্বমানের প্রমোদ জাহাজটি।
বঙ্গোপসাগরে ভেসে স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর আকাশের মিতালি উপভোগ করার সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে জাপানে তৈরি অত্যাধুনিক এ জাহাজে। ভ্রমণ পিপাসুদের চাহিদা মেটাতে একাধিক ভিআইপি কেবিন, এক্সক্লুসিভ রেস্টুরেন্ট, বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক খেলাধুলার সামগ্রীসহ বেশ কিছু বিলাসবহুল সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে। নতুন করে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন ভ্রমণ উপলক্ষে জাহাজে গতকাল সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
এতে পর্যটন জাহাজ বে-ওয়ান পরিচালনাকারী সংস্থা কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রশিদ জাহাজটির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার পর্যটক নিয়ে জাহাজটি পতেঙ্গা থেকে সেন্টমার্টিন যাবে। শুক্রবার সেখানে অবস্থান শেষে শনিবার সেটি ফের পতেঙ্গায় ফিরে আসবে।
ডিসেম্বরে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তখন সপ্তাহে তিনদিন জাহাজটি একই রুটে চলাচল করবে। বিলাসবহুল এ ক্রুজ শিপে পর্যটকদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে। আগে সেন্টমার্টিন গিয়ে জাহাজ থেকে পর্যটকদের উঠা-নামায় অসুবিধা হতো। এখন সেখানে জেটি মেরামত করা হয়েছে, পাশাপাশি কর্ণফুলি শিপ ইয়ার্ডে তৈরি একটি বার্জ বা পল্টুন জাতীয় জাহাজ ওই জেটিতে রাখা হয়েছে। বে-ওয়ান থেকে যাত্রীরা সরাসরি ওই জাহাজে নামতে পারবেন।
পতেঙ্গা থেকে সেন্টমার্টিন গিয়ে পর্যটকদের হোটেল খুঁজতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। এ বিড়ম্বনা থেকে পর্যটকদের মুক্তি দিতে সাশ্রয়ী ভাড়ায় বে-ওয়ানে রাত্রী যাপনের সুযোগ রাখা হয়েছে। জাহাজটিতে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল ভিআইপি কেবিন এবং রেস্টুরেন্ট সংযোজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, পর্যটন খাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পর্যটকদের জন্য নানা চমক নিয়ে ফের হাজির হয়েছে বে-ওয়ান।
ভবিষ্যতে এ জাহাজযোগে মালদ্বীপ ভ্রমণেরও পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। জাহাজযোগে হজযাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে আরও বড় ধরনের জাহাজ সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জাহাজে হজযাত্রী পরিবহন চালু হলে আকাশপথের চেয়ে কম খরচে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে মাত্র সাত থেকে আট দিনে হজযাত্রীরা চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দা পৌঁছতে পারবে। বাংলাদেশ এবং সউদী সরকারের অনুমতি পেলে খুব শিগগির জাহাজ নামানো হবে বলে জানান ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রশিদ।
জ¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে জাহাজের টিকিটের মূল্য ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। গত বছরের জানুয়ারিতে পতেঙ্গা থেকে মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর হয়ে সেন্টমার্টিনে যাতায়াত শুরু করে পর্যটকবাহী এ জাহাজটি। চলতি বছরের মার্চে সর্বশেষ পর্যটক পরিবহন করে বে-ওয়ান। এরপর করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এবং বিরূপ আবহাওয়ার কারণে পর্যটক পরিবহন বন্ধ থাকে। এ প্রমোদতরীতে রয়েছে দুই হাজার পর্যটক পরিবহনের মতো প্রেসিডেনসিয়াল স্যুট, ভিআইপ কেবিন, টুইন বেড কেবিন, আরামদায়ক চেয়ারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির আসন। জাহাজটিতে খেলাধুলা, বিনোদনসহ হরেক রকমের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন