কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিরা হলেন- কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম এলাকার বিশুর ছেলে মোস্তান ও মোস্তানের ছেলে গোলাম রেজা রোকন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, দোষী প্রমাণিত হওয়ায় গত বুধবার (২৪ নভেম্বর) চারজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। সেদিন আদালতে দুই আসামি উপস্থিত ছিলেন। অপর দুই আসামি মোস্তান ও রোকন আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এদিকে এ মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের সাদুর ছেলে কাবুল ওরফে কালু এবং সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত আফিল উদ্দিনের ছেলে মিলন কারাগারে রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরের দিকে ওই মামলার রায়ে চারজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম। এ মামলায় পলাতক দুই আসামি মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, তিন সন্তানের জননী ওই নারী দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আল্লাহর দর্গা গ্রামের একটি সিগারেট ফ্যাক্টরির পাশে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন এবং ভেড়ামারায় একটি ডালের মিলে চাকরি করতেন। সেখানে তিনি প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত কাজ করতেন।
প্রতিদিনের মতো ২০০১ সালের ১২ আগস্ট বিকেলের দিকে বাসা থেকে কর্মস্থল ভেড়ামারার উদ্দেশে রওনা হন। পরদিন তিনি বাসায় না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা জানতে পারেন, ভেড়ামারা উপজেলার বামনপাড়া এলাকায় জনৈক আকরাম আলীর বাড়ির পাশে একটি বাঁশঝাড়ের মধ্যে একটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে পরিবারের লোকজন তার মরদেহ শনাক্ত করেন।
পরিবার তখন জানায়, ১৩ আগস্ট দিবাগত রাতের যেকোনো সময় ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আসামিরা তাকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করে।
ভেড়ামারা থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরে নিহতের মা বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে থানার হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ভেড়ামারা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাকসুদুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে গত ২৪ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত। এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন