চলতি মৌসুমে ভোলার দৌলতখানে আমনের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরুপ ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আমন চাষিরা। এছাড়া কিছু কিছু এলাকায় শ্রমিক সঙ্কট থাকায় ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে জমিতে পাকা ধান ঝড়ে পড়ায় চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। দিগন্তজোড়া মাঠের সোনালি ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ কেউ কাটা ধান আটি বেঁধে মাথায় করে, কেউবা পরিবহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। গত ১ সপ্তাহে উপজেলায় ১০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে দৌলতখান উপজেলায় সাড়ে ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এ মৌসুমে আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাথ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের সহায়তায় (ভর্তুকি) দৌলতখান উপজেলায় ৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আমন মৌসুমে ৫৫০ কৃষককে বিনামূল্যে উন্নত জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার দেওয়া হয়।
সৈয়দপুর ইউনিয়নের চরশুভী গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন জানান, নিয়মিত পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগের ফলে ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সঙ্কট থাকায় জমি থেকে ধান কাটতে সময় বেশি লাগছে। ধান কাটার ব্যয়ও বেড়েছে। যারা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে পারছেন, তারা স্বল্প সময়ে ও কম খরচে ধান ঘরে তুলতে পারছেন।
ওই এলাকার কৃষক রিয়াজ বলেন, গত মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে আমনের ফলন ভালো হয়নি। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া, পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই কম হওয়ায় অধিক ফলন হয়েছে। যদি ধানের ভালো দাম পাওয়া যায়, খরচ পুষিয়ে লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সামি জানান, সরকার যদি উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি করে এবং ভর্তুকি মূল্যে আরও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রদান করে চাষাবাদে কৃষকের খরচ কমে যাবে। এতে করে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। চাষিরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চাষাবাদ করায় এ বছর আমনের ফলন ভালো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সুমন হাওলাদার ইনকিলাবকে বলেন, দৌলতখান উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ৩ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা স্থানীয় কৃষকদেরকে উন্নত জাতের বীজ ও নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকেন। চলতি আমন মৌসুমে সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে উপজেলায় কৃষকদেরকে ৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার বরাদ্ধ দিয়েছে। এতে স্বল্প খরচে ধান কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই এবং প্যাকেটিং করে মাঠ থেকে ধান আনা সহজ হবে। পর্যায়ক্রমে কৃষকরা যান্ত্রিক নির্ভরশীল হলে, শ্রমিক সঙ্কট কেটে যাবে এবং ফসল উৎপাদন বাড়বে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন