বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

এসএমই খাতের উন্নয়নে আইনি সংস্কার ও বরাদ্দ নিশ্চিত করার পরামর্শ এসএমই ফাউন্ডেশনের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৫:৪৫ পিএম

দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সহায়ক পরিবেশ তৈরির কাজ করছে সরকার। ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৯ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলার অংশ হিসেবে আয়োজিত ‘Post-COVID-19 Financing Mechanism for SMEs: Challenges and Readiness’ সেমিনারে একথা বলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। তিনি আরো বলেন, সরকারি উদ্যোগের অংশ হিসেবে এসএমই ফাউন্ডেশন দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি, দক্ষতা বৃদ্ধি ও পণ্যের বাজারজাতকরণে সহায়তা করছে। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অর্থায়নে ইতিবাচক ও সহায়তাপূর্ণ মানসিকতা তৈরি করা দরকার। সেই সাথে উদ্যোক্তাদেরও অন্যদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ প্রদান করা উচিত। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোঃ মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এবং ইস্টার্ন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. খোরশেদ আনোয়ার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিআইবিএম এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, সীমিত সম্পদ ও সামর্থ্য দিয়ে অধিক সংখ্যক সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের সরকারের সেবার আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। তবে এসএমই খাতের উন্নয়নে সম্পদের সুষম বরাদ্দ নিশ্চিত করা জরুরি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সঠিকভাবে সেবা দেয়ার জন্য তাদের একটি ডেটাবেজ দরকার। সেই সাথে দরকার মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ। এছাড়া এসএমই উদ্যোক্তাদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার করা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
০৯ ডিসেম্বর ২০২১ বিকাল ৩.০০টায় ‘৪র্থ শিল্প বিপ্লব: এসএমই’দের করণীয়’ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোঃ মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ এবং ব্যাংক এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আরফান আলী।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৫-১২ ডিসেম্বর ২০২১ আয়োজিত শতভাগ দেশী পণ্যের এই মেলায় উদ্যোক্তাদের জন্য ৩২৫টি স্টলের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া, মেলায় আগত দর্শনার্থীদের মাঝে এসএমই ফাউন্ডেশনের পরিচিতি ও কর্মসূচি তুলে ধরার লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের একটি সেক্রেটারিয়েট, মিডিয়া সেন্টার, রক্তদান কেন্দ্র, ক্রেতা-বিক্রেতা মিটিং বুথ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠান, যেমন: বিটাক, বিএসটিআই, বিসিআইসি, বিসিক, বিএসইসি, জেডিপিসি, বিসিএসআইআর, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং প্লাটিনাম স্পন্সর ব্র্যাক ব্যাংক, গোল্ডেন স্পন্সর লংকা বাংলা, সিলভার স্পন্সর ব্যাংক এশিয়া ও ইস্টার্ণ ব্যাংক, কো-স্পন্সর জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-এর স্টল রয়েছে। ‘জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬’ অনুযায়ী উচ্চ অগ্রাধিকার/অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত কৃষি/খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী শিল্প, আইসিটি/সফট্ওয়ার, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাট ও পাটজাত, প্লাস্টিক, হস্ত ও কারুশিল্প, জুয়েলারি (কৃত্রিম), খেলনা ও আগর শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত এসএমই প্রতিষ্ঠানসমূহকে মেলায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। দেশীয় উৎপাদনকারী অথবা সেবামূলক মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পই শুধুমাত্র মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রয়ের সুযোগ পাবে। বিদেশী/আমদানিকৃত পণ্য মেলায় প্রদর্শন কিংবা বিক্রয় করা যাবে না। প্রতিদিন সকাল ১০.০০টা থেকে রাত ৮.০০টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

এবার অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৬০% নারী এবং ৪০% পুরুষ। মেলায় অংশ নিচ্ছে ফ্যাশন ডিজাইন খাতের সবচেয়ে বেশি ১১৬টি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া চামড়াজাত পণ্য খাতের ৩৭টি, খাদ্য/কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য খাতের ৩৬টি, হ্যান্ডিক্রাফটস আইটেম ৩৩টি, পাটজাত পণ্য খাতের ২৯টি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য খাতের প্রতিষ্ঠান ১৭টি, আইটি খাতের ৪টি, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স খাতের ৬টি, হারবাল/অর্গানিক পণ্যের ৪টি, জুয়েলারি পণ্যের ৪টি এবং প্লাস্টিক পণ্য খাতের ৩টি প্রতিষ্ঠান এবার অংশ নিচ্ছে মেলায়।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত গত ৮টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫৬১ জন উদ্যোক্তা প্রায় ২১.৮৮ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় এবং প্রায় ৩৬.৫০ কোটি টাকার অর্ডার গ্রহণ এবং ৮৬টি আঞ্চলিক (বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে) এসএমই পণ্য মেলায় ৩১৬২জন এসএমই উদ্যোক্তা পণ্য প্রদর্শন করে ২৩.৩৩ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় এবং ২১.১৪ কোটি টাকার অর্ডার গ্রহণ করেন।
সবশেষে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ৯ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা ২০২১-এর বহুল প্রচারে সহায়তা করে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন