মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

আল-কায়দা প্রধান জাওয়াহিরির নতুন ভিডিও, জাতিসংঘকে তুলোধনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২১, ১২:১৩ এএম

নতুন প্রকাশিত ভিডিওটিকে আল জওয়াহিরি কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন জাতিসংঘকে। তিনি বলেন জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলো প্রত্যাখ্যান করা উচিৎ। জাতিসংঘের পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য চীন, ফ্রান্স রাশিয়া, ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তারাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা করেছেন আলকায়দা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি। ৩৪ মিনিটের ভিডিওতে তিনি বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী শক্তিগুলো সমগ্র বিশ্বে বাকি মানুষদের ওপর একটি রাজনৈতিক মতবাদ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করেছিল। তিনি আরও বলেন জাতিসংঘের নীতি ও আদর্শ ইসলামে সঙ্গে সংঘাত তৈরি করে।

নতুন প্রকাশিত ভিডিওটিকে আল জওয়াহিরি কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন জাতিসংঘকে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলি প্রত্যাখ্যানে করা উচিৎ। কারণ একটি তৈরি হয়েছিল বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। জাতিসংঘকে ইসলাম বিরোধী ধর্মহীন, আনৈতিক মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। তবে ভিডিওটি কবে ও কোথায় রেকর্ড করা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় বিশ্বের প্রথম সারির গোয়েন্দা সংস্থাগুলির কাছে।
ভিডিওটিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থানীয় সদস্য- রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। বলেছেন, সকলেরই প্রবিত্র মতাদর্শ গ্রহণ ও তা মেনে চলার স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘে এ পাঁচটি দেশ তা হতে দিচ্ছে না। গোটা বিষয়টিকে বিশ্বের সবথেকে বড় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
আলজাওহিরির জীবিত কি মৃত তানি নিয়ে গত এক বছর ধরে জল্পনা চলছে। কারণ প্রায় এক বছর আগে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আল-কায়দা প্রধানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে আল-কায়দার পক্ষে তা কখনই স্বীকার করা হয়নি। যদিও আল-কায়দার ঘনিষ্টরা জাওয়াহিরির মৃত্যু হয়েছিল বলে নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু সেই ঘটনার এক বছর পরে নতুন ভিডিও ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
২০২১ সালে তালিবানরা কাবুলের ক্ষমতা দখেলর পর থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে আল-কায়দা নেতাদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। সেই সময় জাওয়াহিরির অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু তালিবানরা ক্ষমতায় ফিরে আসার পরেই আয়মান আল জাওয়াহিরি কোনও ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেননি। বা জনসমক্ষে উপস্থিত হননি। তাই তিনি জীবিত কি মৃত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। যদিও সদ্যো প্রকাশিত ভিডিওতেও তালিবান বা আফগানিস্তানের কোনও প্রসঙ্গ নেই। তাই জাওয়াহিরিকে নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে।
আয়মান আল-জাওয়াহিরি ১৯৫১ সালে মিশরের কায়রোতে একটি সমৃদ্ধ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা ছিলেন সার্জন একই সঙ্গে ফার্মেসির অধ্যাপকও ছিলেন তিনি। জাওয়াহিরিও ডাক্তারি পড়েন। ১৯৭৪ সালে স্নাতক হন। মিসরের সেনা বাহিনীতে সার্জন হিসেবে কাজ যোগ দেন। তিনি আবরি, ইংরেজী ও ফরাসি- তিনটি ভাষাতেই সাবলীল ছিলেন। একটি সঙ্গে অস্ত্রোপচারেও পারদর্শী ছিলেন। ১৯৮০ সালে সউদী আরবে এক বছর কাজ করেন। তারপরই কায়রোতে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে কাজ করেন। সেখানেই ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। তারপর ঘনিষ্ঠতা। সেখান থেকেই আদ-কায়দায় যোগ।
৭০ বছরের আয়মান আল জাওয়াহিরি ছিল মার্কিন ত্রাস। ৯-১১ হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন আল-জাওয়াহিরির মাথার দাম ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেরকে হত্যার পর থেকেই আল-কায়দার শীর্ষ পদে রয়েছে জাওয়াহিরি। সূত্র : এশিয়ানেট নিউজ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন