শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কোম্পানিতে আসতে বাস মালিকদের অনীহা

সহযোগিতায় আগ্রহী দাবি মালিকদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ঢাকার গণপরিবহন মালিকরা কোম্পানির মাধ্যমে বাস পরিচালনায় আসতে চান না। রেশনালাইজেশন কমিটির দাবি, পরিবহন মালিকরা সহযোগিতা করছেন না। তবে মালিক পক্ষ বলছে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পরিবহন পরিচালনায় রেশনালাইজেশন কমিটিকে সহযোগিতা করে আসছে। অতীতের মতো সবসময় তারা পাশে থাকতে চায়। নগরীতে একসঙ্গে বাস চালু করা হলে তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়েও লক্ষ রাখতে হবে।

জানা গেছে, পরিবহন মালিকরা ৪২০টি নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিটের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। সমিতি কমিটিকে জানায়, অনুমোদন পাওয়া গেলে তারা সেখান থেকে ১২০টি গাড়ি রেশনালাইজেশন কমিটিকে দিতে পারবে। এতে কমিটির প্রধান ও দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস প্রথমে রাজি না থাকলেও পরে কমিটির অন্য সদস্যদের অনুরোধে সম্মত হন। কমিটি ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে নতুন গাড়িগুলো বাদ দিয়ে ১০৪টি গাড়ির তালিকা দেয়। কিন্তু বিআরটিসি পরীক্ষা করে দেখে এগুলোর মধ্যে মাত্র ৬টি গাড়ি শর্ত পূরণ করেছে। অধিকাংশ গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নেই। পরে মালিক সমিতির যানবাহন ছাড়া ২৬ ডিসেম্বর বিআরটিসি’র ৩০টি বাস ও স্বতন্ত্র কোম্পানির ৭০টি বাস দিয়ে পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরুর সিদ্ধান্ত নেন মেয়র।
প্রাথমিকভাবে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার প্রস্তাবিত এ রুটে কার্যক্রম শুরুর কথা। যেসব কোম্পানি তাদের বাস রুট রেশনালাইজেশনে দেবে তাদের ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়। সব মিলিয়ে ১০০টি বাস দিয়েই ২৬ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর তারিখ ধার্য করা হয়। গত ২৮ নভেম্বর ডিএসসিসি নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে অনুষ্ঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৯তম সভা শেষে কমিটির সভাপতি ও ডিএসসিসি মেয়র তাপস বলেন, নির্দিষ্ট তারিখেই পাইলটিং চালু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ১ ডিসেম্বর তারিখটা ঠিক রাখতে পারিনি। দীর্ঘদিন গণপরিবহনে যে বিশৃঙ্খলা, সেটার দ্রুত অবসান ঘটানো কঠিন কাজ। তবে দৃঢ়তার সঙ্গে এ কাজ হাতে নিয়েছি। ডিসেম্বরেই এটা চালু করবো।
সভা শেষে রেশনালাইজেশন কমিটির আরেক সদস্য ও ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইচ্ছায় ত্রুটি ছিল না। বাস মালিকরা কথা রাখতে পারেননি। তাই বিআরটিসির বেশ কিছু বাস নিয়ে ১ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৬ ডিসেম্বর এ রুট চালু করবো।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১০ সালে চালু হওয়া সূচনা নামে একই মডেলে একটি করিডোরে প্রায় ১০০টির মতো গাড়ি দিয়ে এ ধরনের প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। তবে সেটা সফল হয়নি। তখন শিক্ষা নেয়া উচিত ছিল। তাছাড়া এর ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ইনস্টিটিউট থাকা দরকার। যেখানে অভিজ্ঞ ব্যক্তি দিয়ে একটি ব্যবস্থা চালু হবে। এই করিডোরে বিআরটিসির কী ভূমিকা হবে, স্টাফ বাসের ভূমিকা কী হবে? অনেক ইস্যু রয়েছে। একই করিডোরে অন্য কোম্পানির বাস চলার সুযোগ রাখা হয়েছে। তখন দুই কোম্পানির বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে। অন্য কোম্পানির বাসগুলো বেশি যাত্রী তুলবে। কোম্পানির বাস পথ থেকে যাত্রী নিতে পারবে না। সে যখন কম যাত্রী পাবে তখন বিশৃঙ্খলা হবে। এ কারণেই মালিকরা আসতে চাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাস মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, ৬/৭ বছর যাবৎ আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মালিক পক্ষের সাথে রেশনালাইজেশন কমিটির কোন সমস্যা হয়নি। এখন হয়তো কোন ভুলবোঝাবুঝির কারণে এমনটা হচ্ছে। তবে মালিক পক্ষকে ডাকলে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করবো। রেশনালাইজেশন কমিটির সিদ্ধান্তে কতটা সফলতা আসবে তা আমরা সঠিকভাবে বলতে পারিনা। এছাড়া সহজ শর্তে ঋণসহ যেসব সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়েছিল সেগুলোও বিবেচনা করা উচিত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন