শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

পুরুষের প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি

| প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:০৩ এএম

প্রোস্টেট হচ্ছে একটি ছোট গ্রন্থি, যা দেখতে সুপারির মতো। এটি সব পুরুষের মুত্রথলির ঠিক নীচে মুত্রনালিকে ঘিরে থাকে। মেয়েদের গ্রন্থিটি থাকে না। প্রোস্টেট গ্রন্থি পুরুষদের ইন্টারনাল অঙ্গের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান কাজ শুক্রাণুর জন্য খাদ্যের যোগান দেওয়া। এটি মধ্যবয়স হতে সাধারণত বড় হতে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে গ্রন্থিটি বড় হতে থাকে এবং প্রস্রাবের পথকে বাঁধা দিতে থাকে।

চল্লিশ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের বছরে অন্তত একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি প্রোস্টেট পরীক্ষা করা দরকার। গ্রন্থিটি বাড়লে অনেক সমস্যা হতে পারে। প্রোস্টেট গ্রন্থি স্বাভাবিকের তুলনায় বড় হলে ‘হাইপারট্রফিক প্রোস্টেট’ এবং এ অবস্থাকে বলে বিনাইন প্রোস্টেটিক হাইপারট্রফি বা বিপিএইচ। অনেকেই ভাবেন প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হওয়া মানেই ক্যান্সার। এ ধারণা একেবারেই ভুল। প্রোস্টেট বড় হওয়া মানে কিন্তু ক্যান্সার নয়।

কারণঃ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে প্রোস্টেট বড় হতে থাকে।
পঞ্চাশ বছরের বেশি বয়সীদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হতে থাকে। কিন্তু সবার উপসর্গ দেখা যায় না।
কোনো প্রকার আঘাত, দীর্ঘদিন সাইক্লিং, কোন শক্ত বস্তুর উপর বসা, হস্তমৈথুনের অভ্যাস প্রভৃতির কারণেও যেকোনো বয়সেই সমস্যাটি হতে পারে।

উপসর্গঃ প্রস্রাব ত্যাগকালে কষ্ট হওয়া
প্রস্রাবের ধারা দুর্বল হওয়া, বন্ধ হওয়া, আবার শুরু হওয়া
প্রস্রাব ত্যাগের পর আবার প্রস্রাব ত্যাগের অনুভূতি হওয়া
বারবার প্রস্রাব হওয়া
প্রস্রাবের পথে বারবার প্রদাহ হওয়া
দিনের বেলা ঘন ঘন প্রস্রাব ত্যাগ, রাত্রে প্রস্রাবের বেগের কারণে ঘুম ভেঙে যাওয়া
প্রসাব অচেতনে হলেও টের না পাওয়া।

জটিলতাঃ প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধির চিকিৎসা না করালে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
মুত্রনালির চারদিকে প্রোস্টেটের কোষ সংখ্যা বেড়ে গেলে মুত্রনালিকে চেপে ধরে। এ চাপ প্রস্রাবকে মুত্রনালির মধ্য দিয়ে পেছনে ও কিডনীতে ঠেলে দেয়। ফলশ্রুতিতে সংশ্লিষ্ট নালি ও কিডনী বড় হয়ে যায়। এক সময় কিডনি বিকল হয়ে যায়।

প্রোস্টেট গ্রন্থির মধ্যভাগ বৃদ্ধি পেয়ে মুত্রনালীর বাহির থেকে অবরুদ্ধ করে। ফলে মুত্রথলি হতে প্রস্রাব সহজে বের হতে পারে না।

মুত্রথলির দেয়াল ক্ষতিগ্রস্থ হলে ঘন ঘন প্রদাহ হয়। যা কিডনীতে ছড়িয়ে তা বিকল করে দিতে পারে।
রোগ নির্ণয়ঃ রোগ নির্ণয় করা বেশ সহজ। চিকিৎসক মলদ্বারে আঙুল ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা যায়। এতে করে গ্রন্থিটির আকার এবং কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা জানা যায়।

প্রোস্টেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি।
প্রস্রাব ও পিএসএ পরীক্ষা।
পিভিআর ও ইউরোফ্লোমেট্রি ইত্যাদি
চিকিৎসাঃ প্রোস্টেটের বৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে এর চিকিৎসা করাতে হবে। কারো কারো ঔষধের মাধ্যমেই চিকিৎসা সম্পন্ন করা যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে। অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি হোমিওপ্যাথিতেও রোগটির চিকিৎসায় উপকার পাওয়া যায়। তাই প্রোস্টেট বড় হলে ভয়ের কিছু নেই।

মোঃ হুমায়ুন কবীর
হোমিও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য নিবন্ধকার
রেনেসাঁ হোমিও মেডিকেয়ার
৮৯, নিমতলী সিটি কর্পোরেশন মার্কেট
চাঁনখারপুল, ঢাকা-১০০০।
০১৭১৭৪৬১৪৫০, ০১৯১২৭৯২৮৯৪

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন