শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

খুলনায় প্রথম হয়েও পুলিশে চাকরি হলো না মীমের

খুলনা ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় শীর্ষে থেকেও পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন না খুলনার মীম আক্তার। এ বিষয়টি কয়ে কদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচিত হচ্ছে। মীম আক্তার জানিয়েছেন, খুলনায় জমি অর্থাৎ স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তিনি চাকরি বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে জেলার এসপি মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানিয়েছেন, শারীরিক পরীক্ষায় মীম ফিট হয়নি। তাছাড়া বাগেরহাট স্থায়ী ঠিকানা হওয়ার পরও সে খুলনার ঠিকানা দিয়ে আবেদন করেছিল। যে কারণে ভালো ফলাফল করার পরও তাকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
মীম আক্তার জানান, পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় আবেদনের পর ২৫ অক্টোবর খুলনা শিরোমনি পুলিশ লাইন্সে শারীরিক যোগ্যতা যাচাই হয়। ২৫, ২৬ ও ২৭ অক্টোবর তিনদিন ধরে চলা শারীরিক যোগ্যতা যাচাইয়ে আমি উত্তীর্ণ হই। এরপর ২৮ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষা হয় খুলনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এতে উত্তীর্ণ হই। এরপর মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হই। ফলাফলে জানতে পারি আমি মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছি। এরপর খুলনা জেলা পুলিশ লাইন্সে সাধারণ মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। সেখানেও উত্তীর্ণ হয়েছি। তারপর ১২ নভেম্বর রাতে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে। ১৩ নভেম্বর সকালে মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। তারপর বাড়িতে ফিরে আসি। সেখান থেকে বলা হয়েছিল, পরবর্তীতে ফলাফল জানানো হবে। এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশন শুরু হয়। সোনাডাঙ্গা থানা, পুলিশ ফাঁড়ি ও সিটিএসবি থেকে বাড়িতে তদন্তে আসে। তাদের কাছে ভূমিহীন সার্টিফিকেট জমা দিয়েছি। তারা বলেছিলেন, ৫ ডিসেম্বর আমাকে জানাবেন। ফোন দিয়ে ৭ ডিসেম্বর জেলা পুলিশ লাইন্সে ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য ডাকা হয়। সেখানে পাঁচ আঙুলের ছাপ দিয়ে এসেছিলাম। সেখান থেকে বলেছিল, পরে জানিয়ে দেয়া হবে। এরপর থেকে আর কিছুই জানায় নি।
মীম আরো বলেন, যারা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে এসেছিল তাদের ফোন দিয়ে চাকরির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু আমাকে কিছু না জানানোর কারণে আমি গত শুক্রবার জেলা পুলিশ লাইন্সে গিয়েছিলাম। তারা কিছুই জানেন না জানিয়ে এসপি স্যারের সঙ্গে কথা করতে বলেন। এরপর গত শনিবার খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়েছি। পুলিশ সুপার স্যারকে পাইনি। ২ থেকে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভির আহম্মেদ স্যারের সাথে দেখা হয়েছে। স্যার বলেছেন, তোমার সব ঠিক আছে। তবে স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তোমার চাকরিটা আমরা দিতে পারছি না। মীম বলেন, আমার জন্ম খুলনায়। জন্মসনদও খুলনা সিটি করপোরেশনের।
মীমের বাবা রবিউল ইসলাম জানান, গত ১৭ মাস ধরে ডা. বাবর আলীর বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছি। ১৯৮৮ সাল থেকে এ রোডের আশপাশে বিভিন্নস্থানে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছি। গত ৩২ বছর ধরে পরিবার নিয়ে রয়েছি এখানে। মেয়ের জন্ম খুলনাতে। এখানে আমার নিজস্ব কোনো জমি নেই।
খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, ট্রেনিংয়ে যাওয়া পর্যন্ত যেকোনো মুহূর্তে যে কেউ বাদ পড়তে পারে। প্রার্থী (মীম) স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছেন খুলনার। কিন্তু আমরা দেখলাম সেখানে তার কোনো ঠিকানা নেই। সেক্ষেত্রে তিনি তথ্য গোপন করেছেন। আমরা যেটা পেয়েছি, সেটা হচ্ছে তার বাগেরহাটের ঠিকানা। তাহলে কেন তিনি বাগেরহাট থেকে আবেদন করেননি। সব কিছুর পরও মেডিক্যালে তিনি (মীম) ফিট হননি। তার দৃষ্টিশক্তিও কম। চশমা ছাড়া কম দেখেন তিনি। মেডিক্যালে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট হয়। আমাদের মেডিক্যাল বোর্ড রয়েছে, সেখান থেকে আমরা ফাইনাল ওপেনিয়ন যেটা পেয়েছি, সেখানে তিনি ফিট না বলে জানানো হয়েছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
MD HASIB SHEIKH ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ২:৩৯ এএম says : 0
আমি পুলিশ এ জব করতে চাই এ বিষয়ে আমাকে একটু সাহায্য করুন।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন